ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

সোমবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদের স্থগিত নির্বাচনের ভোটগ্রহণ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২২
সোমবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদের স্থগিত নির্বাচনের ভোটগ্রহণ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: রাত পোহালেই সোমবার (১৪ নভেম্বর) সকালে স্থগিত হওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।  

সোমবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জেলার ৫ উপজেলার ৫টি কেন্দ্রের ১০টি ভোটকেন্দ্রে একযোগে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে রুহুল আমিন একক প্রার্থী থাকায় ইতোমধ্যেই তাকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেছে জেলা নির্বাচন অফিস। শুধু সদস্য পদে ৫টি সাধারণ আসনে ২০ জন প্রার্থী এবং সংরক্ষিত ২টি আসনের জন্য ৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এর মধ্যে সংরক্ষিত আসনের ১ নম্বর আসনে ২ ও ২ নম্বর আসনে ৩ জন এবং সাধারণ আসনগুলোর মধ্যে ১ নম্বর সদর উপজেলায় ৭ জন, ২ নম্বর নাচোল উপজেলায় ৩ জন, ৩ নম্বর গোমস্তাপুর ও ৪ নম্বর ভোলাহাট উপজেলায় ৪ জন করে ও ৫ নম্বর শিবগঞ্জ উপজেলায় ২জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে এ নির্বাচনে ব্যাপক টাকার ছড়াছড়ি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন সংরক্ষিত ২ আসনের নারী সদস্য পদপ্রার্থী শাহিদা খাতুন রেখা। তিনি লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, গত নির্বাচনে আমি অংশ নিয়ে বিজয়ী হয়েছিলাম। কিন্তু এ নির্বাচনে অর্থ লেনদেনসহ বিভিন্ন অনিয়ম হচ্ছে। ফলে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, আমি মহিলা আওয়ামী লীগের একজন নেত্রী। দলের মধ্যে কোনো লবিং গ্রুপিংয়ে আমি বিশ্বাসী নই। জেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক লবিং গ্রুপিং চলছে। যা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। ফলে জেলা পরিষদের সংরক্ষিত ২ আসনের নারী সদস্য পদপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন বর্জন করছি। কারো প্ররোচনা বা উৎসাহে নয়, অনিয়ম ও লবিং গ্রুপিংয়ের কারণেই স্বেচ্ছায় নির্বাচন বর্জন করলাম।

অপরদিকে বিভিন্ন সূত্র জানায় গোমস্তাপুর উপজেলার এক প্রার্থী শামীমা জাহান সারা মোটা অংকের টাকা ভোটারদের মধ্যে ছড়াচ্ছেন।  

সূত্র জানায়, তিনি জনপ্রতি ভোটারকে রকমভেদে ১৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার পর্যন্ত টাকা বিতরণ করে ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিচ্ছেন।

এছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ইউনিয়ন মেম্বারগণ জানান, জেলা পরিষদের প্রার্থীরা কেউ কেউ টাকা দিয়ে আবার কেউ কেউ টাকার পাশাপাশি ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজের জন্য ভোট চাচ্ছেন।  

তবে মহিলা প্রার্থী সারা দাবি করেন, তিনি টাকা দিয়ে ভোট কিনেছেন সেটা আগে প্রমাণ করতে হবে।

অপরদিকে সোমবারের নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা নির্বাচন অফিস। ইভিএম এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোতাওয়াক্কিল রহমান। তিনি জানান, সাধারণ সদস্য পদে ২০ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনে ৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জেলার ৫টি কেন্দ্রে ৬৫৯ জন ভোটার ইভিএম এ ভোট প্রয়োগ করবেন। নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তবে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে টাকা লেনদেনের ব্যাপারে নির্বাচন অফিসে কোনো অভিযোগ নেই বা এখন পর্যন্ত এ ধরনের অভিযোগ তার কছে আসেনি বলে জানান।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর ভোটগ্রহণ করার কথা থাকলেও নারী প্রার্থী শামীমা জাহান সারা হাইকোর্টে রিট দাখিল করলে গত ২৬ সেপ্টেম্বর নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন উচ্চ আদালত। ১৫ অক্টোবর আদালতের বিচারিক কাজ শেষে জেলা পরিষদের নির্বাচনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে নির্বাচন ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেওয়া হয়।  

জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে চারজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও দাখিলকারী একমাত্র হওয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।