ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

পার্বত্য অঞ্চলে কমছে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
পার্বত্য অঞ্চলে কমছে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ      পার্বত্য অঞ্চলে কমছে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ-ছবি: অপু দত্ত

খাগড়াছড়ি: এক দশক আগেও পার্বত্য চট্টগ্রামে ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। সে অবস্থা এখন আর নেই। ধীরে ধীরে কমছে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা।

দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ১৩টিতে ম্যালেরিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। এর মধ্যে আবার আক্রান্তের হার বেশি ছিল তিন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে।

জেলা তিনটিতে প্রতি বছরে ম্যালেরিয়ায় অসুস্থতা ও মৃত্যু হতো সবচেয়ে বেশি।

ব্র্যাক ও স্বাস্থ্য বিভাগের জরিপের ফলাফল বলছে, তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ে কমে এসেছে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ। কমেছে আক্রান্ত কিংবা মৃতের সংখ্যা। তাই লক্ষ্য এবার নির্মূলের।

যদিও ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সঙ্গে যুক্তরা বলছেন, ভারত ও মায়ানমার সীমান্ত ঘেঁষা তিন জেলায় ম্যালেরিয়া নির্মূল করা চ্যালেঞ্জের।

পরিসংখ্যানে জানা গেছে, ২০১১ সালে তিন পার্বত্য জেলায় ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা ছিল ৪২ হাজার সাতশ’ ১৮ জন, মারা গেছেন ৩২ জন। ২০১২ সালে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২২ হাজার চারশ’ ৩৯ জন। আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১০ জনে। ২০১৩ সালে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা ছিল ২১ হাজার পাঁচশ’ ৩১ জন, মৃতের সংখ্যা ১২ জন। তবে ২০১৪ সালে রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫১ হাজার চারশ' ৮০ জনে। ওই বছর মৃতের সংখ্যাও বেড়ে দাঁড়ায় ২৭ জনে।

আবার ২০১৫ সালে আক্রান্ত হন ৩৮ হাজার নয়শ’ ৬৮ জন, মারা যান তিনজন। গত বছর ফের রোগীর সংখ্যা কমে যায়। এ বছর আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ হাজার আটশ' ৪৮ জন, মারা যান ছয়জন।

সেই হিসেবে যেখানে ২০০৭ সাল থেকে সাত বছরে মৃতের সংখ্যা ছিল তিনশ’ ৮৩ জন, তা কমে সর্বশেষ পাঁচ বছরে দাঁড়ায় ৯০ জনে। এতে বোঝা যায়, দিনে দিনে পার্বত্য অঞ্চলে ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা ও মৃত্যু কমে আসছে।

ব্র্যাকের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার পাল বাংলানিউজকে জানান, সরকারের সঙ্গে ব্র্যাক যৌথভাবে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

‘আমরা এতোদিন ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছি। এবার আমাদের লক্ষ্য হলো তা নির্মূল করা। ঝুকিঁপূর্ণ তিন জেলায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ কমে এসেছে। পার্শ্ববর্তী ভারত ও মায়ানমার সীমান্ত ঘেঁষা হওয়ায় এখানে নির্মূল করাটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আশা করি, আমরা সফলতার মুখ দেখবো’।

খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘বাংলাদেশের মধ্যে পার্বত্য জেলাগুলো ম্যালেরিয়ায় অধিক ঝুঁকিতে থাকলেও এখন কিন্তু সে অবস্থা থেকে অনেকটাই নেমে এসেছে। আর এটি সম্ভব হয়েছে ম্যালেরিয়া কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয়দের সচেতনতার কারণে’।

‘তবে এখনো কিন্তু ম্যালেরিয়া রোগ শূন্যের কোঠায় আনা সম্ভব হয়নি। তাই এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৯ ঘণ্টা, এপ্র্রিল ২৫, ২০১৭
এএটি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।