ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনোদন

যে কারণে জন্মদিনে কেক কাটতেন না নায়ক ফারুক

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৭ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৩
যে কারণে জন্মদিনে কেক কাটতেন না নায়ক ফারুক

গত বছরের ১৮ আগস্ট নিজের শেষ জন্মদিন পালন করেন চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। জন্মদিনটা মোটেই সুখকর ছিল না তার।

 

সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালেই জন্মদিনটা কেটেছে তার। হাসপাতালের শয্যায় অঝোরে কেঁদেছিলেন তিনি।  

সেদিন ৭৫ বছরে পা রাখেন ঢাকাই সিনোমার ‘মিয়া ভাই’। আর দিনটিকে বিশেষ করে তুলতে সকাল থেকে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফরা নায়ককে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। অনেকেই কেক নিয়ে এসেছেন; কিন্তু কোনো কেকই কাটেননি ফারুক।

সে সময় এ চিত্রনায়কের স্ত্রী ফারহানা পাঠান তাদের জানিয়ে দেন, জন্মদিনে কেক কাটেন না ফারুক। এটা হয়ে আসছে ১৯৭৫ সাল থেকে। ওই সময় থেকেই জন্মদিনে কেক কাটেন না তিনি, উৎসবেও মাতেন না।

কেন এমনটি করেন সে কথাও পরিষ্কার করেন ফারহানা পাঠান। তিনি জানান, ‘১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর থেকে কোনো দিন নিজের জন্মদিনে কেক কাটেনি ফারুক। ত্রিশ বছর ধরে তার সঙ্গে সংসার করেছেন। কখনো কেক কাটতে দেখেননি ফারুককে। ’ 

অর্থাৎ ‘মিয়া ভাই’খ্যাত এ অভিনেতা ১৯৭৫ সালের পর থেকে নিজের জন্মদিন পালন বন্ধ রেখেছেন। শোকের মাস আগস্টে জন্মদিন উদযাপন করতে আগ্রহী ছিলেন না বঙ্গবন্ধুপ্রেমী ফারুক।  

১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট মানিকগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন ফারুক। স্কুল জীবনেই তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। ৬৬’র ছয় দফা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখায় তার নামে ৩৭টি মামলা দায়ের হয়েছিল। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি।

ফারুকের শৈশব-কৈশোর কেটেছে পুরান ঢাকায়। ১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন তিনি। এরপর ১৯৭৩ সালে খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘আবার তোরা মানুষ হ’, ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘আলোর মিছিল’ দুটি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি।  

১৯৭৫ সালে তার অভিনীত ‘সুজন সখী’ ও ‘লাঠিয়াল’ সিনেমা দু’টি ব্যবসা সফল ও আলোচিত হয়। ‘লাঠিয়াল’ চলচ্চিত্রের জন্য সেরা পার্শ্ব চরিত্রে অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এরপর সময় যতো পেড়িয়েছে পর্দায় নিজেকে গড়েছেন ভেঙেছেন। অভিনয়ে সমৃদ্ধ করেছেন ঢাকাই সিনেমাকে।

একে একে অভিনয় করেছেন ‘সূর্যগ্রহণ’, ‘মাটির মায়া’, ‘নয়নমনি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘নাগরদোলা’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘কথা দিলাম’, ‘মাটির পুতুল’, ‘সাহেব’, ‘ছোট মা’, ‘এতিম’, ‘ঘরজামাই’, ‘মিয়া ভাই’র মতো অসংখ্য সিনেমায়। সবশেষ ২০০৮ সালে ‘ঘরের লক্ষ্মী’ সিনেমায় অভিনয় করেন ফারুক।

তার অভিনীত প্রায় নব্বই ভাগ চলচ্চিত্র ব্যবসা সফল হয়েছে।  

সোমবার (১৫ মে) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন এ নায়ক।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।