ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

ব্যাংকিং

খেলাপি ঋণ নিয়ে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ ব্যাংক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৭
খেলাপি ঋণ নিয়ে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ ব্যাংক অরিয়েন্টেশন কোর্স অন ব্যাংকিং সেক্টর শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা

ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির বলেছেন, ব্যাংকিং খ‍াতের প্রধান সমস্যা বা চ্যালেঞ্জ খেলাপি ঋণের হার। যদিও বর্তমানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ গড়ে ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এরমধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একটি ব্যাংকে এর তিন গুণ আরেকটিতে আড়াই গুণের বেশি।

মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে অরিয়েন্টেশন কোর্স অন ব্যাংকিং সেক্টর শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন গর্ভনর।

ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও বাংলাদেশ ব্যাংক যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।

ফজলে কবির বলেন, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশ এবং আগামী বছরে ৮ শতাংশে পৌঁছানোর জন্য বিশাল কর্মযজ্ঞের আর্থিক যোগান দিতে হবে ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর থেকে। খেলাপি ঋণ এই অবস্থায় থাকলে এটি কঠিন হবে।

গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ৭ মাসে রেমিট্যান্সের প্রবাহ ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ কমে যাওয়ায় উদ্ধেগ প্রকাশ করেন গর্ভনর।

তিনি বলেন, আমরা একটি ডায়াগনস্টিক সার্ভে করছি। আমাদের রিসার্চ টিম দেড় মাস ধরে কাজ করছে। এটি একেবারে সুবিধাভোগী পর্যন্ত কাজ করবে। তারপর মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুটি দেশ, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরে দুটি আলাদা দল গিয়ে রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ব্যক্তি পর্য‍ায়ে সংক্ষিপ্ত পরিদর্শন করে আসবে। তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।

ইতিমধ্যে আমরা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সিস্টেমের উদ্যোগ নিয়েছি, যেহেতু বিদেশে অনেক জায়গা তাদের নাম বলা হচ্ছে। ব্যাংকিং চ্যানেলে বাইরে যাতে টাকা পাঠানো সম্পূর্ণ নিরুৎসাহিত হয় এ লক্ষ্যে যা যা করার করে যাচ্ছি, যোগ করেন গভর্নর।
 
কর্মশালায় সমাপনী অনুষ্ঠানে ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, বিশ্ব মন্দার সময়ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা মজবুত ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের দক্ষ মুদ্রানীতির ফলে দেশের আর্থিক অবস্থা স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হয়েছে।

ডেপুটি গভর্নর বলেন, প্রত্যেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটা সঙ্কটের মধ্যে যায়। সেটা অভ্যন্তরীণ কারণেও হতে পারে আবার বহির্বিশ্বের পরিস্থিতির কারণেও ঘটতে পারে। সে সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারাটাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক সাফল্যের সঙ্গে ভূমিকা পালন করছে।

ইআরএফ সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল বলেন, প্রতিমাসে একবার এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে খুবই ভালো হবে। কারণ গণমাধ্যম অফিসগুলোতে এখন আর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয় না। আগে সিনিয়র সাংবাদিকরা (বজলুর রহমান, আতাউস সামাদ) অফিসে ক্লাস নিতেন। এখন এত বেশি ব্যস্ততা ও কাজের চাপে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সুযোগ হয় না। এখন অর্থনীতি বিটে ভালো পড়ালেখা জানা ছেলে-মেয়েরা কাজ করছে। তাদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নাই। বাংলাদেশ ব্যাংক সেই ব্যবস্থা করেছে। আশা করি, সেটা অব্যাহত থাকবে। গর্ভনর একটি কঠিন সময়ে দায়িত্ব নিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে পরিবর্তন করে গণমাধ্যমে আস্থা ফিরিয়ে এনেছেন।

সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করায় গর্ভনরকে ধন্যবাদ জানান। তিনি ফরেন একচেঞ্জ, ফরেন ট্রেড ও রেমিট্যান্স বিষয়ে আরও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেন।

এধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে ব্যাংকিংখাত ও অর্থনীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদনের মান বাড়বে, ব্যাংকিংখাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, গতিশীলতা বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
 
কর্মশালায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান, সিনিয়র ইকোনমিক অ্যাডভাইজার ফয়সল আহমেদ, মহাব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং অ্যাকাডেমির প্রিন্সিপাল কে এম জামশেদুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৭
এসই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।