ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

গল্প

বড়গল্প/পর্ব-৫

কুঁড়ি থেকে ফুল | যুথিকা বড়ুয়া (পর্ব-৫)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৬
কুঁড়ি থেকে ফুল | যুথিকা বড়ুয়া (পর্ব-৫) ছবি: বাংলানিউজ

রাত প্রায় দশটা বাজে। মহুয়াদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় গিয়ে দাঁড়ায় নিখিলেশ। দ্যাখে, জ্যোৎস্নার উজ্জ্বল আলোয় ঝলমল করছে আকাশ। শুভ্র মেঘের স্তূপগুলো যেনো দৌড়াচ্ছে।

চার
রাত প্রায় দশটা বাজে। মহুয়াদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় গিয়ে দাঁড়ায় নিখিলেশ।

দ্যাখে, জ্যোৎস্নার উজ্জ্বল আলোয় ঝলমল করছে আকাশ। শুভ্র মেঘের স্তূপগুলো যেনো দৌড়াচ্ছে। ঝিরি ঝিরি শীতল হাওয়া বইছে। রাস্তায় লোকজন খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। দু’চারটে ক্যাব, যাত্রীবাহী বাস, বড় বড় ট্রাক হাওয়ার বেগে ছুটে যাচ্ছে। শহরের বেপারিরা বস্তায় বস্তায় কাঁচা শাকসবজি ঠেলাগাড়িতে ভরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। তার পিছন পিছন যাচ্ছে অটোরিকশা।  

ইতোমধ্যে তৈরি হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসে মহুয়া। নিখিলেশ বললো, ‘সাজগোজ হলো আপনার! অনেক দেরি করে ফেললেন। হাঁটতে শুরু করলে এতোক্ষণে অনেকটা পৌঁছে যেতাম’।

শাড়ির আঁচলে গা-টা ঢেকে নিয়ে মহুয়া বললো, ‘গেলেই বা, আমরা তো আর হেঁটে যাচ্ছি না’।

গম্ভীর হয়ে নিখিলেশ বললো, ‘ম্যাডাম, ক’টা বাজে খেয়াল আছে আপনার! এখন কোথায় যাবেন বলুন তো! এখনও একটা ট্যাক্সি নজরে পড়লো না’।

পলকমাত্র দৃষ্টিপাতে মহুয়া লক্ষ্য করলো, বির্বণ মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে নিখিলেশ। সন্ধানী দৃষ্টিতে চোখদু’টো ওর চরকির মতো ঘুরছে চারিদিকে। কিন্তু ভিতরে ভিতরে ও-যে অস্বস্তিবোধ করছে, অস্থির হয়ে উঠছে, সেটা বোধগম্য হতেই প্রচণ্ড রাগ হয় মহুয়ার। গম্ভীর হয়ে বললো, ‘মশাই, এতোই যদি তাড়া ছিলো, চলে গেলেই তো পারতেন। কে বলেছিল রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকতে’!

শাড়ির আঁচলটা টেনে আঙুলে মোড়াতে মোড়োতে বলে, ‘কেন যে এলেন, আর কেনই বা চলে যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে উঠলেন, বুঝতে পারছি না। আসলে, দোষ আমারই। অযথা আপনাকে ডিটেন করে রেখে....! নাহ, আমি বরং ফিরেই যাই নিখিলেশ বাবু! আপনি চলে যান’।

মহুয়ার বিষাদাচ্ছন্ন মুখের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতেই নিমেষে মোমের মতো গলে নিখিলেশ একেবারে নরম হয়ে যায়। নিঃশব্দে হেসে স্বাভাবিক গলায় বললো, ‘না, না, তা কী করে হয়! বেরিয়ে যখন পড়েছি, দেখাই যাক্ না! ততোক্ষণে আমরা হাঁটতে থাকি। বাইরে আবহাওয়াটা বেশ দারুণ লাগছে। সুন্দর মিহিন বাতাস, আমোদিত হয়ে আছে রঙবেরঙের ফুলের সৌরভে। গগনের পশ্চিম প্রান্তরজুড়ে রেশমী জ্যোৎস্নার উজ্জ্বল আলোয় ঝলমল করছে। খুব ফ্রেশ লাগছে! সজীব, সতেজতায় মন-প্রাণ একদম চাঙা হয়ে উঠছে। ফিল করতে পারছেন মিস্ ব্যানার্জী’?

