ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

রাজশাহীর ৬ আসন উপহার চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৮
রাজশাহীর ৬ আসন উপহার চাইলেন প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজশাহীর ছয় আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী

রাজশাহী: সিটি নির্বাচনে এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনকে মেয়র নির্বাচিত করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহী মহানগরবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেভাবে আপনারা আমাদেরকে মেয়র উপহার দিয়েছেন, ঠিক সেইভাবেই রাজশাহীর ছয়টি আসনে নৌকায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন।

বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজশাহীর ছয় আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহীবাসীর প্রতি এ আহ্বান জানান।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে সংযুক্ত হন।

এখানে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীসহ জেলার ৯ উপজেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ভিডিও কনফারেন্সের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন।

তিনি বলেন, ২০০৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে আমরা জনগণের সেবা করে যাচ্ছি। গত নির্বাচনেও আমরা দেখেছি বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচন ঠেকানোর জন্য অগ্নিসংযোগ শুরু করে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সাধারণ মানুষকে রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে মারে। মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করার মতো জঘন্য ঘটনা তারা ঘটিয়েছিল নির্বাচন ঠেকানোর জন্য। ৫৮২টি স্কুল তারা পুড়িয়ে দেয়, ৭০ সরকারি অফিস পোড়ায়, ছয়টা ভূমি অফিস পোড়ায়। এভাবে তারা সরকারি সম্পাদ পুড়িয়ে ধ্বংস করে। মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে তারা অট্টহাসি হাসে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই রাজশাহীতে তারা বাংলা ভাই সৃষ্টি করে, মদদ দিয়ে প্রকাশ্যে মিছিল করার সুযোগ করে দেয় বিএনপি-জামায়াত জোট। তারা জঙ্গিদের ব্যবহার করে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে তারা হত্যা করেছে। একের পর এক বোমা হামলা চালিয়েছে। তাদের এসব অপকর্মের জবাব দিয়ে জনগণ ২০১৪ সালের নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছে। তাই জনগণের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই, আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, গত নির্বাচনে আমরা নির্বাচনী ইশতেহারে যে সমস্ত ঘোষণা দিয়েছিলাম একে একে সবগুলো বাস্তবায়ন করেছি। আওয়ামী লীগ নির্বাচনি ইশতেহারটা কখনও ভুলে যায় না। সেটা সাথেই থাকে। প্রতি বছর আমরা যখন বাজেট দেই তখন ইশতেহার অনুযায়ী জনগণের প্রত্যাশা করি। ক্ষেত্রবিশেষে আমরা তার চেয়েও অনেক বেশি কাজ করেছি। প্রায় ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আমরা ৯৩ ভাগ মানুষের বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। আগামীতে সরকার আসতে পারলে প্রত্যেকটা ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আলো পৌঁছাবে। প্রত্যেকটা ঘর আলোকিত হবে।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতি উপজেলায় আমরা মসজিদ করে দিচ্ছি। ৫৬০টা মসজিদ আমরা তৈরি করব এবং ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে। পাশাপাশি প্রতিটি উপজেলায় একটা করে মিনি স্টেডিয়াম হবে। কয়েকটির কাজ শুরু হয়েছে, যাতে ছেলেমেয়েরা খেলাধুলার প্রতি মনোযোগী হয়।

রাজশাহী অঞ্চলে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর্মসংস্থান যেন বৃদ্ধি পায়, ব্যবসা-বাণিজ্য যেন উন্নত হয় সেদিকে আমরা দৃষ্টি দিচ্ছি। পদ্মা নদীর ভাঙন থেকে রাজশাহী শহর রক্ষা করার উদ্যোগ নিয়েছি। সেখানে সুপেয় পানির ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। আলাদা রাস্তা করে দিয়েছি যেন যোগাযোগ সহজ হয়। এভাবে বহুমুখী উন্নয়ন পরিকল্পনা আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। কারণ, আমরা ক্ষমতায় এলে সকল এলাকার মানুষ যেন উন্নয়ন পায় সে পদক্ষেপ আমরা নিয়ে থাকি।

তাই আসন্ন নির্বাচনে নৌকায় ভোট চেয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমরা ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করব। ২০২১ সালে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। অর্থাৎ ২০২০ এর মার্চ মাস থেকে ২০২১ এর মার্চ মাস, আমরা এই বর্ষটাকে ‘মুজিব বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি। আমরা যেন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করতে পারি সেই সুযোগটা আমরা চাই এবং তার জন্যই নৌকা মার্কায় ভোট চাই।

প্রধানমন্ত্রী প্রথমেই রাজশাহী সিটি মেয়র ও মাদ্রাসা ময়দানের সমাবেশের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সঙ্গে কথা বলেন।  

লিটন বলেন, আজকে সর্বত্রই সর্বকাজে অনেক দ্রুতই উন্নত বিশ্বের কাতারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। আমাদের রাজশাহী কৃষিপ্রধান এলাকা। এখানে উত্তর রাজশাহী সেচপ্রকল্প, এখানে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, এখানে একটি বিমানবন্দর, সেটি আন্তর্জাতিকমানের করা, রাজশাহী-ঢাকা বিরতিহীন ট্রেন-এটি খুবই জনপ্রিয় দাবি। পদ্মা নদীর ক্যাপিটাল ড্রেজিং আপনি করছেন, কাজ শুরু হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক, খুব চমৎকারভাবে কাজ চলছে। নতুন বিসিক ও চামড়া শিল্প এলাকা হচ্ছে। এরপর গোদাগাড়ীতে একটি ভেটেরিনারি কলেজ এবং পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় হলে আমরা অনেকদূর এগিয়ে যাব।

এ সময় রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ডা. মনসুর রহমান ও রাজশাহী-৬ আসনের সংসদ সদস্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৮
এসএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।