ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

ডলার ঢেলেও আন্তর্জাতিক সমর্থন পাচ্ছে না বিএনপি: কাদের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১৮
ডলার ঢেলেও আন্তর্জাতিক সমর্থন পাচ্ছে না বিএনপি: কাদের বক্তব্য রাখছেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বিএনপি লাখ লাখ ডলার খরচ করেও আন্তর্জাতিক সমর্থন পাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শনিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ১১টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি লবিস্ট নিয়োগ দিয়ে লাখ লাখ ডলার খরচ করেও আন্তর্জাতিক সমর্থন পাচ্ছে না।

তারা গণতান্ত্রিক বিশ্বের কাছে বন্ধুহীন হয়ে পড়েছে। তবে শুধুমাত্র পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের বন্ধুত্ব অটুট রয়েছে। তারা বুঝে গেছে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারবে না। এজন্য তারা বাগযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।

বিএনপির প্রতি উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) এখনও নির্বাচন বানচাল করা থেকে পিছু হটেনি। আমরা আশঙ্কা করছি- তারা নাশকতার, সহিংসতার পথে যেতে পারে। তারা বড় গলায় যা যা বলেছিল, একমাসের মধ্যে চেহারা পাল্টাবে। কোথায় পাল্টালো?

‘তারা বুঝে গেছে এই নির্বাচনে তাদের জয়ের কোনো আশা নেই। তাদের এখন কথা ছাড়া কোনো পুঁজিও নেই। তবে তারা যদি নাশকতা করে, এবার দেশের জনগণই প্রতিরোধ করবে। বিএনপি মনে মনে কলা খেতে পারে কিন্তু এবার ভোট বিপ্লব হবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিরুদ্ধে। ’

ওবায়দুল কাদের আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন- বিএনপির এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের গুণধর ব্যারিস্টার (ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ) সাহেব আগের দিন কমিশনে অভিযোগ জমা দিয়েছেন। আপনার সঙ্গে লোক আসে না সেখানে আমাদের কি করার আছে।

‘কয়েক দিন ধরে চেষ্টা করে উনি (ব্যারিস্টার মওদুদ) তো ৮/১০ হাজার শো ডাউন করেছেন লাঠিসোটা নিয়ে। আমি কাউকে বলিনি শো ডাউন করার জন্য। আমি ২০০ গজের মধ্যে কাউকে যেতে দিইনি। শুধুমাত্র দলের ৮/১০ জন নেতা নিয়ে গেছি। ২৬ নভেম্বর লাঠিসোটা নিয়ে মওদুদ সাহেব যে শো ডাউন করলেন তাতে কী আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়নি?,’ প্রশ্ন করেন ওবায়দুল কাদের।

জামায়াত, ছাত্রশিবির ও হেফাজতে ইসলাম বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের প্রস্তাব সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামায়াত ও বিএনপির নীতি আদর্শ একই। আগে মনে হতো স্ট্র্যাটেজিক বিষয়ে তারা একে অপরের সঙ্গে আছে। যেমন জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমরা আছি। কিন্তু তাদের (জামায়াত ওবিএনপি) সম্পর্ক একেবারেই আদর্শিক। তাদের আদর্শ ও কর্মকাণ্ডও একই।

‘বিএনপির সভা-সমাবেশে মূল অংশই জামায়াত, এটা দৃশ্যমান। তবে নিষিদ্ধ করার বিষয় আদালতের এখতিয়ারে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা আমাদের এখতিয়ার না, আদালতের বিষয়। নির্বাচনের আছে আর ২৮ দিন এখন সরকারের কোনো বিষয় নেই। নিশ্চয়ই বিষয়টি আদালতেরও দৃষ্টিগোচরেও গেছে। ’

কাদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যে গণতন্ত্রের হাউস অব কমন্স, কংগ্রেসে তারা যেসব আলোচনা করেন, এখানে নানা বিষয় আসে। সেখান থেকে একটা বিষয় নিয়ে স্বার্থের অনুকূলের অংশ নিয়ে ব্যবহার করে। হয়তো টোটাল প্রতিবেদন এক রকম। সেখান থেকে কোনো একটা অংশ নিয়ে কেউ কেউ রাজনৈতিক স্বার্থে নির্বাচনের ওপর প্রভাব বিস্তারে এসব করে থাকে। নির্বাচন আসলে এগুলো বেশি হয়। এটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমাদের পক্ষে বললেও আমরা সেটাকে এভাবে দেখবো না।   আমাদের কনফিডেন্স আছে, বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিবে। মানুষ আজকে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। বিজয়ের মাসে আওয়ামী লীগেরই বিজয় হবে।

ভোট প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, যারা উদ্বিগ্ন হচ্ছেন, দেশি-বিদেশি সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, এবারের নির্বাচন খুব সুন্দর হবে। অনুকূল পরিবেশে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে। জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দিতে পারবেন। এখানে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ হবে না। নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন কতৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সব ধরনের সহায়তা সরকার করবে। নির্বাচনের পরিবেশ শুরুতেই বিএনপি নষ্ট করেছে। কিন্তু এখন আর সেই অবস্থা নেই। সেই অবস্থা কাটিয়ে এখন সুন্দর একটা পরিবেশ বিরাজ করছে।

‘বিএনপি শঙ্কা করবে, এটা তাদের পুরানো অভ্যাস। ভোটগ্রহণ পর্যন্ত তারা এটা বলতে থাকবে,’ যোগ করেন কাদের।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা (বিএনপি) এক এক দেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনবে,  সব অগণতান্ত্রিক কাজ করবে আর তাদের সব কথা শুনবে এটা তো হয় না। মার্কিনিরা কি আমাদের কথায় চলে?  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কার পক্ষে থাকবে এটা তাদের ব্যাপার। এতো দেন দরবার করে সাড়া পাচ্ছেন না কেন?

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজ্জামেল হক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, উপ দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৮/আপডেট: ১৬২১
এসকে/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।