ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

টাকা বাঁচাতে পাইকারি বাজারে ছুটছেন সাধারণ ক্রেতারা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৩ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৩
টাকা বাঁচাতে পাইকারি বাজারে ছুটছেন সাধারণ ক্রেতারা

ঢাকা: বাজারে সাধ্যের বাইরে সবকিছুর দাম, ফলে অস্বস্তি বাড়ছে ক্রেতাদের মধ্যে। এ অবস্থায় এখন অর্থ সাশ্রয়ে খুচরা বাজার থেকে সরাসরি পাইকারি বাজারে চলে আসছেন সাধারণ ক্রেতারা।

বেশির ভাগ সাধারাণ ক্রেতাই বলছেন, টাকা বাঁচাতে তারা এখন পাইকারি বাজারেই এখন ভিড় করছেন। কিন্তু তাতেও লাভ হচ্ছে না। পাইকারি বাজারে এখন সব সবজির দামই বেশি। যা খুচরা পর্যায়ে গিয়ে আরও বেড়ে যাচ্ছে।

পাইকারি বাজারে শুধুমাত্র আলু ৩০ টাকায় এবং লেবু এক ডজন ৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া বাজারের সব ধরনের সবজি ৬০ টাকার ওপরে।  

সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি করল্লা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। কিন্তু খুচরা বাজারে সেই করল্লা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০০ টাকায়। পাইকারি বাজারে ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, যা খুচরা পর্যায়ে ৬০ টাকা। পাইকারিতে পটলের কেজি ৩৫-৪০ টাকা, যা খুচরা পর্যায়ে ৮০ টাকা। পাইকারিতে টমেটোর কেজি ৩০ টাকা, যা খুচরা পর্যায়ে ৬০ টাকা। পাইকারিতে চিচিঙ্গার কেজি ৩৫-৪০ টাকা, যা খুচরায় ৮০ টাকা। আকার ভেদে প্রতি পিছ লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত, যা খুচরা বাজারে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে লেবুর ডজন (১২ পিছ) ২০-৩০ টাকা হলেও খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।

শনিবার (১৩ মে) রাজধানীর পাইকারি সবজির আড়ৎ কারওয়ান বাজারের এর সঙ্গে খিলগাঁও রেলগেট বাজার, গোড়ান বাজার, মেরাদিয়ে হাটের মত স্থানীয় পর্যায়ের খুচরা বাজার ঘুরে দামের এমন চিত্র দেখা গেছে।

কারওয়ান বাজারে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন মো. সোহাগ। মা এবং ভাইসহ থাকেন শাহীনবাগে। মা তাকে বাসার জন্য বাজার করতে পাঠিয়েছেন। নিয়মিত তার বড় ভাই বাজার করতে আসেন। মায়ের অনুরোধে বাজারে গিয়ে সবজির দাম শুনে মাথা ঘুরছিল তার।

হাতে যে বাজারের তালিকা ছিল, তার মধ্যে বেশ কয়েকটি পণ্য কেনা বাকি ছিল। কিন্তু টাকায় কুলায়নি! দাম বেশি হওয়ায় ও পকেটে হিসাবের বাড়তি টাকা না থাকায় কিছু পণ্য বাদ রেখেই বাজার থেকে বাসায় ফিরছেন।

কথা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় বাজার করতে এসেছি। খুচরা বাজারে সবকিছুর দাম বেশি, তাই কম দামের কথা চিন্তা করে বাসার কাছে হওয়ায় কারওয়ান বাজারে আসা। কিন্তু এখানেও দাম অনেক! টাকায় টান পড়ায় প্রয়োজনের সবকিছু কেনা হয়নি। আগে দুই হাজার টাকার মধ্যে পাইকারি বাজার থেকে সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনা যেত। এখন দাম বাড়ায় এই অল্প টাকায় প্রয়োজনীয় অনেক পণ্যই কেনা সম্ভব হচ্ছে না।

বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সোহাগের মতো অবস্থা অধিকাংশ ক্রেতার। সাধ্যের মধ্যে ভরছে না তাদের বাজারের ব্যাগ।

কারওয়ানবাজারের পাইকারি সবজি বিক্রেতা ফোরকান আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের পর সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। বর্তমানে বাজারে সবজির গাড়ি কম আসছে। পাশাপাশি লেবার খরচও আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। যে কারণে পাইকারি বাজারে সবজির দাম বাড়তি।

রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে ফুলকপি, লাউ প্রতি পিস ৮০ টাকায়, বাধাকপি প্রতিপিস ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শুধুমাত্র কমের মধ্যে বিক্রি হচ্ছে লেবু ৩০ টাকা হালি এবং আলু প্রতিকেজি ৩৫-৪০ টাকা। এছাড়া দাম বেড়ে কাচাঁ মরিচ প্রতি কেজি ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ধনিয়াপাতার দাম বেড়ে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়।

পাশাপাশি ঢেঁড়স, শসা, টমেটো, চালকুমড়া প্রতিকেজি ৬০ টাকা। ভাল মানের দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৬৫-৭০ টাকায়। ঝিঙে, ধুন্দুল, চিচিঙ্গা, পটল, কাঁচা, পেপে,  প্রতি কেজি ৮০ টাকা। করল্লা, গাজর, লতি, প্রতি কেজি ১০০ টাকা। কাকরল ১২০ টাকা কেজি। কচুরমুখি প্রতি কেজি ১৪০ টাকা।

খিলগাঁও রেলগেট বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা ফজলে রাব্বি বাংলানিউজকে বলেন, বাজারে এখন বেচাকেনা কম। মানুষের কাছে টাকাপয়সা নেই। আগে যেখানে প্রতিদিন ৪০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করতাম এখন সেখানে ৩০ হাজার টাকারও বিক্রি করতে পারি না। লাভ করতে আমাদের খুব কষ্ট হয়ে যায়। কারণ মালের দাম তো বাড়তি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৩
ইএসএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।