ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

দেশে এলপিজি প্রসারে দুই দিনব্যাপী এশিয়ান সামিট শুরু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৫ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২৩
দেশে এলপিজি প্রসারে দুই দিনব্যাপী এশিয়ান সামিট শুরু আইসিসিবিতে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ‘এশিয়ান এলপিজি সামিট সম্মেলন-২০২৩'। ছবি: রাজিন চৌধুরী

ঢাকা: বাংলাদেশে দিন দিন এলপিজির চাহিদা ব্যাপক আকারে বাড়ছে। গত দশ বছরে অর্থাৎ ২০১৩ সালের পর থেকে সরকার আবাসিক ভবনে কোনো ধরনের গ্যাস সংযোগ দেয়নি।

নতুন যারা ভবন নির্মাণ করছে তাদের বেশিরভাগই ভরসা করছেন এলপিজি গ্যাসের উপর। ২০১৪ সালে দেশে এলপিজি গ্যাসের ব্যবহার ছিল ১ লাখ টন। যা গত ১০ বছরে বেড়ে হয়েছে ১৫ লাখ টনে। পাশাপাশি এলপিজি সর্বরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। ফলে দেশে এলপিজির বাজারকে আরও সম্প্রসারণ করতে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে সম্পর্ক বাড়াতে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী এশিয়ান রিজিওনাল এলপিজি সামিট।

রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) আয়োজনে করা হয়েছে ‘এশিয়ান এলপিজি সামিট সম্মেলন-২০২৩'। মঙ্গলবার (৩০ মে) সকাল ১০টায় শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী এ সামিট শেষ হবে বুধবার (৩১ মে) সন্ধ্যা ৬টায়। সামিটে বিভিন্ন সিলিন্ডার প্রস্তুতকারক কোম্পানি থেকে শুরু করে ভাল্ব প্রস্তুতকারক কোম্পানিসহ এলপিজি সেক্টরের বিভিন্ন প্রযুক্তি তুলে ধরা হয়েছে।  


মঙ্গলবার এ সামিট ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন দেশের এলপিজি সর্বরাহকারী কোম্পানিগুলো তাদের বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি এবং কিভাবে পরিচালনা করেন এ সব তারা সামিটে সবার সামনে তুলে ধরেছে।  

বসুন্ধরা সেক্টর-এ পরিকল্পনা ও জনসংযোগ প্রধান এবং বিএলএনজি, বিপিপিএলের বিভাগীয় প্রধান ইঞ্জিনিয়ার মো. জাকারিয়া জালাল বলেন, ওয়ার্ল্ড এলপিজি অ্যাসোসিয়েশন সারা পৃথিবীতে এলপিজর মার্কেট সম্প্রসারণ এবং মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর কাজ করছে। সারা পৃথিবীর এলপিজি সাপ্লায়ার, অপারেটর এবং ট্রেডার্স ওয়ার্ল্ড এলপিজি অ্যাসোশিয়েশনের সদস্য। তারা বিভিন্ন দেশে সামিটের মাধ্যমে এ প্রোগ্রাম করে থাকে। এবার এশিয়ান যে রিজনাল সামিট, তা দুই দিনব্যাপী ঢাকায় হচ্ছে। এবারের এশিয়ান সামিটের মূল উদ্দেশ্য ঢাকাসহ এর আশেপাশের ভারত, শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানের মতো দেশগুলোয় এলপিজির মার্কেট সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে যারা অপারেটর রয়েছে তাদের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যমে সম্পর্ক স্থাপন করা। পাশাপাশি এই সামিটের মাধ্যমে ভোক্তা পর্যায়ে দেশীয় অপারেটররা কি ধরনের উন্নয়ন করেছে এসব কিছু গ্রাহকদের জানানো।  

তিনি বলেন, অপারেটর থেকে শুরু করে গ্রাহক সবাইকে এই সামিটে আসার অনুরোধ করব। আপনারা এসে দেখুন বাংলাদেশে জ্বালানি সংকটে এলপিজি কতটুকু ভূমিকা রাখছে। এই সামিটের মাধ্যমে এলপিজি সেক্টর সম্পর্কে বিস্তার ধারণা পাবে সবাই।  

এলপিজি অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (লোয়াবে) সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আহসানুল জাব্বার বলেন, সাধারণত এ ধরনের ইন্টারন্যাশনাল সামিটে যে দেশ হোস্ট করে তারাই লাভবান হয়। এলপিজি গ্যাসের চাহিদা বাংলাদেশের দিন দিন বাড়ছে। ২০১৪ সালেও আমাদের এলপিজি ব্যবহার হতো এক লাখ টন। বর্তমানে আমরা এর ব্যবহার করছি ১৫ লাখ টন। যেহেতু সরকার বাসা বাড়িতে গ্যাস বন্ধ করে দিয়েছে তাই দিন দিন এলপিজির ব্যবহার আরও বাড়ছে। এই ইন্টারন্যাশনাল সামিটের মাধ্যমে আমরা নিজেদের এবং অন্যদেশের এলপিজি সম্পর্কে বিভিন্ন অপারেশন এবং পলিসি সম্পর্কে ধারণা পাব। এ সামিটে ৩৫টি স্টল রয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশসহ ৩০ টি দেশ এতে অংশ নিয়েছে।  

তিনি বলেন, দেশের যেন দিন দিন গ্রিন গ্রাসের পরিমাণ বাড়ে সে জন্য আমরা কাজ করছি। এলপিজি যেহেতু গ্রীন গ্যাস তাই এর ব্যবহারের ফলে গাছ কাটার পরিমাণ কমে যাচ্ছেন। পাশাপাশি দেশের ইন্ডাস্ট্রিগুলোতেও যেন এলপিজির ব্যবহার বাড়ানো যায় সে দিকে লক্ষ্য রেখেও আমরা কাজ করছি। আমি আশা করবো এই সামিতের মাধ্যমে সবাই উপকৃত হবে। পাশাপাশি লাভবানও হবেন। সরকারের এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন থেকে শুরু করে বিভিন্ন উদ্যোক্তারাও এই সেক্টরকে উন্নত করার জন্য এগিয়ে আসছেন।  

ওয়ার্ল্ড এলপিজি অ্যাসোসিয়েশনের সিইও ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেমস রকল বলেন, পুরো পৃথিবীতে এলপিজি চাহিদা এখন বাড়ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক গ্যাসের সংকটের কারণে এলপিজির মার্কেটের বিশাল এক সম্ভাবনার জায়গা তৈরি হয়েছে। ওয়ার্ল্ড এলপিজি অ্যাসোসিয়েশনের ইচ্ছা বাংলাদেশের একটা ভালো মার্কেট তৈরি হোক। কারণ এটার ব্যবহার খুব সহজ যে কেউ চাইলেই এটা ব্যবহার করতে পারবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২৩
ইএসএস/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।