ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আদালত

বিদ্যুতের দাম বাড়ানো কেন অবৈধ নয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৯ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৮
বিদ্যুতের দাম বাড়ানো কেন অবৈধ নয়

ঢাকা: গত বছরের ২৩ নভেম্বর পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

রোববার (২৭ মে) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
 
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) পক্ষে আহ্বায়ক স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন এ রিট দায়ের করেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।  
 
চার সপ্তাহের মধ্যে বিইআরসি, বিইআরসি-এর চেয়ারম্যান ও বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সচিবকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
 
পরে ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া বলেন, গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে বিইআরসি গণশুনানি করে। আইন অনুযায়ী শুনানি করার ৯০ দিনের মধ্যে একটি লিখিত আদেশ দেওয়ার কথা। কিন্তু কোনো আদেশ না করে একই বছরের ২৩ নভেম্বর পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এ কারণে বিইআরসি-এর ওই সিদ্ধান্ত আইন অনুযায়ী না হওয়ায় তা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। এরপর আদালত রুল জারি করেন।
 
গত বছরের ২৩ নভেম্বর বিইআরসি সচিব মো. মাহবুবুর রহমান পৃথক বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। একটিতে পাইকারি (বাল্ক)  এবং অপরটি খুচরা মূল্যহার  ডিসেম্বর থেকে পূননির্ধারণের কথা বলা হয়। পরে বিইআরসি-এর এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩ এর ৩৪ (৬) ধারা মোতাবেক বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) বিদ্যুতের পাইকারি (বাল্ক) মূল্যহার প্রায় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধির জন্য কমিশনে আবেদন করে।  

এছাড়া ওই ধারা মোতাবেক বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা হিসেবে বিউবো, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বাপবিবো), ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি), ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো), ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) এবং নর্দান ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো) বিদ্যুতের খুচরা মূল্যহার পরিবর্তন বা সমন্বয়ের জন্য কমিশনের আবেদন করে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কমিশন বিদ্যুৎ সংস্থা ও কোম্পানিগুলোর আবেদনের ওপর গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত গণশুনানি গ্রহণ করে। শুনানি পরবর্তী স্টেকহোল্ডারদের মতামত এবং গণশুনানিতে প্রাপ্ত মতামত ও তথ্য পর্যালোচনা করা হয়।

মূল্যহার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সব শ্রেণির গ্রাহকের স্বার্থ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর আর্থিক প্রভাব, বিত্তহীন ও নিম্নবিত্তসহ সব গ্রাহকের ওপর আর্থিক চাপ হ্রাস, সারাদেশে বিদ্যুতের অভিন্ন মূল্যহার, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং সর্বোপরি দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩ এর ধারা ২২(খ) ও ৩৪ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বিদ্যুতের পাইকারি (বাল্ক) মূল্যহার বৃদ্ধি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা বা কোম্পানিসমূহের নিট বিদ্যুৎ বিতরণ খরচ বৃদ্ধি বিবেচনায় সব বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা বা কোম্পানির বিদ্যুতের খুচরা মূল্যহার গড়ে শূন্য দশমিক ৩৫ টাকা/কি.ও.ঘ. বা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই মূল্যহার ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সচিব মো. মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বিদ্যুতের নূন্যতম
চার্জ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে মোট গ্রাহকের ১৩ শতাংশ অর্থাৎ ৩০ লাখ লাইফ-লাইন গ্রাহকের (০-৫০ ইউনিট) বিদ্যুৎ বিল হ্রাস পাবে। তাছাড়া বাপবিবো-এর প্রায় ৬০ লাখ (মোট গ্রাহকের ২৫ শতাংশ) লাইফ-লাইন গ্রাহকের জন্য খুচরা বিদ্যুৎ মূল্যহার অপরিবর্তিত থাকবে। অর্থাৎ সারাদেশে মোট গ্রাহকের প্রায় ৩৮ শতাংশ গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিল বাড়বে না।

২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিদ্যুতের দাম গড়ে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ বাড়িয়েছিল সরকার। এতে মাসে ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারকারীর খরচ বাড়ে ২০ টাকা, ৬০০ ইউনিটের বেশি ব্যবহারে খরচ বাড়ে কমপক্ষে ৩০ টাকা।

বাংলাদেশ সময়:১২৫৪ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৮/আপডেট: ১৩৩৩ ঘণ্টা
ইএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।