ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ভারত

নির্বিঘ্নে হনুমান জয়ন্তী, লাভ হলো মমতার?

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২৩
নির্বিঘ্নে হনুমান জয়ন্তী, লাভ হলো মমতার?

কলকাতা: অবশেষে পশ্চিমবঙ্গে একপ্রকার নির্বিঘ্নে শেষ হয়েছে হনুমান জয়ন্তী। রামনবমী পালনের সময় কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি জায়গায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার হনুমান জয়ন্তীতে অশান্তির কোনো আঁচ সেভাবে পাওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) ভারতজুড়ে পালিত হয়েছে হনুমান জয়ন্তী। বিভিন্ন জায়গায় ধর্মীয় শোভাযাত্রা বের হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে অশান্তি বা হিংসার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে তৎপর ছিল খোদ কলকাতা হাইকোর্ট। নির্বিঘ্নে হনুমান জয়ন্তী পালন ও সমস্ত নাগরিকের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। সেই সঙ্গে একগুচ্ছ নির্দেশিকাও জারি করেছিলেন আদালত।

বুধবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছিলেন, হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রার আয়োজনকারীদেরই শান্তি বজায় রাখার দায়িত্ব নিয়ে মুচলেকা দিতে হবে। কোনো অশান্তি হলে তার দায় বর্তাবে সংশ্লিষ্ট আয়োজকদের ঘাড়ে। পাশাপাশি, শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা, রুট নির্ধারণ থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সার্বিক পরিস্থিতি যাচাই করে এবং আদালতের নির্দেশ মাথায় রেখে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিয়েছিল রাজ্য সরকার।

যদিও রামনবমীতে কেন অশান্তি, তা নিয়ে বিস্তর মতভেদ আছে শহরবাসীর মধ্যে। শহরবাসীর মত, হঠাৎ দেখা গেল রামনবমীর দুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রীকে ধরনামঞ্চ থেকে আগাম সতর্ক করতে। ধর্মীয় শোভাযাত্রার নির্দিষ্ট রুট থাকলেও সেই রুট মানা হলো না কেন? রুট পরিবর্তনে পুলিশ কেনো বাধা দিল না? মিডিয়ান সামনে পিস্তল হাতে নাচতে দেখা গেল কেন? পুলিশ কোথায় ছিল? পরে সেই পিস্তলধারী হাওড়ার বাসিন্দাকে বিহার থেকে গ্রেফতার করা হলো। তাহলে কি রাজনৈতিক কোনো ট্র্যাপ? নাকি অন্য কোনো অঙ্ক—এরকম নানা প্রশ্ন রয়েছে শহরবাসীর মনে।

তবে শহরের একাংশের মত, যেখানেই সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ হয়েছে, সেখানে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে একজনও বাঙালি ছিল না। একদিকে বিহারি মুসলিম, অপরিদিকে অবাঙালি হিন্দু। ফলে বাংলাকে কলুষিত করাই কি চক্রান্ত?

তবে যাই হোক, যে মহা ধুমধামে রামনবমীর পর হনুমান জয়ন্তী পালন করেছেন বাংলার বিজেপির নেতাকর্মীরা, তাতে অবাঙালি তকমা তাদের গায়ে আরও সেঁটে বসেছে। দলীয় নেতাদের একটা অংশ মনে করছেন, বৃহস্পতিবার দিনভর হনুমানের পূজা করে বিজেপি আরও একবার বার্তা দিল, তারা বাঙালির প্রচলিত সংস্কৃতি থেকে বহু দূরে।

গত কয়েক বছর আগে বাংলা মানে দুর্গাপূজা-লক্ষীপূজা এনমকি কালীপূজা ছিল। সেখানে হনুমান জয়ন্তী কেন? বিজেপি নেতাকর্মীদের ঘটা করে হনুমান জয়ন্তী পালন করাটা কি ভুল? প্রকাশ্যে না বললেও রাজ্য বিজেপি নেতাদের দায়িত্বশীল অংশ মনে করেন, বড় ভুল! মমতার চালে পা দেওয়া হয়ে গেল। মিছিল করলাম আমরা বাজি জিতে গেল মমতা।

বাংলার বিজেপি কি হিন্দিভাষীদের দল হয়েই থাকতে চাইছে? এমনটা মানতে নারাজ বঙ্গ বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তার কথায়, বিজেপি শুধু হিন্দিভাষীদের কেন হতে যাবে? বিজেপি তো ভারতের সব ভাষাভাষীদের দল। গুজরাটি, রাজস্থানি, তামিল, তেলুগু, অসমিয়া, ত্রিপুরা সব ভাষাভাষীর।

শমীকের কথায়, বিজেপি তো রামনবমী বা হনুমান জয়ন্তীতে কোথাও মিছিলের আয়োজন করেনি। কয়েক জায়গায় পা মিলিয়েছিল। আমরা বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের মিছিলে ঘোষিতভাবে অংশ নিয়েছি। এটা তৃণমূল এবং তথাকথিত প্রগতিশীল বামপন্থীরা এমন একটা প্রচার করছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১৯ ঘণ্টা, এপিল ০৬, ২০২৩
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।