ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

ব্যাংকিং

সাড়ে ২০ হাজার কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৭
সাড়ে ২০ হাজার কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: চলতি ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ২০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বার্ষিক কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ নীতিমালা ও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১৬.২৪ শতাংশ বেশি। 

চলতি অর্থবছরে এই ঋণের সুদহার ১ শতাংশ কমিয়ে ৯ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া, ব্যাংকগুলোর ঋণ লক্ষ্যমাত্রার ১০ শতাংশ প্রাণিসম্পদ খাতে বিতরণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে।

কৃষি ও পল্লী ঋণের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনায় ঘোষিত এ কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ কর্মসূচির আওতায় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকসমূহ পাবে ৯ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ পাবে ১০ হাজার ৮১০ কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচির উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো সংক্ষেপে আলোকপাত করেন।

তিনি জানান, সরকারের কৃষি ও কৃষকবান্ধব নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে টেকসই উন্নয়নের নির্ধারিত লক্ষ্যের প্রথম ও প্রধান তিনটি শর্ত তথা দারিদ্র্য বিমোচন, ক্ষুধামুক্তি এবং সুস্বাস্থ্য অর্জনের নিমিত্তে কৃষি ঋণ সরবরাহের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য এই নীতিমালা ঘোষণা করা হয়েছে।

এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ব্যাংকগুলো প্রায় ৩৯ লাখ কৃষকের মধ্যে ২০ হাজার ৯৯৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ করেছে। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১১৯.৬৫ শতাংশ বেশি। এরমধ্যে ব্যাংকসমূহের নিজস্ব নেটওয়ার্ক ও এমএফআই লিংকেজের মাধ্যমে ১৮ লাখ ৪৭ হাজার ৬৫  জন নারী প্রায় ৬ হাজার ২৪০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন। একই অর্থবছরে ২৯ লাখ ৭৪ হাজার ৪০৭ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ হাজার ৯৩০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা এবং চর, হাওর প্রভৃতি অনগ্রসর এলাকার ৮ হাজার ৭৩১ জন কৃষক প্রায় ৪০ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন।

ডেপুটি গর্ভনর বলেন, পরিবেশবান্ধব ও টেকসই কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলে জনসাধারণের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে উদ্ভূত সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং কৃষকদের নিকট কৃষি ঋণ সহজলভ্য করার লক্ষ্যে বর্তমান নীতিমালা ও কর্মসূচিতে বেশ কিছু যুগোপযোগী বিষয় সংযোজিত হয়েছে।

তিনি জানান, নতুন নীতিমালায় ও কর্মসূচিতে কৃষি খাতের জন্য নির্ধারিত সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৯ শতাংশ নির্ধারণ; ব্যাংকগুলোর বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার ন্যূনতম ১০ শতাংশ প্রাণিসম্পদ খাতে বিতরণের বাধ্যবাধকতা আরোপ; মৎস্য সম্পদ খাতে স্বল্পমেয়াদি ঋণের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ; ক্ষুদ্র, প্রান্তিক কৃষক ও বর্গাচাষিসহ অন্যান্য কৃষকদের সহজ পদ্ধতিতে একক-গ্রুপ ভিত্তিতে কৃষি ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ; কৃষিখাতের অগ্রযাত্রায় যেসব সবজি ও ফসলের উন্নত জাত উদ্ভাবিত হয়েছে সেগুলোর উৎপাদনে ব্যাংক ঋণ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে কাসাভা, ব্রোকলি এবং স্কোয়াসকে ফসলভিত্তিক ঋণ নিয়মাচারে অন্তর্ভুক্তকরণ; ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির নিমিত্তে আলু চাষিদের ফসল উৎপাদনের পর ঋণ পরিশোধের জন্য অতিরিক্ত ৩ মাস গ্রেস পিরিয়ড প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ; অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাত হিসেবে সব প্রকার কৃষি ও পল্লী ঋণে নির্ধারিত সুদ ছাড়া অন্য কোনো প্রকার চার্জ, প্রসেসিং ফি/মনিটরিং ফি ইত্যাদি ধার্য্য না করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৭
এসই/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।