ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

আহ্বায়ক কমিটিতে বিতর্কে ইবি ছাত্রদল!

ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২১
আহ্বায়ক কমিটিতে বিতর্কে ইবি ছাত্রদল!

ইবি: দীর্ঘ ১১বছর পর আহ্বায়ক কমিটি দিয়েও বিতর্কে রযেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। বিবাহিত, অছাত্র, নারী কেলেঙ্কারি, সিন্ডিকেট, ত্যাগীদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে পকেট কমিটি গঠনসহ একাধিক অভিযোগ আনে সাবেক ও বর্তমান অনেক নেতারা।

এসব অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) বিকেলে একাংশের নেতাকর্মীরা ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে নতুন আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ এসব অভিযোগ আনেন। এসময় আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমিটি বাতিল না করলে কর্মীদের নিয়ে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে একাংশের ছাত্রদল নেতারা বলেন, ‘নতুন কমিটিতে যারা পদ পেয়েছে তাদের সিংহভাগ অপরিচিত। অধিকাংশই দলের মিটিং-মিছিলে উপস্থিত ছিল না। দলের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্তদের ষড়যন্ত্র করতে রাখা হয়েছে। কমিটিতে ত্যাগী ও কারাবরণকারী নেতাকর্মীদের বাদ দেওয়া হয়েছে। আমরা এই পকেট, সিন্ডিকেট ও লোক দেখানো কমিটি ঘৃণ্যভরে প্রত্যাখ্যান করছি। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই কমিটি বাতিল না করলে আমরা ১০ জন পদত্যাগ করবো। ’

‘নতুন কমিটির আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ২০০৮ সালে তার এক বান্ধবীকে পানির বোতলে প্রসাব ভরে খাওয়ান। সেই ঘটনার পর তার বান্ধবীর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এক বছর বহিষ্কৃত ছিলেন। এছাড়া সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুনের ছাত্রত্ব নেই এবং তিনি বিবাহিত। সংগঠনের নীতিমালা অনুযায়ী অছাত্র ও বিবাহিতদের সংগঠনে নূন্যতম সদস্য হওয়ারও যোগ্যতা নেই। ’

সম্মেলনে আহ্বায়ক কমিটিতে স্থান পাওয়া যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধি দল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সুপার ফাইভের সঙ্গে বৈঠকে একমাত্র আমাকেই সদস্য সচিব প্রস্তাব করা হয়েছিল। আমার সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে। পাশাপাশি ত্যাগী ও কারাবরণকারীদেরও বঞ্চিত করা হয়েছে। সাংগঠনিক অভিভাভক তারেক রহমানের কাছে আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। ’

এসব অভিযোগের বিষযে সংগঠনটির আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ তার বিরূদ্ধে আনিত অভিযোগ স্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার বান্ধবীর সঙ্গে সংঘটিত ঘটনাটি ২০০৮ সালের। সেই ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক কোনো সম্পর্ক নেই। সেটি নিতান্তই বিভাগীয় বিষয়। আর আমি রাজনীতিতে ২০১০ সালে পদে এসেছি। ’

কমিটি গঠনে অনিয়ম হয়েছে কিনা সে বিষয়ে তিনি বলেন, আহ্বায়ক, সদস্যসচিব পদ তো একটাই। বেশিরভাগ সিনিয়র/ত্যাগী নেতাদেরই ইচ্ছা থাকেলেও একাধিক ব্যক্তিকে এ দুই পদে বসানোর সুযোগ নেই। কেন্দ্র যাচাই বাছাই করে এ কমিটি দিয়েছে। এতে কোনো অনিয়ম হয়নি। যারা এসব অভিযোগ করছে তাদের বলবো আমি, দলের এই ক্রান্তিলগ্মে বেধাবেদ ভুলে গিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার।

বিবাহের বিষয়টি অস্বীকার করে সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন বাংলানিউজকে বলেন, ‘অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এর কোনো দালিলিক প্রমাণ দিতে পারলে আমি এ মুহূর্তে পদত্যাগ করবো। যদি এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ ক্রমাগত ছড়াতেই থাকে তাহলে আমি তাদের বিরূদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করবো।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১০ সালের ১৭ মার্চ ইবি শাখা ছাত্রদলের ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। এতে আইন বিভাগের ২০০৩-০৪ শিক্ষাবর্ষের ওমর ফারুককে সভাপতি ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষের রাশেদুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

পরে গতকাল বুধবার (১৬ জুন) লোক প্রশাসন বিভাগের ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষের সাহেদ আহম্মেদকে আহ্বায়ক এবং ইংরেজি বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের মাসুদ রুমী মিথুনকে সদস্য সচিব করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৬ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।