চট্টগ্রাম: করোনার কারণে গত দুই ঈদ মৌসুমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন খলিফাপট্টির ব্যবসায়ীরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় তারা।
এক সময় খলিফাপট্টিতে সাড়ে চারশ এর বেশি দোকান ও কারখানা ছিল।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, এখানকার কারখানায় তৈরি পোশাক পৌঁছে যায় নগরের বিভিন্ন বিপণি বিতান, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, সিলেট ও তিন পার্বত্য জেলাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ছোট-বড় মার্কেটে।
খলিফাপট্টিতে গিয়ে দেখা যায়, ঈদকে সামনে রেখে দোকানিরা নানা রঙের পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন। তাদের প্রায় সবারই কারখানা দোকানসংলগ্ন। ছোট মাঝারি কক্ষের এসব কারখানায় শ্রমিকদের কেউ কাপড় কাটছেন, কেউ সেলাই করছেন, আবার অনেকে পোশাকে জরি, চুমকি ও লেইস বসানোর কাজ করছেন।
ব্যবসায়ী মাইন উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, গত দুই ঈদে ব্যবসা হয়নি। সুদে ২ লাখ টাকা নিয়ে ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছি। গত দুই বছরের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার লড়াইয়ে আছি।
ফারিহা ফ্যাশনের কফিল উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, খলিফাপট্টিতে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষই এসব পোশাকের ক্রেতা। চট্টগ্রামে সবচেয়ে কম দামে এসব পোশাক তৈরি এবং বিক্রি করা হয়। আমাদের এখানে স্বল্প লাভে কাপড় বিক্রি করা হয়। আমরা নিজেরা তৈরি করি, যার কারণে কম দামে বিক্রি করতে পারি। যেকোনো ডিজাইন একবার দেখলেই আমরা অবিকল পোশাক তৈরি করতে পারি। নিজেরাই ডিজাইনার, নিজেরাই কারিগর।
খলিফাপট্টির পোশাক কারখানাগুলোর বিশেষত্ব, কম মূল্যে রুচিশীল পোশাক তৈরি। নূন্যতম ১৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকায় এখানে তৈরি হয় পোশাক। তৈরি পোশাকের মধ্যে রয়েছে বাচ্চাদের স্যুট, শার্ট, প্যান্ট, মেয়েদের ফ্রক, থ্রিপিচ, লেহেঙ্গা ও স্কার্ট।
খলিফাপট্টি বণিক কল্যাণ সমিতির সদস্য মহিউদ্দীন মানিক বাংলানিউজকে বলেন, এখানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১০ হাজার মানুষ জড়িত রয়েছেন। গত দুই ঈদে ব্যবসা ছিল মন্দা। অনেক ব্যবসায়ী অতিরিক্ত সুদে টাকা নিয়ে ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন। সামনে ব্যবসা ভালো হওয়ার আশায় আছি।
খলিফাপট্টি বণিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, ৪৭ এর দেশভাগের পর আইয়ুব আলী সওদাগর নামে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের এক দর্জি নগরের ঘাটফরহাদবেগের এই এলাকায় ব্যবসা শুরু করেন। এরপর ধীরে ধীরে ব্যবসা প্রসারিত হয়ে এলাকাটি পরিচিত হয় খলিফাপট্টি নামে। এখানকার অধিকাংশ ব্যবসায়ী-শ্রমিক নোয়াখালী অঞ্চলের।
বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২২
এমআই/এসি/টিসি