ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামে করোনা: জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আক্রান্ত ডিসেম্বরের ৪ গুণ 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২২
চট্টগ্রামে করোনা: জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আক্রান্ত ডিসেম্বরের ৪ গুণ  ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: নতুন বছরের শুরুতে হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করেছে করোনার সংক্রমণ। গত ডিসেম্বরে করোনা আক্রান্ত ছিল ২৩৫ জন, কিন্তু চলতি মাসের প্রথম ১২ দিনে আক্রান্ত ৯৯৯ জন।

যা গত মাসের সংক্রমণের তুলনায় ৪ গুণ বেশি।  

লাগামহীন সংক্রমণ বাড়লেও সাধারণ মানুষের মধ্যে নেই সচেতনতা।

সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাঠানো গত ডিসেম্বর ও চলতি জানুয়ারি মাসের করোনা শনাক্তের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ১২ দিনে চট্টগ্রামে ৯৯৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে, যা গড়ে ৮৩ জন। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় সংক্রমণের হার ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এই সময়ে ১৯ হাজার ৯৮৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়।  

অন্যদিকে গত ডিসেম্বর মাসের প্রথম ১২ দিনে শনাক্ত হয় মাত্র ৬২ জন, যা গড়ে ৫ জন। এসময় নমুনা পরীক্ষা হয় ১৭ হাজার ৭০৭টি। এছাড়া ডিসেম্বর মাসে নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৪৪ হাজার ১০৬টি এবং মোট করোনা আক্রান্ত ছিল ২৩৫ জন। যা গড় হিসেবে প্রতিদিন মাত্র ৮ জন। সার্বিকভাবে গত মাসে করোনা সংক্রমণের হার ছিল শূন্য শতাংশের নিচে। কিন্তু চলতি জানুয়ারি মাসের প্রথম ১২ দিনে সংক্রমণের হার বেড়ে দাঁড়ায় ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ।  

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ বাড়লেও রোগীর শরীরে তেমন প্রভাব নেই। তবে প্রভাব না থাকলেও মানুষের সচেতন থাকা জরুরি। এর জন্য স্বাস্থ্যবিধিকেই প্রাধান্য দিতে বলছেন তারা।  

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) এর মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. মামুনুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েকমাস করোনা সংক্রমণ কম থাকলেও হঠাৎ করে সংক্রমণ বেড়ে গেছে। ফ্লু-কর্ণারগুলোতে বাড়ছে রোগীর ভিড়, পিসিআর টেস্টেও মিলছে করোনা পজেটিভ রোগী। এমন অবস্থায় আমাদের উচিত আরও সচেতন হওয়া। যত্রতত্র জনসমাগমের ব্যাপারে সচেতন না হলে সংক্রমণের মাত্রা আরও বেড়ে যেতে পারে।  

করোনা নিয়ে গবেষণা করা চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. হামিদুল্লাহ মেহেদি বাংলানিউজকে বলেন, করোনা আবারও বাড়তে শুরু করেছে। কিন্তু হাসপাতালে রোগীর চাপ তেমন একটা বাড়েনি। সাধারণত করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর সিভিয়ার অবস্থায় যেতে একটু সময় লাগে। তাই হয়তো হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা কম। তবে রোগী ভর্তির সংখ্যা দিয়ে করোনার সংক্রমণ বিচার করা যাবে না। নিজ নিজ জায়গা থেকে সকলকে সচেতন হতে হবে।  

তিনি বলেন, জনসমাগম, সামাজিক অনুষ্ঠান, কনসার্ট এসব বন্ধ করা জরুরি। এছাড়া মাস্ক পড়া নিশ্চিত করতে হবে সকলকে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে মানুষের উদাসীনতা বড় ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।

করোনা নিয়ে চট্টগ্রামে প্রস্তুতির বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, সরকার ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। আমরাও মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি। গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচলের বিধি চট্টগ্রামেও চালু হচ্ছে। তবে মানুষ নিজ থেকে যতক্ষণ সচেতন হবেন না, ততক্ষণ সরকার ও স্বাস্থ্যবিভাগের কোনও পদক্ষেপ কাজে আসবে না।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২২
এমআর/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।