ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

আকুর দেনা মেটাতে কমেছে রিজার্ভ, ৭ বছরে সর্বনিম্ন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৯ ঘণ্টা, মে ৯, ২০২৩
আকুর দেনা মেটাতে কমেছে রিজার্ভ, ৭ বছরে সর্বনিম্ন

ঢাকা: বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ২৯ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার বা দুই হাজার ৯৮৩ কোটি ডলার।  এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) মার্চ-এপ্রিল সময়ের আমদানি ব্যয় ১১৮ কোটি ডলার পরিশোধের পর সোমবার (০৮ মে) দিন শেষে রিজার্ভ কমলো।

আগের দিন রোববার (০৭ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, আকুর ১১৮ কোটি ডলার বিল পরিশোধ করা হয়েছে। সোমবার যা রিজার্ভের হিসাবয়নে যা দেখানো হবে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে। জ্বালানি, খাদ্যসহ সব ধরণের পণ্য ও পরিবহন ব্যয় বেড়ে যায়। একই পণ্য বা সেবা আমদানিতে আগের চেয়ে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেশি বৈদেশিক মুদ্রা গুনতে হয়। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন থেকে ডলার বিক্রি করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। রিজার্ভ বৃদ্ধিতে নানামুখী পদক্ষেপ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন বৃদ্ধিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হয় বাংলাদেশ। প্রথম দফায় কিস্তি সরবরাহও পায় বাংলাদেশ ব্যাংক। তারপরও ডলারের রিজার্ভ কমতে থাকে।

সর্বশেষ মোট রিজার্ভ দাঁড়াল ২৯ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে রিজার্ভ হিসাবায়ন করলে রিজার্ভের পরিমাণ আরও প্রায় ছয় বিলিয়ন ডলার কমবে। সেক্ষেত্রে প্রকৃত রিজার্ভ নামবে ২৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। প্রতি মাসে ছয় বিলিয়ন ডলার হিসাবে এ রিজার্ভ দিয়ে সাড়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের এপ্রিলে প্রথম বারের মতো ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে রিজার্ভ। ওই অর্থবছরের শেষে রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। ৭ বছর পর আবারও ২৯ বিলিয়নের ঘরে নেমে এলো রিজার্ভ। ২০১৭ সালের ২২ জুন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে। করোনা মহামারীর মধ্যে আমদানি কমে যায়, বিদেশ ভ্রমণে নানা রকম বাঁধা নিষেধ জারি থাকার কারণে ডলারের চাহিদা কমে। এ সময়ে প্রবাসী আয়ও বৃদ্ধি পায়। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বাংলাদেশে ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রির হার বাড়িয়ে দেয়। ২০২১ সালের আগস্ট মাসে রিজার্ভের পরিমাণ ৪৮ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবা উল হক জানান, সামনে রিজার্ভ কমার পাশাপাশি বাড়বে। সময়ে আমদানির দায় মেটাতে রিজার্ভ বিক্রি চলমান। আবার সামনের মাসে বিদেশি ঋণ ও অনুদানের কিছু অর্থ যোগ হবে। তখন রিজার্ভ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২২–২৩ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই–এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১২ বিলিয়ন বা এক হাজার ২০০ কোটি ডলারের বেশি বিক্রি করেছে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে প্রতি ডলার ১০৪ টাকা ৫০ পয়সা দামে বিক্রি করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৭ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০২৩
জেডএ/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad