ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

৪৭০ কোটি টাকা সরিয়েছে ধামাকা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২২
৪৭০ কোটি টাকা সরিয়েছে ধামাকা

ঢাকা: আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ধামাকা শপিং ডটকমের শীর্ষ কর্মকর্তা ও তাদের স্বজনরা মিলে গ্রাহক ও মার্চেন্টদের ৪৭০ কোটি টাকা সরিয়ে নিয়েছেন। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জসিম উদ্দিন চিশতি একাই নিয়ে গেছেন ১২৯ কোটি টাকা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে করা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। গত ২৭ ডিসেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো পরিদর্শন প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, ধামাকা শপিংয়ের কাছে গ্রাহকদের ৩০৩ কোটি ও মার্চেন্টদের ১৬৭ কোটি টাকা মিলিয়ে মোট পাওনা ৪৭০ কোটি টাকা।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ধামাকা শপিংয়ে পণ্য অর্ডার করে গ্রাহকদের অগ্রিম পরিশোধ করা অর্থ থেকে ৮৪ কোটি টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জসিম উদ্দিন চিশতি।

এছাড়া গ্রাহকদের পরিশোধিত টাকা থেকে নিজের মালিকানাধীন অন্যান্য কোম্পানিকে ২৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া ছাড়াও সফটওয়্যার কেনার নামে আরো ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন চিশতি।

এসব কাজে ধামাকা শপিংয়ের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) মো. সিরাজুল ইসলাম ও তার আপন ভাই মো. সেলিম হোসেনসহ আরো অনেকেই সম্পৃক্ত বলে ধারণা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, পণ্যের পরিবর্তে অর্থ হস্তান্তরকারী অসাধু বিক্রেতা ও সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের আইনি প্রক্রিয়ায় আনা গেলে প্রকৃত তথ্য জানা সহজ হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পরিদর্শনে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী কোম্পানিটি গ্রাহকদের কাছ থেকে ৭৩৬ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। আর বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরবরাহ করেছে ৫৫৭ কোটি টাকা।

জানা গেছে, ধামাকা শপিংয়ের ব্যাবসায়িক কার্যক্রম এখন পুরোপুরি বন্ধ। কোম্পানিটির রেজিস্টার্ড গ্রাহক ছিল দুই লাখের বেশি। প্রায় ১১ হাজার বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান কম্পানিটিতে পণ্য সরবরাহ করেছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী সূত্র জানায়, গত সেপ্টেম্বরে এক গ্রাহকের দায়ের করা প্রতারণা মামলায় ধামাকা শপিংয়ের সিওও সিরাজুল ইসলাম রানাসহ তিন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে এমডি জসিম উদ্দিন বিদেশে পালিয়ে গেছেন।  

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘কিছুসংখ্যক গ্রাহক দফায় দফায় বিক্রেতা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে নগদ ও চেকের মাধ্যমে অর্থ পেয়েছেন। যারা প্রাথমিকভাবে ধামাকা শপিংয়ের দেওয়া ডিসকাউন্ট সুবিধা ভোগ করেছেন। এই সুবিধাভোগীদের সঙ্গে ধামাকা শপিং বা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে আরো অধিকতর তদন্ত হওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ’

এই সুবিধাভোগী গ্রাহকদের একজন সেলিম হোসেনের বিষয়ে অনুসন্ধান করে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, তিনি ধামাকা শপিংয়ের সিওও সিরাজুল ইসলামের আপন ভাই। ধামাকা শপিং মূলত ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের ই-কমার্স ব্যবসা। আর ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম মাইক্রোট্রেড গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান। এ গ্রুপের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো হলো— ইনভেরিয়েন্ট টেকনোলজিস, মাইক্রোট্রেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ও মাইক্রোট্রেড আইসিএক্স লি.।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।