ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

তেলাপোকা নিধনের অভিনব পদ্ধতি সোহরাওয়ার্দীতে!

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০১৭
তেলাপোকা নিধনের অভিনব পদ্ধতি সোহরাওয়ার্দীতে! বেডের নিচে আগুন দিয়ে নিধন করা হচ্ছে তেলাপোকা-ছারপোকা। ছবি ও ভিডিও: বাংলানিউজ

ঢাকা: শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাছে যেতেই দেখা গেলো ধোঁয়ার কুণ্ডলী। সঙ্গে উৎকট গন্ধ। বেডে সব হাত-পা ভাঙা রোগী। এর মধ্যে যে কেউ হাসপাতালে আগুন লেগেছে বলে ভড়কে যাবেন। রোগী দেখতে আসা অনেকের ক্ষেত্রে ঘটলোও তাই। আদতে ঘটনা ভিন্ন।

বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে রোগী ভর্তি করতে গিয়ে হলো ভিন্ন অভিজ্ঞতা।

মনে হলো ‘মশা মারতে কামান-দাগা’র মতো প্রবাদ এমনি এমনি তৈরি হয়নি।

হাসপাতালে ছারপোকা-তেলাপোকার উৎপাত ঠেকাতে রোগীর বেডের নিচে দেওয়া হচ্ছে আগুন! এটাও নাকি তেলাপোকা মারার পদ্ধতি!
 
সোহরাওয়ার্দী  হাসপাতালের অর্থোপেডিক ও ট্রমা সার্জারি বিভাগের ‘অর্থোপেডিক সার্জারি, ওরাল অ্যান্ড ম্যাক্সিলোফেশিয়াল সার্জারি ওয়ার্ড-২ (পুরুষ) এ গিয়ে দেখা মিললো তেলাপোকা ও ছারপোকা নিধনের অভিনব পদ্ধতি।

মধ্যবয়সী একজন নার্স কাগজ গুটিয়ে লম্বা করে তার মাথায় এন্টিসেফটিক সলুশ্যন দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিটি বেডের নিচে তাপ দিচ্ছিলেন। এতে বের হয়ে আসছিলো তেলাপোকা ও ছারপোকা।

বেডের নিচে আগুন দিয়ে নিধন করা হচ্ছে তেলাপোকা-ছারপোকা/ছবি: বাংলানিউজওয়ার্ডে রোগী না থাকলে কোনো বিপত্তি ছিল না। কিন্তু দু’একটি বেড বাদে সবগুলোতেই রোগী ভর্তি। কারও হাত ভাঙা, কারও পায়ে জড়ানো ব্যান্ডেজ।

ছারাপোকার কথা ভুলে তখন ধোঁয়ার অত্যাচারে অতিষ্ঠ রোগীরা। ওয়ার্ডে ঢুকেই কথা হয় জসিম উদ্দিন (২৮) নামে এক রোগীর সঙ্গে।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গত ১৫ দিন ধরে এই হাসপাতালে ভর্তি আছি। ছারপোকা আর তেলাপোকার অত্যাচারে ঘুমানো যায় না। আজ ওয়ার্ডবয় আর নার্সরা আগুন দিয়ে তেলাপোকা মারছেন। এরকম নাকি মাঝে মধ্যেই হয়।

হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক উত্তম কুমার বড়ুয়ার সঙ্গে  ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি এ বিষয়ে জানার জন্য।
 
বেডের নিচে আগুন দিয়ে নিধন করা হচ্ছে তেলাপোকা-ছারপোকা/ছবি: বাংলানিউজনাম প্রকাশ না  করার শর্তে হাসপাতালের এক ওয়ার্ডবয় জানান, প্রতনিয়তই কোনো না কোনো ওয়ার্ডে এভাবে তেলাপোকা-ছারপোকা মারা হয়। অথচ হাসপাতাল পরিষ্কার করার জন্য প্রতিনিয়ত কয়েকজন সুইপার কাজ করছেন। রোগীর বেডের অবস্থা আরও করুণ। বেডকাভার দেখলে মনে হবে মাসে একবারও ধোয়া হয় না। এ অবস্থাতেই চলছে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সেবা।

এতোদিনে যে কোনো বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি এটাই ভাগ্যের বিষয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা,  মার্চ ০২, ২০১৭
এসএম/এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।