ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ব্যাংকিং

গ্রেফতার আতঙ্কে ‘দুর্নীতিবাজ’ ব্যাংকাররা

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০১৬
গ্রেফতার আতঙ্কে ‘দুর্নীতিবাজ’ ব্যাংকাররা

ঢাকা: ঋণ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের হাতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের গ্রেফতারের পর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে অন্য ব্যাংকারদের মধ্যে।

বৃহস্পতিবার (০৬ অক্টোবর) জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক আজমুল হক ও এসএম আবু হেনা মোস্তফা কামাল দুদক দলের হাতে গ্রেফতার হন।

এতে অন্য ব্যাংকারদের মধ্যে আতঙ্ক জড়িয়ে পড়েছে বলেও জানা গেছে।

জানা যায়, এ বছরের ৭ আগস্ট দুদকের হাতে গ্রেফতার হন ইসলামী ব্যাংকের ঢাকা বংশাল শাখার সাবেক ইনভেস্টমেন্ট ইনচার্জ মো. শামছুদ্দিন ও একই শাখার সাবেক এভিপি মো. ইনামুল হক। একই দিন গ্রেফতার করা হয় গ্রামীণ ব্যাংকের চাঁপাইনবাবগঞ্জের চুকিত্তি শাখার সেন্টার ইনচার্জ মো. আব্দুল কাইয়ুমকে।

নিয়ম ভেঙে মুন গ্রুপকে ঋণ দেওয়ার অভিযোগে চলতি বছরের ৩০ জুন রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই গ্রেফতার হন মিজানুর রহমান খান ও আরও দুই কর্মকর্তা ডিজিএম আখতারুল আলম ও এজিএম শফিউল্লাহ।
 
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ছয়মাসে বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের অর্ধশতাধিক বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

ব্যাংকাররা বলছেন, ঋণ-সংক্রান্ত কোনো কাগজে স্বাক্ষরের আগে ভাবতে হচ্ছে কর্মকর্তাদের। কারণ ঋণ না দিয়ে ভালোভাবে চাকরি করাই এখন অনেক প্রশংসার। এতে ঋণ গ্রেফতার আতঙ্কও থাকবে না। পারিবারিক ও সামাজিকভাবে সম্মানহানিও ঘটবে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সভাপতি ও মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিস এ খান বলেন, ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রেফতারের ঘটনায় ব্যাংকিং খাতে এক ধরনের আতঙ্ক কাজ করছে। দুদকের গ্রেফতারের ভয়ে কর্মকর্তারা এখন ঋণ দিতে বিরত থাকার চেষ্টা করবেন।

কর্মরত অবস্থায় গ্রেফতার প্রসঙ্গে এক মহাব্যবস্থাপক বলেন, একজন শাখা ম্যানেজারের ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা থাকে সর্বোচ্চ ৫-৫০ লাখ টাকা। এরপরের সব বিনিয়োগ করে পরিচালনা পর্ষদ। আর শাখার লোকজন চাকরি টিকিয়ে রাখার স্বার্থে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মানতে চান। তবে এখন গ্রেফতার হতে হচ্ছে শাখা ম্যানেজারদের।

তিনি আরও বলেন, দুদক এভাবে গ্রেফতার করলে আমাদের আর কাজ করার কোনো উপায় নেই। কারণ সবারই পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন আছে। তদন্ত শেষ না করে আগেই গ্রেফতারের ফলে সামাজিকভাবেও হেয় হতে হয়।

দুই ডিজিএমের গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিসে গিয়ে দেখা যায়, আতঙ্কগ্রস্ত ও হতাশ কর্মকর্তাদের কেউ কথা বলতেও রাজি হননি।

যোগাযোগ করা হলেও কথা বলতে রাজি হননি জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আবদুস সালামও।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেন, দুদক সবসময় নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করে। এতে সৎ অফিসারদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৩৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৬
এসই/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।