ঢাকা, সোমবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

মেয়েলী রোগের প্রতিকার

ডা. মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, বিভাগীয় সম্পাদক, স্বাস্থ্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৫
মেয়েলী রোগের প্রতিকার

পুরুষ, মহিলা সবারই রোগ বালাই হয়ে থাকে। তাহলে আলাদা করে মেয়েলী রোগ বলার দরকার কী? পুরুষ ও মহিলার মধ্যে ‘এনাটমিক্যাল’ বা শারীরিক পার্থক্যের মধ্যেই এর উত্তর নিহিত।

মহিলাদের প্রজনন অঙ্গের ভিন্নতার জন্য খুব সহজেই ‘পেলভিক ইনফ্লামেটরি ডিজিস’ বা ‘পি.আই.ডি’তে আক্রান্ত হয়।

পেলভিক ইনফ্লামেটরি ডিজিস বা মেয়েদের প্রজনন অঙ্গের প্রদাহ

সহজভাবে বললে, জরায়ু ডিম্বাশয় (ওভারি) ও অন্যান্য অঙ্গের যে ইনফেকশন। বাংলাদেশে প্রতি সাতজন মহিলার মধ্যে অন্তত একজন কোনো না কোনো সময়ে এই রোগে আক্রান্ত হয়।

পি.আই.ডি এর কতিপয় প্রভাব

১. পি.আই.ডি বা মহিলাদের প্রজননগত প্রদাহের ফল হল তাদের বন্ধ্যাত্ব। এটিই এর অন্যতম প্রধান সমস্যা। আমেরিকায় প্রতিবছর এই রোগের জন্য ১ লাখ নারী বন্ধ্যাত্বে আক্রান্ত হয়।

২. জরায়ুর বাইরে বাচ্চা তৈরি হওয়া বা একটপকিক প্রেগনেন্সি।

লক্ষণ

১. তলপেটে ব্যথা অনুভূত হওয়া বা ভারী লাগা।

২. যোনীপথ দিয়ে হলুদ বা সবুজ রং এর দুর্গন্ধযুক্ত ডিসচার্জ।

৩. প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হওয়া।

৪. নিম্নমাত্রায় বা কখনো উচ্চমাত্রায় জ্বর।

৫. বমি বমি ভাব হওয়া বা বমি হওয়া।

৬. শারীরিক সম্পর্কের সময় ব্যথা পাওয়া।

যোনীপথ দিয়ে সাদা ও ক্লিয়ার ডিসচার্জ বেশিরভাগ নারীর থাকে। কাজেই এর সঙ্গে পি.আই.ডি ডিসচার্জকে এক করে ফেললে হবে না। মহিলাদের প্রজনন অঙ্গে যে গ্রন্থি থাকে সেখান থেকে এই ডিসচার্জ তৈরি হয়ে প্রজনন অঙ্গকে জীবাণুমুক্ত ও পরিষ্কার রাখে।

পি.আই.ডি হওয়ার ঝুঁকিতে কারা

পি.আই.ডি নানারকম জীবাণু দ্বারা হয়ে থাকে। ব্যাকটিরিয়া, ভাইরাস ইত্যাদি। তবে এদেরে মধ্যে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বেশি হয়। দুঃখের ব্যাপার হচ্ছে, মেয়েরা এই রোগে ভোগে কিন্তু এর কারণ অনেকক্ষেত্রেই পুরুষ। পুরুষদের কাছ থেকে অনেকসময় জীবাণু যেমন গনোরিয়া, ক্লেমাইডিয়া নারীদেহে শারিরীক সম্পর্কের মাধ্যমে প্রবেশ করে।



১. যাদের পুরুষ যৌনসঙ্গী গনোরিয়া ও ক্লেমাইডিয়ার মতো যৌনরোগে আক্রান্ত।

২. যাদের অনেক যৌনসঙ্গী রয়েছে।

৩. গর্ভপাতের (এবরশন) পরে পি.আই.ডি হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

৪. বাচ্চা হবার পর কিছুদিনের মধ্যে। এজন্য এসময়টাতে শারীরিক সম্পর্ক থেকে দূরে থাকতে হবে।

৫. যারা ব্যক্তিগতভাবে পরিচ্ছন্নতায় যত্নশীল নয়। স্যানেটারি নেপকিন ব্যবহারে পরিচ্ছন্ন না হওয়া।

প্রতিরোধের উপায়

১. শারীরিক সম্পর্কের সময় কনডম ব্যবহার করা।

২. গর্ভপাত বা ডেলিভারির পর শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকা।

৩. সেক্সুয়াল পার্টনার যৌনরোগে আক্রান্ত থাকলে চিকিৎসা করা।

৪. নিয়মিত চিকিৎসকের কাছে গাইনোকোলজিক্যাল পরীক্ষা করানো। বছরে অন্তত একবার করা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।