ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

বসুন্ধরার উদ্যোগে বরুড়ায় নিখরচায় চক্ষুসেবা পেয়ে খুশি ২ হাজার রোগী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩
বসুন্ধরার উদ্যোগে বরুড়ায় নিখরচায় চক্ষুসেবা পেয়ে খুশি ২ হাজার রোগী

কুমিল্লা: কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায় বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন এবং এ কে এম আবু তাহের ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে দুই হাজার রোগীকে বিনা খরচে চোখের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে।  

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বরুড়া উপজেলার গালিমপুর ইউনিয়নে ঝাপুয়া আশ্রাফিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায় সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই সেবা প্রদান করা হয়।

সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র। এছাড়া চশমা দেওয়ার সেবাসহ যাদের চোখের ছানি ও মাংস বৃদ্ধির সমস্যা রয়েছে, তাদের বিনামূল্যে অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অস্ত্রোপচারের রোগীর সংখ্যা ৩৮০ জন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঝাপুয়ার ওই মাদরাসাটি বরুড়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত। শুক্রবার সকাল থেকে বৃষ্টি ছিল ওই এলাকায়। বৃষ্টি উপেক্ষা করে মানুষেরা ছুটে আসছেন চিকিৎসা নিতে। বারান্দায় বুথের সামনে জায়গা না পাওয়া সেবাপ্রত্যাশীদের শামিয়ানা টানিয়ে বসানো হয় প্যান্ডেলের ভেতর।

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের দুইজন চিকিৎসকসহ ১২ জনের একটি বিশেষজ্ঞ টিম এখানে সেবা দিতে আসেন। বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. সালেহ আহম্মেদের দিকনির্দেশনায় চিকিৎসক দলটির অগ্রভাগে ছিলেন ডা. মজুমদার গোলাম রাব্বী।  

শুক্রবার সকাল থেকে ঝাপুয়া আশ্রাফিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায় উপস্থিত হয়ে সেবা দেওয়ার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে দেখা গেছে এ কে এম আবু তাহের ফাউন্ডেশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও  সাবেক সংসদ সদস্য জাকারিয়া তাহের সুমনকে।

জাকারিয়া তাহের সুমন বলেন, বরুড়ায় অনেক অসহায় মানুষ আছেন, যারা জানেও না চোখের ছানির জন্য মানুষ অন্ধ হয়ে যেতে পারে। চোখে কম দেখাসহ অনেকের চোখে সমস্যা রয়েছে, কিন্তু তারা বুঝতেও পারেন না চোখে সমস্যা আছে। এমন মানুষদের চোখকে সুস্থ রেখে তাদের মুখে হাসি ফোটাতে এই উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। এনিয়ে আমরা ৫টি ক্যাম্প করেছি বরুড়ায়। সামনে বরুড়া পৌর এলাকায় আরেকটি ক্যাম্প হবে। তাহলে আমাদের পুরো উপজেলায় এই সেবা পৌঁছে যাবে।  

তিনি আরও বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি। যার কারণে ভেবেছিলাম মানুষ কম হবে। কিন্তু ঝাপুয়া আশ্রাফিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায় এসে দেখি আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ এখানে সেবা নিতে এসেছেন। আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন এখানে বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসার ব্যবস্থা করায় আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বরুড়ার মানুষের কাছে আমার প্রয়াত বাবা এ কে এম আবু তাহেরের জন্য দোয়া চাই।  

ভাউকসার গ্রামের আয়েশা আক্তার বলেন, চোখ নিয়ে কষ্টে আছি। কিন্তু টাকার অভাবে ডাক্তার দেখাতে পারিনি। চোখে ছানি ছিল। অপারেশন লাগবে। ডাক্তাররা নিজেরাই আমাকে নিয়ে গিয়ে অপারেশন করিয়ে বাড়ি পৌঁছে দেবে।  

গালিমপুর গ্রামের আবদুস সোবহান বলেন, চোখে ঠিকভাবে দেখতে পাই না। সবকিছু ঝাপসা লাগে। ডাক্তাররা বিনামূল্যে ওষুধ ও চশমা দিয়েছেন।  

ডা. মজুমদার গোলাম রাব্বী বলেন, এখানে বৃষ্টির মধ্যে এতো মানুষের সাড়া পাব ভাবিনি। আমাদের ক্যাম্পটি শেষ হওয়ার কথা ছিল বিকেল ৪টায়। কিন্তু রোগীদের চাপ বেশি থাকায় আরো প্রায় এক ঘণ্টা রোগী দেখতে হয়েছে। বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. সালেহ আহম্মেদ স্যারের নির্দেশনায় আজকের এই কার্যক্রমটি পরিচালিত হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩
এসএএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।