ঢাকা, শনিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২, ১০ মে ২০২৫, ১২ জিলকদ ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:১৩, এপ্রিল ২৬, ২০২৫
চট্টগ্রামে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা ...

চট্টগ্রাম: দক্ষিণ চট্টগ্রামের লাখো মানুষ চিকিৎসাসেবা পেতে নির্ভর করেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওপর। ২ হাজার ২০০ শয্যার হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৩ হাজার ৩০০ জন ভর্তি হওয়া রোগীকে সেবা দেওয়া হয়, যা হাসপাতালের শয্যা সক্ষমতার চেয়ে ১ হাজার ১০০ জন বেশি।

এ অবস্থায় চমেক হাসপাতালের ওপর চাপ কমাতে ৫০০ শয্যার আরেকটি হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় ৫০০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে তিনি পটিয়ার কুসুমপুরা ইউনিয়নের খলিল মীর ডিগ্রি কলেজের সামনে হরিণখাইন আইডিয়াল স্কুল সংলগ্ন জায়গা পরিদর্শন করেন। এ সময় হাসপাতাল নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা ও সম্ভাবনা মূল্যায়ন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলেন নূরজাহান বেগম।  

এছাড়া আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা ও অগ্রগতির বিষয়েও দিক নির্দেশনা প্রদান করেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। পাশাপাশি এই স্থানে হাসপাতাল নির্মিত হলে পার্শ্ববর্তী অন্তত তিনটি উপজেলার জনগণ সহ দক্ষিণ চট্টগ্রামে স্বাস্থ্যসেবায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা।

কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান উপদেষ্টাকে জানান, এখানে হাসপাতাল নির্মাণে যে ৫ একর জায়গা প্রয়োজন এর পুরোটাই আমি ব্যক্তিগতভাবে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। হাসপাতালের জন্য ৫ একর জায়গা ছাড়াও আরও যেসব সহযোগিতা দরকার সবগুলোই ব্যবস্থা করা হবে।  এখানে হাসপাতাল নির্মাণ করা হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ১৫ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার দ্বার উন্মুক্ত হবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান, একান্ত সচিব ডা. মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. অং সুই প্রু মারমা, চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রয়া ত্রিপুরা, কর্ণফুলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোছাম্মৎ জেবুন্নেসা প্রমুখ।

এর আগে গত ১৬ মার্চ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম হরিণখাইন এলাকায় আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশের জায়গা পরিদর্শন করেন। এ সময় আইডিয়াল স্কুল ১ একর এবং স্থানীয় ব্যক্তি পর্যায়ে ১ একর জায়গা প্রদানের কথা জানানো হয়। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ হাসপাতালের জন্য খুঁজছিল ১০ একর জায়গা।

স্থানীয়রা জানান, দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা, চন্দনাইশ, বোয়ালখালী, পটিয়া ও কর্ণফুলীসহ কক্সবাজার এবং বান্দরবান জেলার রোগীদের জরুরি স্বাস্থ্যসেবায় ভরসা চমেক হাসপাতাল। সেখানে পৌঁছাতে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। যাতায়াত সময়সাপেক্ষ হওয়ায় মুমূর্ষু রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই অনেক সময় মারা যায়। হাসপাতালটি নির্মাণ হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের লাখো মানুষ স্বাস্থ্যসেবা পাবে।  

এদিকে শনিবার (২৬ এপ্রিল) হাটহাজারী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ফটিকা বিল ও ১ নম্বর ওয়ার্ডের দেওয়াননগর মিঠাছড়া এলাকার সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন করেন নূরজাহান বেগম।

সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সরকারি নির্দেশনা মতে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য ১০ একর জায়গা দরকার। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সম্ভাব্য জায়গা পরিদর্শন করেছেন। সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতেই হাসপাতালটি নির্মাণে আগ্রহী। তাই কাজ দ্রুত শুরু করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এই হাসপাতাল নির্মিত হলে চট্টগ্রামের লাখো মানুষ উন্নত চিকিৎসাসেবা পাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২৫
এমআর/এসি/টিসি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।