ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

অবকাঠামো উন্নয়ন দিয়েই টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০
অবকাঠামো উন্নয়ন দিয়েই টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়

ঢাকা: দেশে উন্নয়নের নামে পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে। শুধু অবকাঠামো উন্নয়ন দিয়েই টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। পরিবেশ ধ্বংস করে উন্নয়ন হলে সেই উন্নয়ন কখনো টেকসই হতে পারে না। 

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিরডাপ মিলনায়তনে ‘উপকূলে পরিবেশ সাংবাকিতার সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জসমূহ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব অভিমত জানান আলোচকরা।  

সভায় আলোচকরা বলেন, উন্নয়নের নামে সারা দেশের পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে।

ঢাকা বায়ু ও শব্দ দূষণের শীর্ষে। কক্সবাজারে ১৫ লাখ রোহিঙ্গা বাস করছে। তাদের বাসস্থানের জন্য পাথার ধ্বংস করা হচ্ছে, বিশুদ্ধ পানির জন্য যত্রতত্র গভীর নলকূপ স্থাপন করছে, এতে কক্সবাজারের পানির লেয়ার নিচে নেমে গেছে। সেখানকার প্রায় ৩ হাজার নলকূপ দিয়ে পানি উঠছে না। এদিকে সুন্দরবনের পাশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করায় সুন্দর বন ধ্বংস হচ্ছে। উন্নয়নের নামে মহেশখালী দ্বীপ এখন আর দ্বীপ নেই।

পরিবেশ (জল, মাটি, বায়ু) ভালো থাকলে আগামী প্রজন্ম সুস্থ থাকবে। এ সব কিছুই সাংবাদিকের লেখায় উঠে এসেছে। টেকসই উন্নয়নের অন্যতম নিয়ামক পরিবেশ সাংবাদিকতা। উপকূলের স্থানীয় সাংবাদিকরা স্বপ্রণোদিত হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব কাজ করছেন বলে জানান আলোচকরা।

সভায় কোস্ট ট্রাস্টের যুগ্ম পরিচালক বরকত উল্লাহ মারুফ বলেন, উপকূলে পরিবেশ সংবাদিকতার সম্ভাবনা ও প্রতিবন্ধকতা দুই-ই রয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলের স্থানীয় সাংবাদিকদের সামর্থ্য উন্নয়নে মূল ভূমিকা পালন করতে হবে জাতীয় পর্যায়ের গণমাধ্যমগুলোকে। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় পর্যায়ে কর্মরত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও ভূমিকা পালন করতে পারে।

আলোচকরা বলেন, স্থানীয় পর্যায়ের পরিবেশ সাংবাদিকদের বিজ্ঞান চেতনার পাশাপাশি লেখার কাজেও দক্ষ করে তুলতে হবে। তাহলে তাদের কোনো লেখাকে আর কেউ অস্বীকার করতে পারবে না।

সভায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, দেশে গণতন্ত্র না থাকায় উন্নয়নের নামে দেশের পরিবেশ ধ্বংস করছে। পরিবেশ রক্ষার জন্য আইনের আশ্রয় নিলেও অনেক সময় সেই আইনী লড়াই প্রভাবশালী ব্যক্তির বিপক্ষে যায়। আদালত আমাদের সুরক্ষা দেয় বলে আমরা নিরাপদ বোধ করি। কেউ যদি ক্ষমতাবলে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে পরিবেশ বিধ্বংসী কাজ চালিয়ে যেতে থাকে, তখন আমরা ঝুঁকির সম্মুখীন হই। দেশে গণতন্ত্র না থাকায় উন্নয়নের নামে দেশের পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে।  

সভায় বিসিএএসের প্রধান নির্বাহী, জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আতিক রহমান বলেন, পানিপ্রবাহের দিক থেকে আমাজনের পরেই বাংলাদেশ। এই বিশাল সম্পদকে টেকসই করতে হলে পরিবেশ সাংবাদিকদের ওপরই আমাদের নির্ভর করতে হবে। তাদের সামর্থ্যের উন্নয়ন করতে হবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

মতবিনিময় সভায় কক্সবাজার, ভোলা, ঝালকাঠি, বাগেরহাট ও পিরোজপুরের স্থানীয় পর্যায়ের সাংবাদিক প্রতিনিধিরা নিজেদের কাজের প্রতিবন্ধকতাগুলো তুলে ধরেন।

জার্নালিস্ট নেটওয়ার্ক অব বেঙ্গল ডেল্টা ও কোস্ট ট্রাস্ট যৌথ আয়োজনে এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন কোস্ট ট্রাস্টের পরিচালক মোস্তফা কামাল আকন্দ। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন কোস্ট ট্রাস্টের যুগ্ম পরিচালক বরকত উল্লাহ মারুফ।

এতে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন- পিআরডিআই'র প্রধান নির্বাহী শামছুদ্দোহা, এটিএন বাংলার সিনিয়র নিউজ এডিটর মানস ঘোষ, বাপার যুগ্ম সম্পাদক ও স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২০
পিএস/এইচজে 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।