ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

মৃত শিশুর মাংস থেকে ক্যাপসুল!

শামসুন নাহার, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০১ ঘণ্টা, মে ৮, ২০১২
মৃত শিশুর মাংস থেকে ক্যাপসুল!

ঢাকা: ক্যাপসুলে মানব শিশুর মাংস পাউডার হিসেবে ব্যবহারের মতো বীভৎস ঘটনা ঘটেছে চীন ও কোরিয়ায়। তথাকথিত যৌবন দানকারী ওষুধ বা সর্ব রোগের মহৌষধরূপে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত ক্যাপসুলে এসব পাউডার মেশানো হচ্ছে।

চীন থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় চোরাই পথে আসা ক্যাপসুলগুলো চিহ্নিত করেছে সেখানকার কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

মানব শিশুর দেহকে পাউডারে রূপান্তরিত করে সেগুলো ক্যাপসুল হিসেবে তৈরি করা হচ্ছে। এসব ক্যাপসুলের ৯৯ দশমিক সাত শতাংশই মানব পাউডার করা শিশুর দেহ। পরীক্ষায় এ তথ্য প্রমাণিত হয়েছে বলে সান ফ্রান্সিসকো টাইমস তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে। পরীক্ষায় মানব শিশুর লিঙ্গও নির্ধারণ করা সম্ভব হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ বারে ১৭ হাজারের বেশি ক্যাপসুল চোরাচালানের ঘটনা ঘটেছে।

সর্ব রোগের মহৌষধ হিসেবে এসব ক্যাপসুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বসবাসরত কোরিয়ান নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী এবং অন্য কোরীয়-চীনাদের মাঝে এসব ক্যাপসুল ব্যবহার করার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি বলে জানালেন এক কাস্টমস কর্মকর্তা। অথচ এসব ক্যাপসুলে সুপার ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় আটক পাচারকারিদের দাবি, ক্যাপসুলের উপাদান কিংবা এগুলোর উৎপাদন পদ্ধতি সম্পর্কে তারা কিছুই জানে না।

জানা গেছে, গর্ভপাতের ফলে পরিত্যক্ত মানব শিশুর দেহ থেকে এসব ক্যাপসুল তৈরি করা হয়। চীনের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলো বিশেষ করে উত্তর কোরিয়ার নিকটবর্তী জিলিন অঞ্চলকে এসব মানব শিশু প্রাপ্তির প্রধান উৎস হিসেবে চিহ্নিত করেছে বেশ কয়েকটি চীনা সংবাদপত্র। গর্ভপাতের পর এসব মাংসপিণ্ড সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করার আগ পর্যন্ত বাসার ফ্রিজেই সংরক্ষণ করা হয়। ব্যবসায়ীরা এগুলো সংগ্রহ করে মেডিকেল ড্রাইং মাইক্রোওয়েভে শুকিয়ে ফেলে। পরে শুকনো মাংসকে পাউডারে রূপান্তরিত করে অন্যান্য ঔষধি উপাদানের সঙ্গে মিশিয়ে ক্যাপসুল তৈরি করা হয়।

চীনা কর্তৃপক্ষ এসব ক্যাপসুলের চোরাচালান বন্ধের চেষ্টা করলেও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্য দিয়ে এসব ক্যাপসুলের হাজার হাজার প্যাকেট পাচার হয়ে যাচ্ছে।

তবে এসব মাংসপিণ্ডের উৎস কিংবা ক্যাপসুল তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে মুখ খুলতে নারাজ দক্ষিণ কোরীয় কর্তৃপক্ষ। চীনের সঙ্গে কোনো ধরনের কূটনৈতিক সমস্যা এড়াতে তারা এ পথ অবলম্বন করেছে। তাদের প্রত্যাশা, চীন সরকারই ভয়ংকর এ ঘটনা প্রতিরোধে জরুরি পদক্ষেপ নেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১২
সম্পাদনা: রানা রায়হান, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।