বলে কোণা চোখে তাকায় নিখিলেশ। মহুয়াকে স্বাভাবিক লাগছে। কিন্তু ওর আভ্যন্তরীণ একটা তাৎপর্য্য নজর এড়ায় না নিখিলেশের। মনে মনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে।

হঠাৎ দৃষ্টি বিনিময় হতেই মুখ টিপে নিঃশব্দে হেসে ফেললো মহুয়া। উচ্ছ্বসিত চোখে চারদিকে একবার নজর বুলিয়ে নিখিলেশ বললো, ‘আচ্ছা এদিকে একটা সিনেমা হল ছিলো না! গেলো কোথায়? দেখছি না তো!’ 

চোখ পাকিয়ে তাকায় মহুয়া। রসিকতা করে বললো, ‘কেন? যাবেন নাকি সিনেমা দেখতে? কিছুক্ষণ আগে বাড়ি যাওয়ার জন্য তো খুউব ছটফট করছিলেন। এখন দেরি হচ্ছে না আপনার!’

-‘কী যে বলেন না! সিনেমা দেখবার এখন সময় কোথায়! দেখছি না, তাই জানতে চাইছিলাম। কিছুক্ষণ থেমে বলে, আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?’

মাথা নেড়ে মহুয়া বললো, ‘হ্যাঁ করুন না! এর জন্য আবার অনুমতি নিতে হয় না কি’!

অস্ফুট হাসলো নিখিলেশ। খানিকটা বিস্ময় নিয়ে জিজ্ঞাস্য দৃষ্টিতে বললো, ‘সব কথায় এতো সিরিয়াস হয়ে যান কেন বলুন তো! এটা কি আপনার হ্যাবিট না অন্যকিছু’?

-‘মানে? হোয়াটস্ ইওর পয়েন্ট?’ 

-‘না মানে, আমি বলছিলাম, এই যে কথায় কথায় আপনার চটে যাওয়া, মুখ গোমড়া করে থাকা। এসেছি পর্যন্ত আপনাকে প্রাণখুলে একবারও হাসতে দেখলাম না। ’

গম্ভীর হয়ে মহুয়া বলল, ‘তাই বলে মানুষ অকারণে হাসে বুঝি! সবসময় হি হি করাটা কি ঠিক? মোটেই ভালো দেখায় না। বিশেষ করে মেয়েদের’।  
বলে বড় বড় চোখ পাকিয়ে সবিস্ময়ে নিখিলেশের আপাদমস্তক নজর বুলাতে থাকে।

মনে মনে ইতস্ততবোধ করে নিখিলেশ। ফিক্ করে বিষণ্নময় একটা হাসি হেসে বললো, ‘আর্শ্চয্য, হোয়াট্‌স রং মিস্ ব্যানার্জী? আপনি অমন করে কী দেখছেন? আবার কোনো ভুল হয়ে গেলো না কি’!

 -‘না, ভুল নয়। তবে একটা কথা, ভাবতে আমার ভীষণ অবাক লাগছে! আমি তো বিশ্বাসই করতে পাচ্ছি না। বাইরে থেকে দেখে কে বলবে আপনার মস্তিস্কের মধ্যে এতোকিছু কাজ করে!’

-‘কেন করবে না? ডাক্তারদের বুঝি হৃদয় নেই? আবেগ-অনুভূতি নেই? আরে বাবা আমিও তো একজন রক্তে-মাংসে গড়া মানুষ, নাকি!’

-‘বলছেন! আমি তো ভাবলাম......! সি, ঠিক এই কথাটিই আমি বলতে চেয়েছিলাম। ’

- ‘নাউ কাম্ টু দ্য পয়েন্ট। ’

 -‘কাম্ টু দ্য পয়েন্ট? হোয়াট ডু ইউ মিন? আপনি কি বলতে চাইছেন নিখিলেশ বাবু?’

