ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

পহেলা শ্রাবণে

বাহিরে ঝড় বহে, নয়নে বারি ঝরে...

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৬
বাহিরে ঝড় বহে, নয়নে বারি ঝরে... ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিলেট: ‘শাওন রাতে যদি স্মরণে আসে মোরে/ বাহিরে ঝড় বহে নয়নে বারি ঝরে। ’ পহেলা শ্রাবণ শনিবার (১৬ জুলাই)।

কবি কাজী নজরুল ইসলামের গানের সুর ধরে আসা শ্রাবণের শুরু শনিবার।  

এই শ্রাবণের দিনে মেঘেরা জড়ো হবে আকাশে, কথা এমনটিই। হয়েছেও তাই, শনিবার শ্রাবণের প্রথম দিনেই আকাশে দাপট ছিল মেঘের। যেন শ্রাবণের আগমনী বার্তাই দিলো। মেঘের ভেলায় চড়ে শ্রাবণের এই দিনে উদাসী মন হারিয়ে যায় নদীর রূপালী জলে, সবুজ ঘাসের ঢগায়, খেয়া ঘাটের মাঝির ছাতায়।  

আবহমান বাংলার এ বৈচিত্র্যময় রূপ অনুভূতিগুলোকে প্রতিনিয়ত নাড়া দিয়ে যায়। ভেসে ওঠে হারিয়ে যাওয়া দিনের অনেক আনন্দ-বেদনার স্মৃতি।  

সিলেটে শনিবার ভোর হয়েছে বৃষ্টির রিমঝিম ছন্দময় শব্দে। সকাল থেকেই মেঘাচ্ছন্ন আকাশ ছিলো যেনো বেদনাবিধুর। ঝিরঝির বাতাসে ধুলছিলো পাতা-পল্লব। বুনো ফুলগুলোর বুকে লেগেছিলো কাপন,  বৃষ্টিস্নান করেছে সবুজ পাতাগুলো।  

তবুও জীবন চলার গতি ছিলো মৃদু মন্থর। থেমে থাকেনি শ্রবজীবী-কর্মজীবী মানুষের জীবন চলা। এটিই যেনো বাংলার চিরন্তন প্রকৃতি।  

ঋতু বৈচিত্র্যের পরিক্রমায় আষাঢ়-শ্রাবণ নিয়ে বর্ষাকাল। বর্ষায় প্লাবনে ধুয়ে-মুছে সাফ হয় ধরা। তেমনী স্নিগ্ধ-সুরভিত হয় পাতা পল্লব-বৃক্ষলতারাজি। ভাবুক মানুষের মনও যেনো হয়ে ওঠে বৃষ্টিস্নাত।  

শ্রাবণ মেঘের দিনে ছাতা হাতে ছুটছিলো স্কুলপড়ুয়া শিশু-কিশোর-কিশোরীরা। আবার কেউ কেউ মাথায় হাত দিয়ে ঝিরঝির বৃষ্টি থেকে বাঁচার প্রয়াস চালাচ্ছিলেন।  

শ্রাবণের প্রথম দিন সিলেট নগরীর জীবনযাত্রার চিত্রও ছিল ভিন্ন। গত কয়েক দিন গরমে অস্বস্থি ছড়ালেও এদিনের বৃষ্টি স্বস্তি এনে দেয় জনজীবনে। তবে ছুটির দিন থাকায় অফিস-আদালত বন্ধ ছিল। সে কারণে নগরীতে তেমন যানজটের দেখা মিলেনি।

সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এবার মৌসুম আসার আগেই বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। সাধারণত জুন, জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর বর্ষা মৌসুম। সে হিসাবে জুলাইয়ে ভারি বর্ষণ হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টিপাত কম হচ্ছে। আর শ্রাবণ মাস বর্ষাকালে হলেও কমে এসেছে বৃষ্টিপাত। তবে সপ্তাহে সাত দিনই ঝিরঝির বৃষ্টি হচ্ছে।  

জলবায়ুর এই পরিবর্তনের পেছনে অনেকগুলো কারণ দেখছেন আবহাওয়াবিদরা। আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, এই সময়ে ভারী বর্ষণ হওয়ার কথা। কিন্তু ভারী বর্ষণ হয়েছে এপ্রিল মে মাসে। যতো দিন যাচ্ছে, ততোই বদলাচ্ছে প্রকৃতি।  

এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গাছপালা নিধন, পাহাড়র টিলা কাটা, জলাশয় ভরাট হওয়ার কারণে প্রভাব পড়ছে প্রকৃতিতে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৬
এনইউ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad