ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

শিক্ষা

নোট গাইড এখন ‘অনুশীলনমূলক বই’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৭
নোট গাইড এখন ‘অনুশীলনমূলক বই’ নোট-গাইড বই এখন 'অনুশীলনমূলক' বই হিসেবে বাজারে বিক্রি হচ্ছে

ঢাকা: শিক্ষা আইনে নিষিদ্ধ করা হলেও নোট বই ও গাইড বই খোলস পাল্টে সহায়ক বই হিসেবে ‘অনুশীলন মূলক’ বই নামে বিক্রি হচ্ছে বাজারে।  

নোট-গাইড এখন বাজারে সহায়ক বই বা অনুশীলন মূলক বই হিসেবে পরিচিত। এখনি মূল বইয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি করে নোট গাইডে নিরুৎসাহিত করতে ব্যর্থ হলে শিক্ষার্থীরা মূল ধারার জ্ঞান অর্জন থেকে পিছিয়ে পড়বে বলে মনে করছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।


 

রাজধানীর নীলক্ষেত, আজিজ সুপার মার্কেট ও বাংলাবাজার বইয়ের দোকান ঘুরে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি প্রকাশনীর বই ক্লাস ভিত্তিক ‘প্যাকেজ’ সাজিয়ে রেখেছেন দোকানিরা। মার্কেটে অনুপম ও জুপিটার গাইডের প্রধান্য ছিল চোখে পড়ার মতো। তাছাড়া শিক্ষার্থীরা এই দুটি গাইডেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে বলে জানালেন বিক্রেতারা।
 
রাজধানী আজিজ সুপার মার্কেটে সিদ্ধেস্বরী গার্লস স্কুলে থেকে গাইড বই কিনতে এসেছিলেন ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহসিনা হাবীব। সে অনুপম সিরিজের একসেট বই কিনেছে ৪৫০ টাকা দিয়ে। তবে, মূল বই থেকে সমাধানের চেষ্টা করে তানহা।
 
তাহসিনার মা রেশমা হাবীব বাংলানিউজকে বলেন, সিলেবাস এমন করে সাজানো নোট ছাড়া আমরা নিজেরা বুঝতে পারি না। শিশুরা কিভাবে বুঝবে! এজন্য গাইড বই কিনতে আসছি। একদিকে সরকার বিনামূল্যে বই বিতরণ করছে, অন্যদিকে সিলেবাস কঠিন করে গাইডের প্রচারে সহায়তা করছে। তাই আগে মূল বই সহজ করতে হবে। তারপর গাইড বন্ধ করতে হবে।
 
ভিকারুননেসা নুন স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে সানজিদা। সে বাবা শাহজাহান মিয়ার সঙ্গে এসেছে গাইড বই কিনতে। শাহজাহান মিয়া বলেন, আগে যেটা নোট গাইড ছিল রাতারাতি কাভার পেজ পরিবর্তন করে তা অনুশীলন মূলক বই হয়ে গেল! যা হাস্যকর। আজকে সবাই নোট গাইডের দিকে ঝ‍ুঁকছে, তার বড় কারণ হলো মূল বইয়ের সক্ষমতা নেই। যদি অংক বইয়ের কথা বলি, সেখানে দেখা যায়, যে সব অনুশীলনী দেওয়া থাকে তার অধিকাংশই থাকে নোট গাইডে। সমাধান ৫ বা ৭ টি দেওয়া থাকে তা অন্য প্যাটার্নের সঙ্গে মেলে না।
 
তিনি আরও বলেন, সৃজনশীল পদ্ধতিতে যে উদ্ধৃতি দেওয়া থাকে সেখানে গল্পের সঙ্গে পরবর্তী প্রশ্নগুলোর মিল থাকে না। তাই বাধ্য হয়ে ছেলেমেয়েরা নোট গাইডে আসক্ত হয়ে পড়ে। সংশ্লিষ্টদের উচিত মূল বইয়কে সহজ সাবলীল করা। যেন শিশুরা সেখান থেকে প্রশ্ন এবং উত্তর খুঁজে পায়।
 
নোট গাইডের ব্যাপারে শিক্ষা আইন খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো প্রকাশক বা প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কেবল সহায়ক পুস্তক বা ডিজিটাল শিখন-শেখানো সামগ্রী প্রকাশ করতে পারবে। কিন্তু কোনো ধরনের নোটবই, গাইড বই বা নকল মুদ্রণ, বাঁধাই, প্রকাশ ও বাজারজাত করা যাবে না।  
 
শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই আইনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে মূলত শিক্ষার্থীরা। তারা সৃজনশীলতা থেকে বের হয়ে জিপিএ-৫ পাওয়ার আশায় নোট-গাইড নির্ভর হয়ে পড়বে। এবং জ্ঞান অর্জনের পরিধি সীমিত হয়ে যাবে। এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগেই সবাইকে সচেতন হতে হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৭
এএম/ ইউএম/পিসি 


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।