মহুয়ার অস্বাভাবিক মুখাবয়ব লক্ষ্য করে প্রসঙ্গ পরিবর্তন করার চেষ্টা করে নিখিলেশ। ফিক্ করে একটা অস্ফুট হাসি হেসে বললো, ‘নাথিং ম্যাডাম! এবার একটু জোরে পা চালান দেখি’।      

হাঁটতে হাঁটতে কখন যে বালিগঞ্জের সার্কুলার রোডটা পেরিয়ে এসেছিল, খেয়ালই করেনি। হঠাৎ বিকট শব্দে একটা ট্যাক্সি এসে দাঁড়াতে দু’জনেই চমকে ওঠে। মহুয়ার মুখের দিকে একপলক চেয়ে নিখিলেশ বললো, ‘চলুন, ঘুরেই আসি’!

তক্ষুণি ট্যাক্সিতে উঠে ড্রাইভারের পিছনের সিটে পাশাপাশি দু’জন বসে পড়ে। ড্রাইভার বললো, ‘কিধার জায়েঙ্গে সাহাব’?

-‘সিধা চলো ভাই। যাতে যাতে রাস্তেমে কোই আচ্ছাসা রেস্টুরেন্ট মিল জায়ে তো হামলোগ উতার জাউঙ্গা। ’ 

-‘ওকে সাহাব। জ্যায়সা আপ কহেঙ্গে। ’

রাস্তা ফাঁকা। গাড়ি হাওয়ার গতিতে চলছে। রাস্তার দোকানগুলো তখনও খোলা। গলা টেনে দু’জনেই দেখতে লাগলো, কোথাও একটা অভিজাত রেস্টুরেন্ট নজরে পড়লো না। প্রায় কুড়ি মিনিট পর সেন্ট্রাল কলকাতার বিবিডি বাগের গ্রেট-ইস্টার্ন হোটেলের সামনে এসে ড্রাইভার বললো, ‘সাহাব, আপলোগ ইধার উতার যাইয়ে। অন্দরমে আচ্ছাসা এক রেস্টুরেন্ট হ্যায়। সাথ মে কেবিন ভি’।

-‘হা, হা, মুঝে মালুম হ্যায়। এহি রুকো। ’

ভাড়া মিটিয়ে ট্যাক্সি থেকে নামতেই মহুয়ার স্নিগ্ধ কোমল সতেজতা, উচ্ছলতা ও প্রাণবন্ত পদচারণায় চুম্বকের মতো দৃষ্টি আকর্ষণে নিখিলেশকে চমৎকৃত করলো। বিস্ময়ে একেবারে অভিভূতের মতো হা করে থাকে। মনে মনে বলে, বাহ্, বেশ লাগছে তো মহুয়াকে! যেনো সাক্ষাৎ দেবী। অবিকল দূর্গা প্রতিমার মতো দেখাচ্ছে। এ যেনো ভুবনমোহিনী হৃদয়হরিণী মায়াবীনি এক বিদূষী নারী। স্বয়ং বিধাতাই যেনো তার অকৃপণ নিপুণতা ঢেলে ওকে গড়েছেন। নিখিলেশের পরম আকাঙ্ক্ষিত মন-বাসনার এক রূপ। আশ্চর্য্য, ওর স্বপ্নের সেই রাজকুমারীই বটে। তবু যেনো বিশ্বাস হয় না নিজের চোখদু’টোকে। নিখিলেশ পলকহীন নেত্রে চেয়ে থাকে আর ভাবে, মায়া মরীচিকা নয়তো! সবটাই কি বাস্তব, না ওর মনের ভ্রম! কিন্তু এতোক্ষণ তো ওর নজরে পড়েনি! 

