ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

প্রার্থী গ্রেপ্তারের পাশাপাশি তসলিমা-মোদির সমর্থনে বিপাকে তৃণমূল

রক্তিম দাশ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১১
প্রার্থী গ্রেপ্তারের পাশাপাশি তসলিমা-মোদির সমর্থনে বিপাকে তৃণমূল

কলকাতা: নির্বাচনের আগ মুহূর্তে নৈহাটির মমতা ব্যানার্জির জনসভা থেকে বীজপুরের প্রার্থী শুভ্রাংশু রায়কে গ্রেপ্তার, অন্যদিকে বাংলাদেশের লেখিকা তসলিমা নাসরিন ও গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমর্থন পেয়ে বেশ বিপাকে তৃণমূল কংগ্রেস।

বীজপুরে তৃণমূল প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুকুল রায়ের ছেলে শুভ্রাংশু রায় নির্বাচন অধিকারিকদের ওপর হামলা করে ফেরার হয়েছিলেন।

তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল।

অবশেষে তাকে গতকাল রোববার নৈহাটিতে মমতা ব্যানার্জির জনসভা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ (সোমবার) তাকে ব্যারাকপুরের আদালতে তোলা হয়। বিচারক রাজর্ষি বসু অধিকারী তাকে একদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের লেখক তসলিমা নাসরিন তার কলামে কলকাতার একটি বহুল প্রচারিত সংবাদপত্রে মমতা ব্যানার্জিকে খোলাখুলি সমর্থন করেছেন। সেইসঙ্গে তিনি আশা করেছেন মমতা মুখ্যমন্ত্রী হলে তার কলকাতায় ফেরা সম্ভব হবে।

তবে তসলিমাকে কলকাতায় ফিরিয়ে আনা যাবে না দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল মুসলিম অল ইন্ডিয়া মাইনরিটি ফোরামের পক্ষ থেকে। সেইসঙ্গে ২০০৭ সালের ২১ নভেম্বর কলকাতার মৌলালি অঞ্চলের রিপন স্ট্রিটে ব্যাপক হামলাও চালানো হয়েছিল ফোরামের পক্ষ থেকে।

পুলিশের সঙ্গে সংর্ঘষ হয় ফোরামের। হামলায় প্রচুর যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুলিশ লাঠি ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়েও তেমন সাফল্য পায়নি। পুলিশের রাবার বুলেটে ৪৩ জন আহত হয়। গ্রেপ্তার হয় ১০০ জন।

এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত ছিলেন ফোরামের নেতা ইদ্রিস আলী, উলেমা হিন্দের সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী।

এছাড়াও তসলিমাবিরোধী আন্দোলনের নেতা ছিলেন টিপু সুলতান মসজিদের ইমাম হুজুর বরকতি ও ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা তোহা সিদ্দিকী।

এদের মধ্যে হুজুর বরকতি তসলিমাকে মুরতাদ ঘোষণা দিয়ে ফতোয়াও দেন।

ওই সময় থেকে এরা মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে বিভিন্ন সভা সমাবেশ করতেন। বামফ্রন্ট সরকারের সমলোচনা করতেন এবং লোকসভা নির্বাচনে এরা তৃণমূলের পক্ষে প্রচার করেন।

এবারও বিধানসভা ভোটে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী ছাড়া আর সবাই তৃণমূলের সঙ্গেই আছেন।

এর মধ্যে ফোরামের নেতা ইদ্রিস আলী মুশির্দাবাদের জলঙ্গি কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী।

পরিবর্তনের হাওয়ায় শুধু নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুর নয়, তসলিমা বিরোধিতাও ছিল। মুসলিম জনগণের কাছে সিপিএম ছিল তসলিমার আশ্রয়দানকারী।

সেই সময় মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের এক সভায় প্রধান অতিথি হয়ে মমতা প্রকাশ্যেই তাদের সঙ্গে তসলিমার বিরোধিতা করেছিলেন। সেটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশও পেয়েছিল।

এর মধ্যে আরও জটিলতা বেড়েছে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যে। গতকাল মোদি আহমেদাবাদে মমতার পরিবর্তনকে স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু মুসলমান ভোটারদের মধ্যে যারা বামফ্রন্টবিরোধী হয়ে মমতার পক্ষে চলে গেছিলেন, এ দু’টি ঘটনায় তারা এখন কী রায় দেন সেটাই দেখার।

তবে এ নিয়ে তৃণমূল অস্বস্তিতে থাকলেও খুশি সিপিএম।

সোমবার সিপিএম নেতা রবীন দেব বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রার্থী জেলে, তারপর কুপন কেলেঙ্কারি। এখন ভোটের জন্য এরা কার না হাত পা ধরছে। কখনও মোর্চা, কখনও মাওবাদী, আবার মৌলবাদী। এরা চালাবে রাজ্য?’

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।