ঢাকা: রাজধানীর রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকায় গরম-রোদ আর বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে ঈদের চতুর্থ দিনেও পরিবার-পরিজনকে নিয়ে বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে ঘুরতে বের হয়েছেন। মঙ্গলবার (১০ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।
বিকেলে কিছুটা বৃষ্টি ভাগরা দিলেও তা উপেক্ষা করে রমনা পার্কে শত শত দর্শনার্থীদের ভিড়। রমনা লেকের ওপরে কাঠের তৈরি ওয়াকওয়েতে তিল পরিমাণের জায়গায় নেই। প্রিয়জনদের নিয়ে রমনার লেকে বোটে চড়ে ঘুরছেন অনেকে, কেউবা দলবেঁধে ছবি তুলছেন, কেউ আবার সেলফি তুলতে ব্যস্ত। আর শিশুরা রমনার শিশুপার্কের দোলনায় দোল খাচ্ছে।
উন্মুক্ত পরিবেশ আর বিশুদ্ধ বাতাসে সময় কাটাতে জিয়া উদ্যান রাজধানীবাসীর একটি পছন্দের জায়গা। ঈদের ছুটিতে পরিবার ও প্রিয়জন নিয়ে এখানেও ঘুরতে এসেছে অনেকে। খোলা জায়গা পেয়ে শিশুরা খেলাধুলায় ব্যস্ত আর বড়রা মেতেছেন আড্ডায়।
ঘুরতে আসা অভিভাবকরা জানান, ঘরের চার দেয়ালে আবদ্ধ থাকতে থাকতে শিশুরা অনেক অজানা কিছুই শিখছেন না। তাই প্রাণ-প্রকৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে শিশুদের সঙ্গে নিয়ে এসেছেন।
প্রিয়জনদের সাথে মনোরম পরিবেশে সময় কাটানোর সবচেয়ে সুন্দর জায়গা হলো হাতিরঝিল। চারিদিকে গাছঘেরা পরিবেশ আর নির্মল বাতাস। বিকেল হতেই রাজধানীবাসীর পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠেছে হাতিরঝিল। গ্রীষ্মের ফুলে ফুলে হাতিরঝিলও সেজেছে নতুন সাজে। নতুন সেজেছে চক্রাকার বাস-ওয়াটার বোটও। ঈদ উপলক্ষে হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সি যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি ভ্রমণের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
রাজধানীর গেন্ডারিয়া থেকে হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সিতে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছেন তৌফিকা ইসলাম।
তিনি বাংলানিউজে বলেন, সাংসারিক ব্যস্ততা আর যানজটের কারণে পরিবার নিয়ে কোথাও ঘুরতে বের হওয়া যায় না। তাই এবারের ছুটিতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে হাতিরঝিলে এসেছি। ওয়াটার ট্যাক্সিতে উঠে পরিবারের সবাই খুব আনন্দ করছে। হাতিরঝিলের পানিও পরিষ্কার। দুর্গন্ধ নেই পানিতে।
শিশুদের বাড়তি আনন্দ দিতে আগে থেকেই বিভিন্ন রকমের খেলনা আর রাইড দিয়ে সাজিয়ে রেখেছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গুলিস্তানের শহীদ মতিউর পার্ক।
রাজধানীর শাহবাগের শিশুপার্কটি বন্ধ করে দেওয়ায় এই পার্কে শিশুদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। রাইডে চড়তে শিশুদের দীর্ঘলাইন। পার্কের চড়কগাছ, দোলনা, নৌকাসহ বিভিন্ন রাইডে চড়ে শিশুরা বেশ খুশি।
জুরাইন থেকে আসা শিশু জোনায়েদ বলে, আমি বাবা ও মায়ের সাথে শিশু পার্কে এসেছি। আমাদের এলাকায় তো খেলার মাঠ নেই, ঘোরার জায়গায় নেই তাই বাবা প্রতি ঈদের ছুটিতে আমাদের নিয়ে পার্কে ঘুরতে আসেন।
জোনায়েদের বাবা জানান, এমনিতেই বাচ্চাদের নিয়ে বের হওয়ার সময় পাই না। রাস্তায় ফাঁকা পেয়ে ঈদের দুই পর বের হয়েছি। সারাদিন ঘুরে রাতে বাসায় ফিরব।
এ ছাড়া দেখা যায়, সময় বাড়ার সাথে সাথে সামরিক জাদুঘর, নভোথিয়েটারে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগের জন্য ভিড় জমিয়েছেন ভ্রমণপিয়াসীরা।
এএটি