কী যেনো বলতে চাইছে নিখিলেশ কিন্তু বলতে পারছে না। আকস্মিক কাঙ্ক্ষিত মন-বাসনায় আপাদমস্তক ওর মধ্যে একটা শিহরণ খেলে গেলো। সে এক নতুন বিস্ময়। এক অভিনব অনুভূতি। জেগে ওঠে পুলক। বিকশিত হয় ওর মন-প্রাণ সারাশরীর। অথচ এতোকাল বিদেশে একাকী বসবাস করেও কোনো শ্বেতাঙ্গ নারীর সংস্পর্শে যাওয়ার কখনও সুযোগই হয়নি। বিশেষ করে প্রণয়মূলক ব্যাপারে একেবারে আনাড়ি সে। কোনো ধারণাই ওর নেই। আর হবেই-বা কেমন করে! সুকোমল যৌবনের প্রারম্ভকাল থেকে একটি একটি করে আঠাশটি বসন্ত পেরিয়ে এসেও তেমন গভীরভাবে ভাববার কখনও অবকাশই পায়নি। অথচ সুদীর্ঘ সাত বছরে ইউরোপীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতির কোনো প্রভাব ওর মধ্যে পড়েনি। কোনো প্রতিক্রিয়া ঘটেনি। ওকে চমকিতও করেনি। দিনের শেষে সূয্যিমামা অস্তাচলে ঢলে পড়লেই গিরগিটির মতো বদলে যায় শহরের রঙ, রূপ। বদলে যায় মানুষের মন-মানসিকতা। সে এক অভিনব বৈচিত্র্যের সমাহারে ছেয়ে যায় শহরের চারদিক। রাতের অন্ধকার ঘনিয়ে এলেই ধীরে ধীরে উন্মোচন হতে থাকে, শ্বেতাঙ্গ পরীদের রহস্যাবৃত রূপ আর চমকপ্রদ প্রসাধনের বাহার। তখন অবিরল রঙের ধারায় ঝিকিমিকি আলোর মতো গাঢ় হয়ে ফুটে ওঠে। শুধু বস্তুই নয়, ব্যক্তি বিশেষেও। যখন সৌন্দর্যের পারিজাত এবং তিলোত্তমা উর্বশী রমণীর বিমুগ্ধ রূপের দর্শনে চুম্বকের মতো আর্কষণ করে প্রতিটি মানুষকে, মানুষের হৃদয়কে। সে এক বর্ণনাতীত মোহময় আর্কষণ। তাতেও কোনোভাবে নিখিলেশকে বিভ্রান্ত ও মুহূর্তের জন্যেও কখনও ওর মনকে বিগলিত করতে পারেনি।  

কিন্তু আজ মনের অগোচরেই ক্ষণপূর্বের তীব্র ভালোলাগার আবেশ মুহূর্তে ওর হৃদয়কে স্পর্শ করে। জাগ্রত হয়, এক অভিনব অব্যক্ত আনন্দ সঞ্চার হওয়ার একটা তীব্র অনুভূতি। যা পূর্বে কোনোদিন ঘটেনি। শুনতে পায় ওর প্রাণস্পন্দন। সে এক সম্পূর্ণ নতুন চেতনা, নতুন বিস্ময়। ওকে ক্রমশ উৎসুক করে তোলে এক অভিনব ইচ্ছা, আবেগ-অনুভূতি। আর তখনই রোমাঞ্চকর একটি কোমল শিহরণের ধাক্কা এসে লাগে ওর অন্তরের অন্তরস্থলে। ভিতরে ভিতরে চমক লাগে নিখিলেশের। মনে মনে বললো, এর নামই কি প্রেম, ভালোবাসা! ভালোবাসায় এতো সুখ! এতো আনন্দদায়ক! ক্ষণপূর্বেও তো কল্পনা করতে পারিনি।  

