ঢাকা, সোমবার, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৭ মে ২০২৪, ১৮ জিলকদ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু, এসেছে ৫৫ টন 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৭ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০২৩
কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু,  এসেছে ৫৫ টন 

ঢাকা: দেশের স্থলবন্দর দিয়ে রোববার (২ জুলাই) বিকেল পর্যন্ত ৫৫ টন কাঁচা মরিচ দেশে এসেছে। রাতে আরও আসবে, ৩৬ হাজার ৮৩০ টন কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

দেশে এসেছে মোট ৯৩ টন।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এছাড়া আর ৯ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানির বিপরীতে দেশে এসেছে এক লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ টন।

এদিকে কাঁচা মরিচের এমন ঝালে দিশেহারা অবস্থার মধ্যে পড়েছেন ক্রেতারা। তারা বলছেন, যে কোনো পণ্যের দাম বাড়লেই বিক্রেতারা ঘাটতির অজুহাত দেখান। আমদানি করলে দাম কমবে বলেন। কয়েকদিন আগে পেঁয়াজের দাম বাড়ার পর আমদানি শুরু করা হয়েছে। কিন্তু দাম কি আদৌ কমেছে? আসলে এগুলো সব সিন্ডিকেট। সরকারের উচিত সময় থাকতেই আমদানি শুরু করা। যাতে এভাবে সিন্ডিকেট করে ব্যবসায়ীরা দাম না বাড়াতে পারে।

বিক্রেতারা বলছেন, প্রায় ১০ মাস ধরে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় দেশীয় কাঁচা মরিচ দিয়ে চাহিদা মেটানো হচ্ছিল। কিন্তু তীব্র তাপদাহে খরার কারণে এবার কাঁচা মরিচের ফলন কম হয়েছে। তার ওপর কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে অনেক মরিচ নষ্ট হয়ে গেছে। অথচ কোরবানির ঈদের সময় মরিচের চাহিদা থাকে অনেক বেশি। সে তুলনায় পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় মরিচের দাম আকাশচুম্বী হয়েছে। ভারত থেকে মরিচ আমদানি শুরু না হলে এবং আবহাওয়া পরিস্থিতি ভালো না হওয়া পর্যন্ত দাম কমবে না।

রোববার (২ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ মানভেদে ৪৫০ থেকে ৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে প্রায় সব দোকানেই কাঁচা মরিচ তুলনামূলক কম দেখা গেছে। আবার অনেক সবজির দোকানে কাঁচা মরিচই পাওয়া যায়নি। কাঁচা মরিচ কিনতে আসা ক্রেতার সংখ্যাও একেবারেই নগন্য। যারা আসছেন তারাও ১০০ গ্রামের বেশি মরিচ কিনছেন না।

কাঁচা মরিচের দাম বেশি হওয়ায় এ পণ্যটি বিক্রি করাই বন্ধ রেখেছেন সবজি বিক্রেতা শহীদ উল্লাহ। তিনি বলেন, কাঁচা মরিচের কেজি ৬০০ টাকা। ক্রেতা এসে ১০ টাকার দিতে বলে। ১০ টাকায় কয়টা মরিচ দেওয়া যায়? তার উপর মরিচের দাম বেশি কেন এ নিয়ে ক্রেতারা আমাদের সঙ্গে ঝগড়া করে। আমরা তো আর দাম বাড়াই না। আমরা যে দামে কিনে আনি সে দামে বিক্রি করি। তাই মরিচ বেচাই বন্ধ রাখছি। দাম কমলে তখন আবার বিক্রি করবো। বর্ষাকাল শেষ হওয়ার আগে দাম কমবে না। তবে ভারতীয় মরিচ আসা শুরু হলে তখন আবার কিছুটা কমতে পারে।

দেলোয়ার হোসেন নামে আরেক ক্রেতা বলেন, সিন্ডিকেট করে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছে। নইলে পাশের দেশে ৪০ টাকা কেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে। আর আমাদের দেশে এক হাজার টাকা। সরকার মরিচ আমদানি শুরু করলেই দাম কমবে। এতে সরকারের লাভ, ব্যবসায়ীদের লাভ, ক্রেতাদের লাভ। কিন্তু সেটি করা হয় না। বরং সিন্ডিকেটকে সুযোগ করে দেওয়া হয়। আর ভোগান্তি হয় আমাদের ক্রেতাদের।

দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের দাম নিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি শুরু হলে দীর্ঘ ১০ মাস পর গত ২৬ জুন দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে এ পণ্যটির আমদানি শুরুর অনুমতি দেয় সরকার। ওইদিন পাঁচটি ট্রাকে করে ২৭ হাজার ১৬৬ কেজি কাঁচা মরিচ ভারত থেকে দেশে ঢুকে। কিন্তু এর পরদিন অর্থাৎ ২৭ জুন থেকে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় আবার আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। এতেই অস্থির হয়ে উঠে কাঁচা মরিচের বাজার। তবে ঈদের টানা ছয়দিনের বন্ধ শেষ রোববার (০২ জুলাই) থেকে ফের শুরু হয়েছে কাঁচা মরিচের আমদানি। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দাম কমবে বলে আশা বিক্রেতাদের।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৭ ঘণ্টা, জুলাই ০২,২০২৩
জিসিজি/জেএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।