ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

ফের জয়শ্রী রাম স্লোগান, মঞ্চে ওঠেননি মমতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২২
ফের জয়শ্রী রাম স্লোগান, মঞ্চে ওঠেননি মমতা

কলকাতা: ফের বিপত্তি! ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের পুনরাবৃত্তি হলো হাওড়া স্টেশনে। আবার সরকারি অনুষ্ঠানে মমতার সামনে জয় শ্রীরাম স্লোগান।

 

শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) হাওড়া স্টেশনে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধনে মমতা উপস্থিত হওয়ার পরই প্ল্যাটফর্মে উপস্থিত দর্শকদের একাংশের বিরুদ্ধে জয় শ্রীরাম স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।  

পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব স্লোগান দেওয়া জনতাকে থামানোর চেষ্টা করেন। রেলের অন্যান্য পদস্থ কর্তারাও পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু, ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গেছে। মনের ভাব পাল্টে যায় মমতার। গম্ভীর মুখে একপাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় তাকে।

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের পুনরাবৃত্তিতে স্পষ্টই তিনি যে অসন্তুষ্ট, তা বুঝিয়ে দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  উদ্বোধনের মঞ্চে উঠলেনই না তিনি। রেলমন্ত্রী হাতজোড় করে তাকে মঞ্চে ওঠার অনুরোধ জানান। কিন্তু মঞ্চের পাশেই একটি চেয়ারে বসে পড়েন মমতা।  

শেষমেশ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দের অনুরোধে মঞ্চে না উঠলেও বক্তব্য রাখতে রাজি হন মমতা। মঞ্চের নিচেই সবুজ পতাকা ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় তাকে। সেখান থেকেই বক্তব্য রাখেন তিনি।

২০২০ সালে নেতাজী জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে এরকমই ভারত সরকারের একটি অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠানে একই মঞ্চে ছিলেন চির প্রতিদ্বন্দ্বী মোদি-মমতা। হঠাৎই দর্শক আসন থেকে জয় শ্রী রাম স্লোগান ওঠে। ক্ষোভে ফেটে পড়েন মমতা। প্রধানমন্ত্রী মোদির সামনেই মঞ্চ ছেড়ে নেমে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা। নামার আগে বলে গিয়েছিলেন, এটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠান নয়, সরকারি অনুষ্ঠানে এ ধরনের কাজ কী করে হয়, তা কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তদের দেখা উচিত।

তবে এদিন ছিল ব্যতিক্রম। এক, মায়ের মৃত্যুর কারণে পশ্চিমবঙ্গের সফর বাতিল হলেও ভার্চুয়ালি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস উদ্বোধন করলেন মোদি। দুই, অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে যাননি মুখ্যমন্ত্রী এবং এদিন মমতা মঞ্চে না উঠলেও তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। যেখানে মোদির মায়ে মৃত্যুতে একাধিকবার শোক প্রকাশ করতেও দেখা যায় মমতাকে।  

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মায়ের প্রয়াণে সমবেদনা জানাই। মা, মা-ই হন। তাই প্রধানমন্ত্রীজির মা মানে আমার মা। তার মায়ের প্রয়ানে গভীর শোক প্রকাশ করছি। তাই আমি বলব, অনুষ্ঠান ছোট করে দেওয়া হোক।  

প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেন মমতা।

যদিও এর আগে প্রধানমন্ত্রী মায়ের মৃত্যু সংবাদ পাওয়া মাত্রই টুইটে শোকপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শোকবার্তায় তিনি লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মা শ্রদ্ধেয়া হীরাবেন মোদির প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ ভোরে আহমেদাবাদে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। শতায়ু হীরাবেন দেবী ছিলেন ভালোবাসা, ধৈর্য ও আস্থার প্রতীক। তিনি শিশুদের অত্যন্ত স্নেহ করতেন। আমি শোকসন্তপ্ত নরেন্দ্র মোদিজিকে আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।

অনুষ্ঠান শেষে, হাওড়ার ২৩ নম্বর প্লাটফর্ম থেকে উদ্বোধন হয় বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। হাওড়া স্টেশন থেকে সশরীরে উপস্থিত থেকে সবুজ পতাকা দেখিয়ে উদ্বোধন করেন মমতা। একইসঙ্গে বর্ধিত জোঁকা থেকে তারাতলা মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন দুজনই।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২২
ভিএস/আরএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।