হঠাৎ দৃষ্টিগোচর হয়, উচ্ছ্বসিত মহুয়া আবেগে আপ্লুত হয়ে কিছু বলার ব্যাকুলতায় ক্রমশ অস্থির হয়ে উঠছে। উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো ওর চোখদু’টোও জ্বলজ্বল করছে। উল্লাসে ঝরে পড়ছে আবেগ, উচ্ছ্বাস। অথচ তখন ওরা দুইজন দুই পৃথিবীর বাসিন্দা। ক্ষণিকের ভালোলাগা ও মুগ্ধতার আমেজ দেহে, মনে ছড়িয়ে পড়লেও দু’জনের কেউ কারও মনের খবর কাউকে জানতে দিলো না। বুঝতে দিলো না। মনে মনে অব্যক্ত আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে উঠলেও রুচিগত সৌজন্যে ক্ষণিকের অব্যক্ত ভালোলাগার সঞ্চিত আবেশটুকু এক অদৃশ্য অনুভূতিতে গেঁথে রাখে নিখিলেশ। নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করে। অস্ফুট খুশীর আমেজে রাতের গ্রহ-তারা-নক্ষত্রভরা আকাশের পানে একপলক চেয়ে পকেট থেকে একটি ট্রিপল ফাইভ সিগারেট বের করে পুরুষালি মেজাজে টান দিতে দিতে ধীর পায়ে এগিয়ে যায় গ্রেট-ইস্টার্ন হোটেলের করিডোরের দিকে।  

মহুয়া কিছুই টের পেলো না। অথচ নিখিলেশকে এতো কাছে পেয়েও ওর মনকে আজ একটিবারও নাড়া দিলো না। কোনো ভাবান্তর হলো না, অনুশোচনাও হলো না। ও সম্পূর্ণ নির্বিকার। হয়তো ভুলেই গিয়েছে, একদিন সে নিখিলেশকে মনে-প্রাণে ভালোবেসেছিল। ওকে আপনার করে পাওয়ার আশায় মরিয়া হয়ে ছুটে গিয়েছিল মামাতো দিদি শুভ্রার শ্বশুরবাড়িতে। কিন্তু পারেনি নিখিলেশের সামনে গিয়ে দাঁড়াতে। পারেনি ভালোবাসা শব্দটি মুখফুটে উচ্চারণ করতে। পারেনি নিজেকে স্বেচ্ছায় ধরা দিতে। পারেনি বলেই মহুয়ার হৃদয় থেকে সেই একান্ত ভালোবাসার ফুলটি নিরাদরে অবহেলায় ঝরে গিয়েছিল। অথচ আজ একবারও সেকথা ওর মনে পড়লো না। মনে পড়লো না, যেদিন নিখিলেশকে হারিয়ে কি অপরিসীম বেদনায় মনের কষ্টগুলো তরল হয়ে অঝর ধারায় অশ্রু প্লাবনে ওর মন থেকে প্রায় মুছেই গিয়েছিল জীবনের স্বপ্ন-আশা-আকাঙ্ক্ষা, কামনা-বাসনা সব। যখন বন্ধুর বেশে মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে জীবনকে নতুন করে সাজাবার ইচ্ছা জাগিয়েছিল হবু স্বামী জয়ন্ত রায়চৌধ‍ুরী। যার মিথ্যে ভালোবাসাকে অন্ধের মতো দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে স্বপ্নের জাল বুনে অপেক্ষা করে থাকে শুভ পরিণয়ের শুভ মুহূর্তের জন্য। জয়ন্তই ওর জীবনের একমাত্র আশা, ভরসা, বিশ্বাস, ভালোবাসা সব। কিন্তু বিধির বিধান খণ্ডাবে কে! এ তো মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। যা স্বপ্নেও কেউ কখনও কল্পনা করেনি। কল্পনা করতে পারেনি, অনাগত দিনে কী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে মহুয়াকে। কখনও স্বপ্নেও কল্পনা করেনি, জয়ন্তকে ভালোবাসার চরম পরিণতি কতো নিষ্ঠুর, নির্দয়, কতো অসহনীয় ও যন্ত্রণাদায়ক।  

যোগাযোগ

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৬
এসএনএস

** কুঁড়ি থেকে ফুল | যুথিকা বড়ুয়া (পর্ব-১)
** কুঁড়ি থেকে ফুল | যুথিকা বড়ুয়া (পর্ব-২)
** কুঁড়ি থেকে ফুল | যুথিকা বড়ুয়া (পর্ব-৩)
** কুঁড়ি থেকে ফুল | যুথিকা বড়ুয়া (পর্ব-৪)

           


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

গল্প এর সর্বশেষ