ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

মুখে ভর দিয়ে লিখে জিপিএ-৫

উত্তম ঘোষ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২০
মুখে ভর দিয়ে লিখে জিপিএ-৫

যশোর: মুখে ভর দিয়ে লিখে এবারের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় (পিইসি) জিপিএ-৫ পেয়েছে দুই হাত-পা ছাড়া জন্ম নেওয়া লিতুন জিরা। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও নিজের ইচ্ছা শক্তির কাছে হার মানেনি লিতুন জিরা। অদম্য ইচ্ছা শক্তির জন্য এবারের এবারের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে সে। তার এ সাফল্যে শিক্ষক, সহপাঠী ও অভিভাবকসহ সবাই আনন্দিত। সমাজের বোঝা হতে চাই না লিতুন।

লিতুন যশোরের মণিরামপুর উপজেলার খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে। উপজেলার খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিইসি পরীক্ষায় অংশ নেয় সে।

লিতুনের বাবা হাবিবুর রহমান ও মা জাহানারা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, জন্মের পর মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা চিন্তা হতো তাদের। এখন মেয়ের মেধা তাদের আশার সঞ্চার করছে। লিতুন আর দশজন শিশুর মতোই স্বাভাবিকভাবে খাওয়া-দাওয়া, গোসলসহ সবকিছু করতে পারে। মুখ দিয়েই লিখে সে। তার চমৎকার হাতের লেখা যে কারও দৃষ্টি কাড়বে।

লিতুন বলেন, পর নির্ভর না হয়ে লেখাপড়াসহ কিছু করতে চাই না। তবে, কিছুদিন আগে মারা যাওয়া দাদুর জন্য খুব মন খারাপ হয়। দাদু বেঁচে থাকলে আমার এ সাফল্যে তিনি অনেক খুশি হতেন।

লিতুনের প্রধান শিক্ষক সাজেদা খাতুন বলেন, তার ২৯ বছর শিক্ষকতা জীবনে লিতুন জিরার মতো মেধাবী শিক্ষার্থীর দেখা পাননি। এক কথায় সে অসম্ভব মেধাবী। শুধু লেখা-পড়ায় নয়, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও অন্যদের থেকে অনেক ভালো। তিনি বলেন, এ ফলাফলে আমরা সবাই খুশি। লিতুন জিরার প্রতি শিক্ষক ও তার সহপাঠীদের দারুণ সহযোগিতা ছিল। সে অনেক দূর যাবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।

এ বিষয়ে মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আহসান উল্লাহ শরীফি জানান, দুই হাত-পা ছাড়া জন্ম নেওয়া লিতুন জিরা এবারের প্রাথমিক সমাপনি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করেছে। লিতুন জিরা সমাজের অনুকরণীয়। যা অনেক শিক্ষার্থীর অনুপ্রেরণা যোগাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৯
ইউজি/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।