ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিক্ষা

শেকৃবিতে ইঁদুর নিধনে উন্নত প্রযুক্তি বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

মহিবুল আলম সবুজ, শেকৃবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৫
শেকৃবিতে ইঁদুর নিধনে উন্নত প্রযুক্তি বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শেকৃবি থেকে: ফসলের ক্ষতি কমাতে ইঁদুর নিধনে উন্নত প্রযুক্তির ফাঁদের ব্যবস্থা ও এর বিষ সহনশীলতা বাড়াতে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) ও এইড কুমিল্লার আয়োজনে এবং নেদারল্যান্ডস অর্গানাইজেশন ফর সায়েন্টিফিক রির্সাচের অর্থায়নে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনার কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বেলা ১০ টায় উদ্যান তত্ত্বের চেয়ারম্যান ড. এএফএম জামাল উদ্দিনের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্যের গ্রীনউইচ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর স্টিভেন আর বেলমিন , নেদারল্যান্ডের ওয়াগিনিনগিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মিরবার্গ বাস্টিয়ান গিজিলি,  এইড কুমিল্লার নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া বেগম শেফালী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. হযরত আলী, উপাচার্য প্রফেসর শাদাত উল্লা এবং ভেটিরিনারি অনুষদের ডীন ড. মো. আনোয়ারুল হক বেগ।

বিকেল দুইটা পর্যন্ত সেমিনার চলে।

সেমিনারে প্রফেসর স্টিভেন আর বেলমিনের উপস্থাপনায় বলেন,  ইঁদুর খাদ্য নিরাপত্তার জন্য একটি হুমকি। ইঁদুর খেয়ে যতটা না নষ্ট করে তার চেয়ে ৫-১০ গুণ বেশি নষ্ট করে গর্তে নিয়ে, মাটিতে মিশিয়ে, পশম ও প্রসাব সংক্রমনের মাধ্যমে। ইঁদুর নিধনে বিষ প্রয়োগ না করে ফাঁদ প্রযুক্তির ওপর গুরত্ব দেন তিনি।
প্রফেসর ড. মিরবার্গ বাস্টিয়ান গিজিলি বলেন, এইচআইভি  ও ডেঙ্গু ভাইরাসের চেয়ে ইঁদুরের হান্টিভাইরাস মানুষ ও গৃহপালিত পশুর জন্য মারাত্মক হুমকি। নারিকেল, সুপারি সহ অন্যান্য ফল ফলাদি ইঁদুরের আক্রমণ হইতে রক্ষা করতে মাটি হতে ২-৩ মিটার উপরে গাছের গোড়া বা কান্ডের চারিদিকে ৪৫-৫০ সেন্টিমিটার প্রশস্ত টিনের পাত শক্ত করে ভাল ভাবে আটকাতে হবে যেন ইঁদুরের আর গাছের উপরে উঠতে না পারে । এ ব্যবস্থায় কাঠ বিড়ালীর উপদ্রব হতেও রক্ষা পাওয়া যায়।

বৃষ্টিপাত ও খাদ্যের প্রাপ্যতা পর্যাপ্ত হলে ইঁদুরের বংশ বৃদ্ধি পায় বলেও উল্লেখ করেন ড. মিরবার্গ বাস্টিয়ান ।

এইড- কুমিল্লার নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া বেগম শেফালী বলেন, আমরা কুমিল্লা, ফেনী,গাজিপুর, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, রংপুরের জনসাধারণকে ফাঁদ পেতে কিভাবে ইঁদুর নিধন করা যায় সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি।

বর্তমানে এসব অঞ্চলে ইঁদুরের উপদ্রব অনেকটা কমে এসেছে বলে দাবি করেন রোকেয়া বেগম।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপাচার্য প্রফেসর শাদাত উল্লা বলেন, ইঁদুর নানা রোগের বাহক ও নিজের গর্তে খাবার সঞ্চয় করে কৃষকের ক্ষতি করে। কৃষকদের ইঁদুর বিষয়ে সচেতন করায় তিনি এইড-কুমিল্লাকে ধন্যবাদ দেন।

ইঁদুর ৬০ রকমের মারত্মক রোগ সহ ভয়াবহ কালো মৃত্যু খ্যাত প্লেগ রোগ , বাঁশ গাছের বীজ নষ্ট,  মাটির ঘর ছিদ্রকরণ সহ মানুষের বাতজ্বরের জন্যও দায়ী।
ফসলি  জমি , বন ও বন্যার কবল থেকে মুক্ত এলাকাগুলোতে ইঁদুরের আক্রমণ বেশি বলে মনে করেন  গবেষকেরা।

মানুষ ইঁদুরের সংর্স্পশে গেলে নিঃশ্বাসের মাধ্যমে আক্রান্ত হয়ে থাকে।   

ইঁদুরের জিন বংশগত ভাবে খাদ্যে মেশানো বিষে সহনশীল হওয়ায় বিষ প্রয়োগে ইঁদুর নিধন না করা গেলেও উন্নত প্রযুক্তির ফাঁদ দিয়ে ইঁদুরের বংশ কমিয়ে সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

নেদারল্যান্ডস অর্গানাইজেশন ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চের অর্থায়নে ইঁদুরের আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার প্রকল্পে এইড- কুমিল্লার তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করছে মর্ডান রাইস মিলিং ইউনিট কুমিল্লা (মরমইউক)।

বাংলাদেশ সময়: ২২১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।