ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

নরসিংদীতে জামানত হারাচ্ছেন ২৩ জন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২৪
নরসিংদীতে জামানত হারাচ্ছেন ২৩ জন

নরসিংদী: নরসিংদীতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাঁচটি আসনের ৩৩ প্রার্থীর মধ্যে ২৩ জন জামানত হারিয়েছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও তাদের দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী ছাড়া অন্য প্রায় সব প্রার্থী আট ভাগের এক ভাগ থেকেও কম ভোট পেয়েছেন।

আর ২৩ প্রার্থী পেয়েছেন এক শতাংশের কম ভোট।

নির্বাচন কমিশনের আইন অনুসারে, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক প্রার্থীকে ২৫ হাজার টাকা জামানত হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় ব্যাংকে জমা রাখতে হয়। কোনো আসনে প্রাপ্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ থেকেও কম ভোট পেলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের জামানত হিসেবে রাখা টাকা বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্য্যালয় সূত্রে জানা যায়, নরসিংদী-১ সদর আসনে আটজন, নরসিংদী-২ পলাশ আসনে চারজন,  নরসিংদী-৩ শিবপুর আসনে আটজন, নরসিংদী-৪ আসনে চারজন ও নরসিংদী-৫ আসনে নয়জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতা করেছে। জেলায় পাঁচটি পৌরসভা ও ৭১টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ১৮ লাখ ৩২ হাজার ৩১৯ জন। এর মধ্যে মহিলা ভোটার নয় লাখ ১৭৪ জন ও পুরুষ ভোটার নয় লাখ ৩২ হাজার ১৪৫ জন। এর মধ্যে নির্বাচনে গড়ে ৪১ শতাংশ ভোট কাস্টিং হয়েছে। সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছেন রায়পুরা উপজেলার বিএনএফের প্রার্থী মো. বিটু মিয়া। ১৬৩টি কেন্দ্রে তিনি ৭৫টি ভোট পেয়েছেন।

নরসিংদী-১ সদর আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঈগল প্রতীকের কামরুজ্জামান ছাড়া বাকি ছয় প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। এই আসনে ১৩৬টি ভোট কেন্দ্রে চার লাখ ৪১ হাজার ৪৩৬ জন ভোটারের মধ্যে এক লাখ ৪৮ হাজার ৫৩৮ জন ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে দুই হাজার ৮২৫ ভোট বাতিল হয়েছে। বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী ডাব প্রতীকে ইকবাল হোসেন ভূইয়া ১৮৯ ভোট, জাতীয় পার্টির প্রার্থী ওমর ফারুক মিয়া লাঙ্গল প্রতীকে ৭৫০ ভোট, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মো. ছবির মিয়া ফুলের প্রতীকে ২৭৩ ভোট, তৃনমূল বিএনপির মো. জলিল সরকার সোনালী আঁশ প্রতীকে ১৪০ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকারিয়া ট্রাক প্রতীকে ১৪২ ভোট ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির প্রার্থী শাজাহান মিয়া একতারা প্রতীকে ৪৭৭টি ভোট পেয়েছেন।

নরসিংদী-২ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আনোয়ারুল আশরাফ খান ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী এ এন এম রফিকুল আরম সেলিম ছাড়া বাকি দুইজন জামানত হারিয়েছেন। এই আসনে মোট ভোটার দুই লাখ ৬৯ হাজার ২৫৩ জন। ৯০টি কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন ৯৫ হাজার ৮১১ জন। এরমধ্যে ২ হাজার ৫৫৬ ভোট বাতিল হয়েছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থী এ এন এম রফিকুল ইসলাম সেলিম লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৯১৫ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আফরোজা সুলতানা দোলনা প্রতীকে ৬২৪ ভোট ও আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মাসুম বিল্লাহ ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ৭৭৫টি ভোট। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী আফরোজা সুলতানা স্বামী আওয়ামী লীগ প্রার্থী আনোয়ারুল আশরাফ খা কে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন।

নরসিংদী-৩ শিবপুর আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফজলে রাব্বি খান ও সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ছাড়া ছয়জন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। শিবপুরে ৯টি ইউনিয়নে মোট দুই লাখ ৬৩ হাজার ৭২৩ জনের মধ্যে ভোট দিয়েছেন এক লাখ ৬ হাজার ১৭ জন। এর মধ্যে দুই হাজার ৭৭৭টি ভোট বাতিল হয়েছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থী এএসএম জাহাঙ্গীর পাঠান লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ১৮৯ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ডা. মো. আলতাফ হোসেন আম প্রতীকে পেয়েছেন ১৮০ ভোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মিরানা জাফরিন চৌধুরী একতারা প্রতীকে পেয়েছেন ৩৪৮ ভোট, ইসলামী ঐক্যজোটের মোহাম্মদ নুরুজ্জামান মিনার প্রতীকে পেয়েছেন ৩৩১ ভোট, গণফোরামের মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান উদীয়মান সূর্য প্রতীকে পেয়েছেন ১১২ ভোট, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী সুশান্ত চন্দ্র বর্মণ সোনালী আঁশ প্রতীকে পেয়েছেন ১৮৬ ভোট ।

নরসিংদী-৪ (মনোহরদী-বেলাব) আসনে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম খান বীরু ছাড়া অন্য দুই প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। এই আসনে একটি পৌরসভা ও ২০টি ইউনিয়নে চার লাখ দুই হাজার ৬১০ জনের মধ্যে এক লাখ ৫২ হাজার ৪০৫ জন ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে দুই হাজার ৬০২টি ভোট বাতিল হয়েছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. কামাল উদ্দিন লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৯৫২টি ভোট ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী এমদাদুল হক (ভুলন) ছড়ি প্রতীকে ১৮৪টি ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।

নরসিংদী-৫ রায়পুরা আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান ছাড়া সাত প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। রায়পুরায় একটি পৌরসভা ও ২৪টি ইউনিয়নে মোট চার লাখ ৫৫ হাজার ৯২৭ জন ভোটারের মধ্যে এক লাখ ৮১ হাজার ৯১০ জন ভোট দিয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজার ৬২৬টি ভোট বাতিল হয়েছে। ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মুফতি আব্দুল কাদের মোল্লা মিনার প্রতীকে পেয়েছেন এক হাজার ৩৩৭ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মমতাজ মহল ডাব প্রতীকে পেয়েছেন ১৫৫ ভোট, গণফ্রন্টের মো. নাজমুল হক সিকদার মাছ প্রতীকে পেয়েছন ১০১ ভোট, বিএনএফের মো. বিটু মিয়া টেলিভিশন প্রতীকে পেয়েছেন ৭৫ ভোট, জাসদের মাহফুজুর রহমান মশাল প্রতীকে পেয়েছেন ৬৯০ ভোট, জাতীয় পাটির্র মো. শহীদুল ইসলাম লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৭৫৬ ভোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সোলায়মান খন্দমাল কাঁচি প্রতীকে ৩৩৭ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।