ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

জাতীয় স্যানিটেশন মাস

খোলা স্থানে মলত্যাগ কমেছে ৪১ শতাংশ

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০১৫
খোলা স্থানে মলত্যাগ কমেছে ৪১ শতাংশ ফাইল ফটো

ঢাকা: সবার জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ ও শতভাগ স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে ১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় স্যানিটেশন মাস।

স্যানিটেশন মাসের এবারের প্রতিপাদ্য- ‘সকলের জন্য স্যানিটেশন, নিশ্চিত হোক উন্নত জীবন’।



ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যৌথ জরিপের তথ্য তুলে ধরে সরকার বলছে, খোলা স্থানে মলত্যাগ ব্যাপকভাবে কমেছে। বর্তমানে উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগের পরিমাণ শতকরা ১ ভাগ।

স্যানিটেশন মাস উদযাপন উপলক্ষে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যৌথ জরিপে তথ্য তুলে ধরে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর জানায়, ২০১৫ সালে খোলা স্থানে মলত্যাগ ব্যাপকভাবে কমেছে।

‘২০০৩ সালের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশের শতকরা ৪২ ভাগ লোক উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগ করতেন। বর্তমানে এ হার শতকরা ১ ভাগে নেমে এসেছে। ’

এই জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১৬টি দেশে উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগ শতকরা ২৫ ভাগের বেশি কমাতে সক্ষম হয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।

স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আকরাম আল হোসাইন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরেন।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন জানান, এই মুহূর্তে শহর ও বস্তি এলাকায় উন্নত স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি।

জাতিসংঘ স্যানিটেশনকে মানুষের মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি শুধুমাত্র হাত ধোয়ার বিষয়টির তাৎপর্য অনুধাবন করে আন্তর্জাতিকভাবে ১৫ অক্টোবর বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস পালন করা হচ্ছে।

মাসটি উদযাপন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসের পাশাপাশি জাতীয় স্যানিটেশন মাস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এক বাণীতে বলেন, স্বাস্থ্য সচেতনতা ও স্যানিটেশন কার্যক্রমকে তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে দেশব্যাপী জনগণের মাঝে স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করাই জাতীয় স্যানিটেশন মাস উদযাপনের মূল উদ্দেশ্য।


এ কর্মসূচি সবার জন্য স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে ‘সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ অর্জনের একটি সহায়ক কার্যক্রম হিসেবে পরিচালিত হয়ে আসছে। যা আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে একটি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে।

সার্কভুক্ত আঞ্চলিক দেশগুলোর স্যানিটেশন মান উন্নয়নের পথিকৃৎ বাংলাদেশে দ্বিতীয়বারের মতো দক্ষিণ এশীয় স্যানিটেশন সম্মেলন বা স্যাকোসান অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে-যা একটি অনন্য সাফল্য।

এ সাফল্য অর্জনে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থা এবং গণমাধ্যমসহ নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বিত সহায়তা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টা মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে।

সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জন করেছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সাফল্যের এ ধারা অব্যাহত রাখতে হলে দেশব্যাপী স্যানিটেশন ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্ট সকলকে আরো মনোযোগী হতে হবে এবং দেশের জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যবিধি জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে হবে।

সরকার সবার জন্য স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে বলে এক বাণীতে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, স্যানিটেশনে শতভাগ সাফল্য আনতে বাস্তবমুখী বিভিন্ন কৌশলপত্র ও নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। সরকারের সচেতনতামূলক ধারাবাহিক কার্যক্রমের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি অনিরাপদ পানি ও দুর্বল স্যানিটেশনজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। কমে এসেছে শিশুমৃত্যুর হারও।

প্রতিবছর বিশেষায়িত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে দেশব্যাপী ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে স্যানিটেশন আজ একটি সামাজিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।

এই আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে সরকারের পাশাপাশি সব ধরনের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, দাতাসংস্থা, গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ০০৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০১৫
এমআইএইচ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।