ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

প্রভাবহীন কর্মবিরতি, স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম

এম. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৩ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০১৬
প্রভাবহীন কর্মবিরতি, স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম ছবি- অনিক খান / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ময়মনসিংহ: ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতির পরও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। তাদের কর্মবিরতিতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যেও কোনো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা যায়নি।

সময় মতো তারা চিকিৎসক ও সেবা পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

তবে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন কর্তব্যরত মিড লেভেল চিকিৎসকরা। ইন্টার্নদের শুন্যতায় কোনো কোনো ওয়ার্ডে রুটিন অস্ত্রোপাচার কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বুধবার (০২ মার্চ) বিকেলে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে রোগী, স্বজন, সেবিকা ও মিড লেভেল চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এমন তথ্য। তবে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

হাসপাতালের ৭নং ওয়ার্ডের সার্জারি ইউনিট-২-এ গিয়ে আলাপ হয় সেবিকা আজিজুন নেছার সঙ্গে। ২৪ শয্যার বিপরীতে এখানে রোগী ভর্তি আছেন ৫৪ জন। তিনি জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অনুপস্থিতিতে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত না হলেও খানিকটা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

এ ইউনিটের প্রধান ডা. খাজা মাসুম কবির বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের জরুরি অস্ত্রোপাচার চলছে। তবে রুটিন অস্ত্রোপাচার বন্ধ রয়েছে। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা না থাকায় এ অস্ত্রোপাচার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে মিড লেভেলের সাতজন চিকিৎসক ও সেবিকারা যথারীতি তৎপর রয়েছেন।

এ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন সদর উপজেলার ভাটিঘাগড়া গ্রামের রোকন মিয়া জানান, সকালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রাউন্ড দিয়েছেন। সময় মতো চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাচ্ছে। কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

হাসপাতালের ৮নং ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. পার্থ পাল চৌধুরী একাই সামলাচ্ছেন এ ওয়ার্ডের ভর্তি করা ৪৪ জন রোগীকে। রোগীদের ছাড়পত্র লেখা থেকে শুরু করে ড্রেসিং, রক্ত চাপ মাপাসহ যাবতীয় কাজ তিনিসহ চারজন চিকিৎসককে করতে হচ্ছে।

এই চিকিৎসক বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা থাকলে কাজগুলো ভাগ করে নেওয়া যেতো। কিন্তু তাদের শুন্যতায় চিকিৎসা কার্যক্রম সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

সরেজমিনে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেলো, অন্যান্য দিনের মতোই চিকিৎসা ব্যবস্থা চলছে। চিকিৎসকরা রাউন্ড দিয়েছেন। সেবিকারাও সক্রিয়। ফলে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘট চিকিৎসা সেবায় খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একাধিক রোগীর স্বজন জানান, চিকিৎসা সেবায় তারা সন্তুষ্ট। তবে যে ইস্যুতে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা ধর্মঘটে গেছেন তার একটি সম্মানজনক সুরাহা হওয়া দরকার।

তবে হাসপাতালের মিড লেভেল চিকিৎসকরা জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা শুধু হাসপাতালে ইন্টার্নশিপই করেন না, চিকিৎসা ব্যবস্থায় তারা সহায়তাও করেন। কর্মবিরতিতে থাকায় কাজের ক্ষেত্রে তাদের শুন্যতা অস্বীকার করা যায় না।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. শঙ্কর নারায়ণ দাস বাংলানিউজকে জানান, মিড লেভেল চিকিৎসকরা চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছেন।

এদিকে, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন। ইন্টার্ন চিকিৎসক ও ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসান কবির বাংলানিউজকে জানান, আমাদের দাবি প্রশাসন দ্রুত বাস্তবায়ন না করা পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি চলবে।

এ বিষয়ে কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকের ওপর হামলা ও লাঞ্ছিতের ঘটনায় বুধবার (০২ মার্চ) সকালে অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৬
আইএ

** ‘আজকে ডাক্তার পিটাইয়া যাব’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।