ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

সর্বজনীন পেনশনের টাকা তুলতে জুতা ক্ষয় হবে না, আশ্বাস কর্তৃপক্ষের

সিনিয়র করেসপেন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২৩
সর্বজনীন পেনশনের টাকা তুলতে জুতা ক্ষয় হবে না, আশ্বাস কর্তৃপক্ষের

ঢাকা: সর্বজনীন পেনশনের টাকা তুলতে পায়ের জুতার তলা ক্ষয় হবে না। ৬০ বছর বয়সের পর পেনশনের টাকা গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে যাবে।

এমন আশ্বাস দিয়েছেন জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কবিরুল ইজদানী খান।  

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, ঢাকার (এমসিসিআই) মিলনায়তনে সর্বজনীন পেনশন নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।  

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে উপস্থাপন করেন কবিরুল ইজদানী খান। এমসিসিআই সভাপতি সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ ও এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি আরশাদ কবীর।

কবিরুল ইজদানী খান বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিমের টাকা মানুষের টাকা, সরকারের টাকা নয়। নির্ধারিত সময় শেষে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টাকা পেয়ে যাবেন।  

বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে আসা মানবসম্পদবিষয়ক কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সর্বজনীন পেনশন সরকারের সর্বজনীন কল্যাণ চিন্তার পাশাপাশি স্মার্ট বাংলাদেশের রূপান্তর প্রক্রিয়ার বাস্তবায়ন। এটি কোনো ধরনের ঝামেলামুক্ত পেনশন কার্যক্রম। গ্রাহকদের অহেতুক ঝামেলা পোহাতে হবে না।

তিনি আরও বলেন, কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার পর ৬০ বছর বয়সের পর থেকে আজীবন পেনশন পেতে থাকবেন গ্রাহক। গ্রাহক মারা গেলে তার উত্তরাধিকারী ১৫ বছর পেনশন পাবেন। ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার পর ৬০ বছর বয়সের আগে গ্রাহক মারা গেলে গ্রাহকের ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে এবং ৬০ বছরের পর তার উত্তরাধিকারী ১৫ বছর পেনশন পাবেন। ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার আগেই গ্রাহক মারা গেলে জমাকৃত টাকা সুদ-আসলে একসঙ্গে ফেরত পাবেন উত্তরাধিকারী।

কবিরুল ইজদানী খান জানান, চার ধরনের স্কিমের মধ্যে যেকোনো স্কিমের গ্রাহক ইচ্ছা করলে তার পরিবর্তিত সক্ষমতা অনুযায়ী সুরক্ষা স্কিমে স্থানান্তর হতে পারবেন। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। এমনকি প্রতি মাসে যিনি পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দিতেন, পরিবর্তিত আর্থিক সক্ষমতা বিচারে তিনি দুই হাজার টাকার স্কিমেও স্থানান্তরিত হতে পারবেন এবং ৬০ বছর বয়সের পর জমাকৃত টাকার অনুপাতে পেনশন পাবেন।
প্রগতি স্কিমে এক কোম্পানিতে চাকরি করার কয়েক বছর পর অন্য কোম্পানিতে চলে গেলে আগে জমাকৃত টাকা গ্রাহকের নির্দিষ্ট নম্বরে জমা থাকবে। নতুন প্রতিষ্ঠানে গেলে আগের জমাকৃত টাকার সঙ্গে নতুন চাঁদা যুক্ত হবে। এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে গেলে আগের প্রতিষ্ঠান তার টাকা কেটে রাখতে পারবে না।

শ্রম আইনে প্রভিডেন্ট ফান্ড বাধ্যতামূলক হলেও কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মীর জন্য পেনশন স্কিম নিয়োগকর্তার জন্য বাধ্যতামূলক নয়।  

পেনশন-গ্রাহকদের টাকা আপাতত সরকারের ট্রেজারি বিল ও ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করা হবে উল্লেখ করে কবিরুল ইজদানী খান বলেন, যখন তহবিলের পরিমাণ আরও বেশি হবে, তখন পদ্মা সেতুর মতো বড় খাতে বিনিয়োগ করা হবে, যে বিনিয়োগে মুনাফা আসবে এবং নিরাপদ আছে। এ টাকা বিনিয়োগের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ টিম থাকবে, যে টিম সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্তে নেবে।  

সরকার বদল হলে বর্তমান সরকারের সৃষ্টি পেনশন স্কিম পরিত্যক্ত হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা নির্দিষ্ট আইনের অধীনে পরিচালিত হবে। গ্রাহকের স্বার্থ নষ্ট হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।  

এমসিসিআই সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ১০ কোটি মানুষকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনতে সরকার যে কার্যক্রম শুরু করেছে, এই কঠিন সময়ে এটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। করোনার মতো মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বজুড়ে এক বিপদের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। দেশে দেশে মূল্যস্ফীতিতে মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা।

বাংলাদেশ সময়: ০১১৭ ঘণ্টা, ৩০ আগস্ট, ২০২৩
জেডএ/আরএইচ  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।