ঢাকা: বাজেটে অপ্রদর্শিত আয় (কালো টাকা) সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। এ ব্যবস্থা বৈষম্যকে আরও উসকে দেওয়া হবে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপস্থাপিত বাজেটে এ সুযোগ ‘বৈষম্যবিরোধী ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয়ের ব্যত্যয়।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর হোটেল লেকশোরে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সিপিডিরি সম্মানীয় ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, নতুন করে টাকা পাচাররোধ করা হয়েছে। ফলে হুন্ডি-হাউরা বন্ধ হয়েছে। আর এর কারণে বেড়ে গেছে প্রবাসী আয়। প্রবাসী আয় যে ৩০ শতাংশ বেড়েছে, এটা তারই প্রভাব। যারা টাকা পাচার করেছে এ সরকার তাদের দেশে সম্পদ জিম্মি করেছে। বাজেটে এসব উদ্যোগের কথা আছে। কিন্তু আরও যে উদ্যোগ নেওয়া দরকার ছিল, এটা এখানে দেখা যায়নি।
তিনি বলেন, যাদের বেশি সম্পদ আছে, তাদের কাছে থেকে সম্পদ নিয়ে যাদের সম্পদ নেই তাদের মাঝে বিতরণ করা, এটা এই বাজেটের দর্শন। কিন্তু সেটতো স্পষ্ট হয়নি।
‘ক্রমান্বয়ে আমাদের আয় করের ওপর নির্ভরতা বাড়াতে হবে। এজন্য মোট দেশজ উৎপাদনের অনুপাতে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য রাজস্ব লিকেজ দূর করতে প্রয়োজনীয় অটোমেশনের যে উদ্যোগ-সেটা আর জোরালো করার যে প্রতিশ্রুতি বাজেটে থাকার কথা ছিল, বাজেটে সেটা দেখা যায়নি’ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ফাহমিদা বলেন, বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বহাল রাখা হয়েছে। তাতে যারা নিয়মিত নৈতিকভাবে কর দেন তাদের নৈতিকতাতে আঘাত করেছে। এতে বৈধপথে উপার্জনকারীদের সঙ্গে বৈষম্য তৈরি হবে। তাছাড়া এই পদক্ষেপে সরকারের খুব বেশি রাজস্ব আয় হবে বলেও মনে হয় না।
তিনি বলেন, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বৈষম্যের হাতিয়ার। এ ধরনের সুবিধা বৈধভাবে আয় করা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমিয়ে দেবে। এটা বৈষম্য। যা জুলাই আন্দোলনের যে বৈষম্যবিরোধী চেতনা, তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করি।
বাজেটের সামগ্রিক কাঠামো নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সিপিডি নির্বাহী পরিচালক। তার মতে, কিছু কিছু পদক্ষেপ ভালো নেওয়া হয়েছে বিচ্ছিন্নভাবে। কিন্তু সামগ্রিক কাঠামোগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে যে একই কাঠামোর মধ্যে এখানে একটু বেশি, ওখানে একটু কম—এ রকম করে নেওয়া হয়েছে।
জেডএ/এএটি