ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

বেহাল দশায় স্বাস্থ্যসেবা

বদরগঞ্জ স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে বেড়েছে শয্যা, বাড়েনি জনবল

সাইফুর রহমান, ডিভিশনাল স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৪
বদরগঞ্জ স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে  বেড়েছে শয্যা, বাড়েনি জনবল ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রংপুর: রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সটি দু’বছর আগেই ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। চালুর জন্য প্রশাসনিক অনুমতিও মিলেছে, এসেছে কিছু মূল্যবান যন্ত্রপাতিও।

কিন্তু তারপরেও জনবল নিয়োগ না হওয়া, প্রয়োজনীয় অর্থ এবং পথ্যের বরাদ্দ না থাকায় তা চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে ৫০ শয্যা হাসপাতালের যন্ত্রপাতি দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত থেকে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ৩১ শয্যার ওই স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ৯ জন চিকিৎসক, ১০ জন নার্স ও ৩ জন ওয়ার্ডবয় আছে। দুই বছর আগে স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও নতুন করে আর ডাক্তার নিয়োগ হয়নি।

সরেজমিনে হাসপাতালে গেলে রোগীরাও নানা অভাব-অভিযোগ করেন। চিকিৎসকরা এ অবস্থা মেনে নিয়ে বলছেন, সমস্যা আছে, সমাধানে একটু সময় দিতে হবে।

উপজেলার ছোটহাজীপুর এলাকার মরিয়ম বেওয়া (৮০) তিন দিন আগে বুকের ব্যাথা নিয়ে স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন।

তার অভিযোগ, তিনদিন পরও কোনো চিকিৎসা পাচ্ছি না। এখানে ঠিকভাবে ওষুধ দেওয়া হয় না। চিকিৎসকরাও ঠিকভাবে খোঁজ-খবর নেন না।

পার্বতীপুরের হরিরামপুর এলাকার মৌলভির ডাঙার আবেদা খাতুন (৪০) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জ্বরের কারণে ১০ দিন ধরে এখানে পড়ে আছি। কিন্তু জ্বর কমছে না। চিকিৎসকরা বলছেন, জ্বর সারতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে।

স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, রোগীদের ২৭ প্রকার ওষুধ দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয় না। শুধু টেট্রাসাইক্লিন (টিসি), মেট্রোনিডাজল ও এন্টিহিস্টামিনসহ মাত্র ১০ ধরনের ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। স্যালাইনের মধ্যে কলেরা স্যালাইন ছাড়া বাকী সব স্যালাইন বাইরে থেকে কিনতে হয়।

হাসপাতালে ব্লাড সুগার, সিবিসি ও আরবিএস এর পরীক্ষা করা হলেও এক্সরে মেশিনটি ১ মাস ধরে বিকল থাকায় বাইরে গিয়ে এক্সরে করতে হচ্ছে। জেনারেটর ভাল থাকলেও জ্বালানির অভাবে তা চালু করা সম্ভব হয় না।

স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স থেকে রোগীদের মাঝে যে খাদ্য সরবরাহ করা হয়, তা নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।
স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের পানি সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও বাথরুম ও টয়লেট নোংরা থাকায় তা ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা প্রাইভেট প্র্যাকটিসে ব্যস্ত থাকায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা থেকে রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন, এমন অভিযোগও রয়েছে স্থানীয়দের।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ফরিদুল ইসলাম পলাশ জানান, কিছু ওষুধের সরবরাহ নেই। ওষুধ সরবরাহ স্বাভাবিক হলে এই পরিস্থিতি কেটে যাবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. আমিনুল ইসলাম সরকার বলেন, ভাই, আমি এখানে সবে যোগদান করেছি। হাসপাতালের যে সমস্যা আছে তা সমাধান করতে একটু সময় লাগবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।