ঢাকা, শুক্রবার, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

যাচ্ছে বই, আসছে ট্যাব

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৫
যাচ্ছে বই, আসছে ট্যাব

ঢাকা: খুদে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান আরও আনন্দময় করতে প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবইগুলোকে ইন্টার-অ্যাক্টিভ মাল্টিমিডিয়া ডিজিটাল ভার্সনে রূপান্তর করা হচ্ছে। শ্রেণিকক্ষে হাতে হাতে ট্যাবের মাধ্যমে খুদে শিক্ষার্থীরা শিখবে এসব পাঠ্যবইয়ের কনটেন্ট।



এনসিটিবি অনুমোদিত পাঠ্যবইয়ের ধারণাগুলোকে আকর্ষণীয় ও সহজবোধ্য করে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ছবি, চার্ট ও ডায়াগ্রাম দিয়ে খুদে শিক্ষার্থীদের কাছে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।

পাশাপাশি অডিও, ভিডিওসহ নানা ধরনের মাল্টিমিডিয়া উপকরণ সংযোজন করে অ্যানিমেশনের মাধ্যমে উপস্থাপিত হলে শিক্ষার্থীরা আনন্দদায়ক পরিবেশে শিক্ষাক্রমে সরাসরি যুক্ত হয়ে শিখতে পারবে।

‘প্রাথমিক শিক্ষা কনটেন্ট ইন্টার-অ্যাক্টিভ মাল্টিমিডিয়া ডিজিটাল ভার্সনে রূপান্তর’ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রথম থেকেই (২০১৬ সালের জানুয়ারি) অন্তত দুই হাজার স্কুলে এ পদ্ধতিতে শিক্ষাদান করা হবে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের উদ্যোগে এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সিলেবাসের আলোকে ও প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের সময়কাল ২০১৪ সালের মার্চ থেকে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। কর্মসূচি বাস্তবায়নে কারিগরি সহযোগিতা করছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ও সেভ দ্য চিলড্রেন।

প্রাথমিক স্তরের মোট ৩৪টি পাঠ্যবইয়ের মধ্যে ১৭টি মাল্টিমিডিয়া ডিজিটাল ভার্সনে রূপান্তর করা হচ্ছে। যার মধ্যে ইংরেজি ৫টি পাঠ্যবই রূপান্তর করছে সেভ দ্য চিলড্রেন এবং বাকি ১২টি রূপান্তর করছে ব্র্যাক।

১৭টি পাঠ্যবইয়ের মধ্যে প্রথম শ্রেণির ৩টি (গণিত, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, ইংরেজি), দ্বিতীয় শ্রেণির ৩টি (গণিত, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, ইংরেজি), তৃতীয় শ্রেণির ৩টি (গণিত, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, ইংরেজি), চতুর্থ শ্রেণির ৪টি (গণিত, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, ইংরেজি, বিজ্ঞান) এবং পঞ্চম শ্রেণির ৪টি (গণিত, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, ইংরেজি, বিজ্ঞান) মাল্টিমিডিয়া ডিজিটাল ভার্সনে রূপান্তর করা হচ্ছে।

আইসিটি বিভাগ জানায়, একেকটি পাঠ্যবই মাল্টিমিডিয়া ডিজিটাল ভার্সনে রূপান্তরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর মনোনীতদের নিয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান, শিক্ষকদের দিয়ে স্ক্রিপ্ট লেখানো, লিখিত স্ক্রিপ্টের ওপর মতামত প্রদান করে আইসিটি বিভাগ, এনসিটিবি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিটিআই, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কমিটি স্ক্রিপ্ট মূল্যায়ন করে মতামত প্রদান করেছে।

আইসিটি বিভাগের সহকারী প্রধান ও প্রকল্পের পরিচালক আকতার হোসেন বাংলানিউজকে জানান, বর্তমানে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির বইগুলো এনসিটিবিতে মূল্যায়নের অপেক্ষায় রয়েছে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বইগুলো আগামী বছরের নতুন সিলেবাস অনুসারে মাল্টিমিডিয়া ডিজিটাল ভার্সনে রূপান্তর করা হবে।

কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে শিক্ষার্থীরা আনন্দের সঙ্গে শ্রেণিকক্ষে শিখতে পারবে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক আকতার হোসেন।

ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি ও বাস্তবায়ন নিয়ে ইতোমধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরকে নিয়ে সেমিনার করেছে আইসিটি বিভাগ এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ও সেভ দ্য চিলড্রেন।

এনসিটিবি’র চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র পাল বাংলানিউজকে বলেন, খুদে শিক্ষার্থীরা যাতে আনন্দের সঙ্গে শ্রেণিকক্ষে পড়তে পারে, সে উপযোগী হবে এ প্রকল্প।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আলমগীর বাংলানিউজকে বলেন, যেসব স্কুলে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম আছে সেগুলোতে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের চিন্তা করা হচ্ছে। তবে প্রাথমিক স্তরে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সংযোগ এবং ট্যাব সরবরাহ করা চ্যালেঞ্জের বিষয়।

প্রকল্প বাস্তায়িত হলে পরিবেশের ওপরও ইতিবাচক প্রভাব থাকবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। ব্র্যাকের পরিচালক (শিক্ষা) শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর বই ছাপাতে যে পরিমাণ কাগজের প্রয়োজন হয়, তার জন্য আর গাছ কাটার প্রয়োজন হবে না।

আইসিটি বিভাগ খুদে শিক্ষার্থীদের হাতে ট্যাব তুলে দিয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহী। এজন্য শ্রেণিকক্ষের উপযোগী ৮ ঘণ্টা চার্জ থাকে এমন ট্যাব ব্যবহার করা হবে বলে জানান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ কর্মসূচি উপস্থাপন করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৫
এমআইএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।