চট্টগ্রাম: একাত্তরের মানবতা বিরোধী অপরাধী ও জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করায় ‘আংশিক বিজয়’ অর্জিত হয়েছে বলে মনে করছেন চট্টগ্রাম গণজাগরণ মঞ্চের নেতারা।
একই সঙ্গে সব যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং বাকিদের রায় দ্রুত কার্যপর করতে সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানান তারা।
কাদের মোল্লার রায় কার্যকরের পর শুক্রবার বন্দরনগরীতে গণজাগরণ মঞ্চ আয়োজিত বিজয় মিছিলের পর শহীদ মিনারে এক সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
এর আগে সকালে নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড় থেকে একটি বিজয় মিছিল বের করা হয়।
লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা হাতে মিছিলে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদের সঙ্গে স্বত:স্ফূর্তভাবে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার আবাল বৃদ্ধ-বণিতা অংশ নেন।
এসময় তাদের কণ্ঠে ‘কাদের মোল্লার ফাঁসি হল, জনতার জয় হল’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নাই’, ‘শাহবাগের বিজয় হল, রাজাকারের ফাঁসি হল’-সহ বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দিতে শোনা যায়।
এদিকে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে একাত্তরের শহীদ ও গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান চট্টগ্রাম গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক-কর্মীরা।
কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরকে ‘আংশিক বিজয়’ হিসেবে অভিহিত করে চট্টগ্রাম গণজাগরণ মঞ্চের সমন্বয়কারী শরীফ চৌহান বলেন,‘ দীর্ঘ প্রায় ১০ মাসের আন্দোলন-সংগ্রামের পর এ রায় কার্যকরের মধ্যে দিয়ে ‘আংশিক বিজয়’ অর্জিত হয়েছে। এ বিজয়ে গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। ’
শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন,‘১৯৯২ সালে শহীদ জননী জাহানার ইমামের নেতৃত্বে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল তারই ধারাবাহিকতায় তরুণ প্রজন্মের গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন চলছে। এতে আবার প্রমাণ হয়েছে বাংলার মানুষ আজও হারেনি। ’
বাঙালি কখনও হারে না উল্লেখ করে শরীফ চৌহান বলেন,‘বাংলার মানুষ সবসময় বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ে এবং সর্বশেষ ২০১৩ সালে কাদের মোল্লার ফাঁসির মধ্যে দিয়েও বাঙালি জাতির বিজয় হয়েছে। ’
সমাবেশে গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে সকল মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সব তরুণ শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী, পেশাজীবী, ছাত্র ও নারীদের ধন্যবাদ জানানো হয়।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণজাগরণ মঞ্চ চট্টগ্রামের সদস্য সচিব ও উদীচীর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডা. চন্দন দাশ, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের পূর্বাঞ্চলের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী, নারী নেত্রী রেখা চৌধুরী, উদীচী চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সুনীল ধর, প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের সভাপতি ও সংস্কৃতিকর্মী রাশেদ হাসান, প্রজন্ম একাত্তরের সলিল চৌধুরী, সংস্কৃতিকর্মী শীল দাশগুপ্তা, যুব মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক কায়সার আলম, সংস্কৃতিকর্মী আলাউদ্দিন খোকন, ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি রবিউল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব, ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি আল কাদেরী জয়, ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ফারুক আহমেদ রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ ভৌমিক, সাংবাদিক স্বরূপ ভট্টাচার্য, শিক্ষক সালমা জাহান মিলি, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী তরুণ উদ্যোগের প্রীতম দাশ ও প্রিন্স রুবেল প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৩
এমবিএম/টিসি