ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

ব্যাংকিং

ফার্স্ট ফাইন্যান্সের মুনাফায় কারসাজি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫১ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৭
ফার্স্ট ফাইন্যান্সের মুনাফায় কারসাজি

ঢাকা: খেলাপি ঋণ ও আয়করের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) না রেখে নীতি বহির্ভুতভাবে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ফাইন্যান্স লিমিটেড। আর মুনাফা পর লভ্যাংশ ঘোষণার খবরে বেড়েছে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম।

জানা গেছে, ১০ শতাংশ খেলাপি ঋণ থাকলেই লভ্যাংশ ঘোষণার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি দরকার। সেখানে ফার্স্ট ফাইন্যান্সের খেলাপি ঋণ রয়েছে ৩৩ শতাংশের বেশি।

তারপর অনুমতি না নিয়েই ২০১৬ সালের জন্য ৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে অনৈতিক ও অপেশাদারী মনোভাবের পরিচায়ক বলে মনে করে বাংলাদেশ ব্যাংক।  

এছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা ও আইন বহির্ভুত কাজে আমানতকারী ও শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ ক্ষুণ্না করা হয়েছে বলে মত দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কোম্পানির নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ’১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বরে শেষ হওয়া আর্থিক বছরে কোম্পানিটি বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রভিশন রাখেনি। ঋণের বিপরীতে কোম্পানিটিকে ৬ কোটি ৭০ লাখ ৮৭ হাজার ৮৬৪ টাকা প্রভিশন রাখতে হতো।  
 
কিন্তু তারা তা রাখেনি। পাশাপাশি কোম্পানিটি দুই কোটি ১৯ লাখ ৬১ হাজার ৯২ টাকার ইনকাম ট্যাক্স প্রভিশনও রাখেনি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, খেলাপি ঋণ ও আয়করের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী যে পরিমাণ প্রভিশন রাখতে হয় তা রাখেনি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের ফার্স্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি।  

এ প্রভিশন রাখলে যেখানে কোম্পানিটি লোকসান করতো। এখন হয়েছে মুনাফা।  

এদিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে থাকা এ কোম্পানিটি লভ্যাংশ ঘোষণা করায় কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, ফার্স্ট ফাইন্যান্স নিম্নমানের ‘জেড’ শ্রেণির কোম্পানি।  

কোম্পানিটি গত এপ্রিলে ৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এরপর থেকে এ শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে।  

এজিএমে ৫ শতাংশ লভ্যাংশ অনুমোদন পেলে কোম্পানিটি ‘বি’ শ্রেণিতে উন্নীত হতো। চলতি বছরের ১৫ জুন বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) হওয়ার কথা থাকলেও এক শেয়ারহোল্ডারের রিটের কারণে তা স্থগিত করেন আদালত। অনিয়মের মাধ্যমে মুনাফা ঘোষণা করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি ওই রিট আবেদন করেন।

প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মুহসীন মিয়া বলেন, ’১১ থেকে ’১৪ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানে কিছু সমস্যা ছিলো। সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। কেন প্রভিশন ছাড়াই লভ্যাংশ ঘোষণা করা হচ্ছে তা উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অনুমোদন চাওয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদন দিয়েছে

তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত একটি প্রতিষ্ঠান ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। ব্যবসার করার জন্য আর্থিক ভিত্তি শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন। ‘জেড’ ক্যাটাগরি থেকে বেরিয়ে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে আসতে ডিভিডেন্ট ঘোষণা করা হয়। প্রতিষ্ঠানটিকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে এ নীতিগত সহায়তা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ২২৫২ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৭
এসই/এএটি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।