ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

ওষুধ শিল্পপার্কের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৬
ওষুধ শিল্পপার্কের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ

ঢাকা: মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট (এপিআই) শিল্পপার্কের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।

আগামী অক্টোবরের মধ্যেই এ শিল্পপার্কের প্লট বরাদ্দ দেওয়া হবে।

প্লট বরাদ্দের পরই ওষুধ শিল্পের এ বিশেষায়িত শিল্পনগরীতে ওষুধের কাঁচামাল উৎপাদনের কারখানা স্থাপন শুরু হবে বলেও জানান শিল্পমন্ত্রী।
 
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) শিল্প মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) আওতায় বাস্তবায়নাধীন ওষুধ শিল্পনগরী প্রকল্পের (এপিআই শিল্পপার্ক) অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের এ সব তথ্য জানান তিনি।
 
শিল্পমন্ত্রী বলেন, এ শিল্পপার্কে উৎপাদন শুরু হলে ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল খাতে আমদানি খরচ ৭০ শতাংশ কমে আসবে এবং ওষুধের দামও জনগণের নাগালে চলে আসবে।
 
বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প মালিক সমিতির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, বিসিকের চেয়ারম্যান মুস্তাক হাসান মোহাম্মদ ইফতেখার, বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প মালিক সমিতির মহাসচিব এস এম সফিউদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
 
বৈঠকে ওষুধ শিল্পনগরীর কার্যক্রম দ্রুত চালুর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। শিল্পনগরীতে ৪২টি শিল্প ইউনিটের অনুকূলে প্লট বরাদ্দ প্রদানেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একইসঙ্গে শিল্প উদ্যোক্তাদের নিজস্ব অর্থায়নে কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার স্থাপনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
 
আমির হোসেন আমু বলেন, ওষুধ শিল্প বাংলাদেশে একটি উদীয়মান শিল্পখাত হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। বাংলাদেশে উৎপাদিত ওষুধ ইতোমধ্যে বিশ্বের ১৩৩টি দেশে রফতানি হচ্ছে। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ পেটেন্ড ওষুধ উৎপাদনের জন্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) থেকে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত ছাড় পেয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে তিনি দ্রুত এপিআই শিল্পপার্কে কারখানা স্থাপনে এগিয়ে আসতে উদ্যোক্তাদের আহবান জানান।
 
এপিআই শিল্পপার্ক চালু হলে ওষুধ শিল্পখাতে আমদানি ব্যয় সাশ্রয়ের পাশাপাশি রফতানি আয় বাড়বে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
 
বৈঠকে ওষুধ শিল্প উদ্যোক্তারা বরাদ্দপ্রাপ্ত প্লটের বিপরীতে মূল্য পরিশোধের সময়সীমা বৃদ্ধি এবং সার্ভিস চার্জ কমানোর জন্য শিল্পমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
 
এর জবাবে শিল্পমন্ত্রী বরাদ্দকৃত প্লটের মূল্য পরিশোধের সময়সীমা ৫ বছরের পরিবর্তে ১০ বছর এবং বিসিক নির্ধারিত সার্ভিস চার্জ ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ১২ শতাংশ নির্ধারণের ঘোষণা দেন। প্লটের মূল্য পরিশোধের সময়সীমা ৫ বছরের পরিবর্তে ১০ বছরে নির্ধারণ করায় ওষুধ শিল্প মালিক সমিতির মহাসচিব এস এম সফিউদ্দিন সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
 
তিনি বলেন, এপিআই শিল্পপার্কে উৎপাদন শুরু হলে ওষুধ শিল্পের কাঁচামালের দেশীয় চাহিদার ৭০ শতাংশ যোগান দেওয়া সম্ভব হবে।
 
এপিআই শিল্পপার্কে ওষুধের প্রস্তুতির প্রয়োজনীয় কাঁচামাল উৎপাদন করা হবে। বর্তমানে এই কাঁচামালের ৯০ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।
 
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকার ওষুধ উৎপাদিত হচ্ছে। এ উৎপাদন থেকে অভ্যন্তরীণ চাহিদার ৯৭ শতাংশ মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি করা হচ্ছে।
 
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, এখনো কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতা থেকে শুরু করে নানা সমস্যায় এর আগেও একাধিকবার এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ও সময় বাড়ানো হয়েছে।
 
এপিআই ওষুধ শিল্পপার্ক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩৩১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ২০৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা, যার ৮৩ শতাংশ ব্যয় হয়েছে। আর উদ্যোক্তাদের ব্যায় ধরা হয়েছে ৮০ কোটি টাকা।
 
বিসিক সূত্র জানায়, উদ্যোক্তাদের ৮০ কোটি টাকায় কেন্দ্রীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট (সিইটিপি) নির্মাণের কথা ডিপিপি’তে উল্লেখ আছে।
 
গত জুন মাসে (বর্ধিত সময়ে) প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার কথা থাকলেও তা এখনও শেষ করা সম্ভব হয়নি। এর আগে ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া প্রকল্পের কাজ ২০১২ সালে ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৬
আরএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।