ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

আ’লীগের জাতীয় সম্মেলন: সিলেটে যাদের ঘিরে আলোচনা

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯
আ’লীগের জাতীয় সম্মেলন: সিলেটে যাদের ঘিরে আলোচনা আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে সিলেট থেকে আলোচনায় থাকা নেতারা, ফাইল ফটো

সিলেট: নীরব নেতাকর্মীরা। সম্মেলনকে ঘিরে কারো কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। আছে কেবল গুঞ্জন আর প্রত্যাশা। কারা মূল্যায়িত হচ্ছেন কেন্দ্রে, বাদ পড়ছেন কারা? সে আলোচনা আপাতত বাদ। এখন কেবল অপেক্ষার পালা। সাধারণ মানুষ থেকে নেতাকর্মী, সবার দৃষ্টি জাতীয় সম্মেলনে।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) দুই দিনব্যাপী আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন শুরু। এরইমধ্যে সিলেটের নেতাকর্মী, কাউন্সিলররা অবস্থান করছেন রাজধানীতে।

ঢাকায় অবস্থান করা সিলেট আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, কেন্দ্রে সিলেটের নেতাদের মধ্যে আবারও উপদেষ্টা পরিষদে মূল্যায়িত হতে পারেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে রাখা হতে পারে স্বপদে এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পদে হ্যাটট্রিকম্যান খ্যাত মিসবাহ উদ্দিন সিরাজকে দলের যুগ্ম সম্পাদক পদে নেওয়া হতে পারে।

এছাড়া সিলেট থেকে সদস্য পদে বহাল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে সাবেক সিটি মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান ও মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুর রহমান।

অবশ্য সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থেকে বাদ পড়া সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক থেকে বাদ পড়া আসাদ উদ্দিন আহমদের নাম স্থানীয়ভাবে আলোচনায় আসলেও কেন্দ্রে তাদের ঠাঁই হচ্ছে না, এমনটিই জানিয়েছে দলের একাধিক সূত্র।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের একজন বলেন, এক জায়গায় বাদ দেওয়া হয়েছে, তা নিশ্চয়ই বড় দ্বায়িত্বের জন্য নয়?

মৌলভীবাজার থেকে দলছুট ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর সম্মেলনে দাওয়াত পেলেও দলে ফেরার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন, তিনি তো সংসদ সদস্য হিসেবে সম্মেলনে দাওয়াত পেয়েছেন, দলে ভেড়ানোর জন্য নয়। এ ব্যাপারে জানতে সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

সুনামগঞ্জ থেকে কার্যনির্বাহী কমিটিতে ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। মন্ত্রিত্ব থাকায় কেন্দ্রে পদ পাওয়া নিয়ে আলোচনার বাইরে তিনি। এ জেলার প্রয়াত বর্ষিয়ান আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদের ছেলে আজিজুস সামাদ ডন ও সুনামগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমনের নাম ওঠে আসলেও কেন্দ্রে তাদের সুযোগ পাওয়া দুষ্কর মনে করছেন নেতারা।

অবশ্য হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. মুশফিক হুসেন চৌধুরীর নাম রয়েছে আলোচনায়। সিলেট বিভাগ থেকে একমাত্র তাকে নতুন মুখ হিসেবে কেন্দ্রে দেখা যেতে পারে, এমনটি ধারণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রের এক নেতা।

নেতাদের ক’জন জানান, সিলেট থেকে আলোচনায় থাকা নুরুল ইসলাম নাহিদ মন্ত্রিত্ব হারানোয় পুনরায় মূল্যায়িত হতে পারেন। তবে তৃণমূলে তাকে নিয়ে বিভেদ এবং মন্ত্রী থাকা অবস্থায় তার নিকটাত্মীয় ও আস্থাভাজনদের অনিয়মে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি হারিয়েছেন। এ কারণে নীতিনির্ধারণী পদে তার থাকা বা না থাকা নেত্রীর ওপর নির্ভর করছে বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা।

এছাড়া ৭৫ পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যার নেপথ্যে থাকা খন্দকার মোশতাককে সিলেটে জুতাপেটা করে কারাভোগ করা মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ আছেন আলোচনায়। যে কারণে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সুদৃষ্টিতে থাকা এ নেতাকে ২০০৯ সাল থেকে পরপর তিনবার কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রাখা হয়। এবার তাকে কেন্দ্রে যুগ্ম সম্পাদক পদে নেওয়া হতে পারে, এমন ধারণা নেতাকর্মীর।

এ বিষয়ে মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বাংলানিউজকে বলেন, নেত্রী আমাকে পছন্দ করে তিনবার সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রেখেছেন। এরচেয়ে বড় পাওয়া কী হতে পারে। এবারও মূল্যায়ন নেত্রীর ওপর নির্ভর করছে।

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের নতুন সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন খান বাংলানিউজকে বলেন, কারা কেন্দ্রে আসছেন, তা নির্ভর করছে নেত্রীর ওপর। নেত্রী ছাড়া এ খবর কারো বলার সাধ্য নেই।

কেন্দ্রে স্থান পাওয়া, না পাওয়ার বিষয়ে বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের সঙ্গে আলাপ হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। বলেছেন, নেত্রীর সিদ্ধান্তের ওপর সবকিছু নির্ভর করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯
এনইউ/এবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।