ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সম্প্রতি বেড়েই চলেছে বহিরাগতদের আনাগোনা। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ছাত্রী হল, ছাত্র হল, বিভিন্ন চত্বরে চলে তাদের আড্ডা।
তবে তা ছাপিয়ে বর্তমানে বহিরাগতদের অনিয়ন্ত্রিত মোটরসাইকেল চালানো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাল্লা দিয়ে চলে বহিরাগতদের বাইক রেস। কখনও কখনও দেখা যায় একসঙ্গে ৫-৬টি মোটরসাইকেল অনিয়ন্ত্রিতভাবে চলছে। দেখে মনে হবে যেন কোনো রেসের মাঠে নেমেছে তারা। সর্বোচ্চ গতিসীমার চেয়ে তিনগুণ গতিতে বাইক চালায় তারা।
প্রায় দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হল, ডায়না চত্বর, একাডেমিক ভবন এলাকা, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি এলাকাসহ বেশ কয়েকটি রোডে বহিরাগতদের বাইক রেস করতে দেখা যায়। অনিয়ন্ত্রিতভাবে মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে মাঝে মাঝে দুর্ঘটনায়ও পড়তে দেখা গেছে তাদের। আর এসব বহিরাগত বাইকাররা অধিকাংশই মাদকাসক্ত বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
সর্বশেষ শুক্রবার (৮ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে সাদ্দাম হলের সামনে বাইক দুর্ঘটনা ঘটে। দ্রুত বাইক চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে দুই বহিরাগত আহত হন। রাতেই তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ঘটনার সময় উপস্থিত কয়েক শিক্ষার্থী জানান, কিশোর, সাবিক জোয়ার্দ্দার, শিশিরসহ বেশ কয়েকজন বহিরাগত সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে আসে। আড্ডা শেষে রাত ১০টার দিকে কিশোর ও শিশির বাইক নিয়ে জিয়া মোড় থেকে রওনা দেয়। বাইক নিয়ে টিএসসিসির মোড়ে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাইকের মুখোমুখি পড়ে। এময় বাইকের গতি বেশি থাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দু’জনই পড়ে যান। এতে তারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পান। পরে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা তাদেরকে ভ্যানে করে মেডিক্যালে পাঠায়।
কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রাইসুল জানান, আহত অবস্থায় দুই বহিরাগতকে মেডিক্যালে আনা হলে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আচারণ ও অন্যান্য বিষয় দেখে মনে হয়েছে দুজনই মাদকাসক্ত ছিল। তাদের সঙ্গে আরও যারা ছিল তাদেরও বহিরাগত মনে হয়েছে। তারা চিকিৎসা কেন্দ্রে এসে আমাদের সঙ্গেও মারমুখী আচরণ করে।
বহিরাগতদের অনিয়ন্ত্রিত এ বাইক রেসের কারণে শিক্ষার্থীদের কাছে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। অভ্যন্তরীণ রাস্তা দিয়ে শিক্ষার্থীরা হাঁটতে গিয়ে যে কোন সময় দুর্ঘটনায় পড়ে আহত হতে পারেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্র আবাসিক হলগুলো একসঙ্গে হওয়ায় এ স্থানটি সবসময়ই জনাকীর্ণ থাকে। প্রায়ই বহিরাগতরা এখানে আড্ডা দেয় এবং বাইক নিয়ে দ্রুত যাতায়াত করে। এছাড়াও স্পিড ব্রেকার ছাড়া অন্যান্য রাস্তাগুলোতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাইক প্রতিযোগিতায় নামে। ফলে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দ্রুত বাইক চালানোয় আমাদের মনে দুর্ঘটনার আতঙ্ক বিরাজ করে।
এ বিষয়ে ইবির সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুর্শিদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, 'ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীদের জন্য; বহিরাগতদের জন্য নয়। বার বার চেষ্টা করেও তাদের প্রবেশ বন্ধ করতে পারছি না। আমরা বিষয়টি নিয়ে আবারও বসব। '
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া জানান, 'আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। এ বিষয়ে শিগগিরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রক্টরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। '
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২২
এমএমজেড