ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

‘যুদ্ধাপরাধীদের হাতে পতাকা, খালেদাকে ধিক্কার’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০১৮
‘যুদ্ধাপরাধীদের হাতে পতাকা, খালেদাকে ধিক্কার’ চাঁদপুর স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দিচ্ছেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

চাঁদপুর স্টেডিয়াম থেকে: স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়ে তাদের হাতে দেশের পতাকা তুলে দেওয়ায় বিএনপি চেয়ারপরসন খালেদা জিয়াকে ধিক্কার জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

রোববার (১ এপ্রিল) বিকেলে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এ ধিক্কার জানান। সভাস্থলে প্রধানমন্ত্রী চাঁদপুরের ৪৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ধিক্কার জানাই বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে, যারা ওই স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধীদের হাতে তুলে দিয়েছিল এদেশের পতাকা। অবশ্য তাদের লজ্জা-শরম কম, তারা নিজেরাইতো বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। ’ 

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নয়ন হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সেবা করার সুযোগ পেয়েছি, জনগণের সেবা করছি। নৌকায় ভোট দিলে কেউ খালি হাতে ফেরে না। বাঙালি মাতৃভাষার অধিকার পেয়েছে, স্বাধীনতা পেয়েছে। আওয়ামী লীগ দেশ গড়ে তোলে, উন্নয়ন করে। কিন্তু তারা ধ্বংস করে, লুটে খায়। সন্ত্রাস, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলায় তারা পারদর্শী। তারা মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে। ’

‘পঁচাত্তরের পর যারাই ক্ষমতায় এসেছিল, কেউ-ই উন্নয়ন করেনি। নিজেরা লুটপাট করেছে, চুরি করেছে, দুর্নীতি করেছে। এবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মামলায় কারাগারে (বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া) সাজা খাটছেন। ’

সার্বিকভাবে দেশের উন্নয়নে সরকারের কর্মসূচি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য স্বাধীনতার সুফল বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছানো। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আমরা শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দিচ্ছি, নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য শিক্ষার্থীদের বৃত্তি, এমনকি উচ্চশিক্ষায়ও বৃত্তি দিচ্ছি। মায়েদের মোবাইল ফোনে বৃত্তির টাকা পৌঁছে যাচ্ছে। ’

সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজ মোবাইল ফোন সবার হাতে হাতে। আওয়ামী লীগই সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোন তুলে দিয়েছে। এখন প্রবাসে আত্মীয়-স্বজন ছাড়াও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন সবাই। কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেছি। এখন আমরা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করবো, জেলায় জেলায় আইটি পার্ক হবে। সেখানে কর্মসংস্থানও হবে। ’

দারিদ্র্য বিমোচন সরকারের লক্ষ্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতার ব্যবস্থা করেছি। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বাড়িয়েছি। গ্রামের মানুষের উন্নয়নে কর্মসংস্থান ব্যাংক করে দিয়েছি, যেন বিনা জামানতে ‍ঋণ নেওয়া যায়। স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন করেছি। কমিউনিটি ক্লিনিক করেছি, সেখান থেকে মানুষ ৩০ প্রকারের ওষুধ পাচ্ছে। নদীভাঙনে যারা ঘর হারিয়েছেন, তাদের ঘর করে দিয়েছি। কেউ গৃহহারা থাকবে না। জাতির পিতা গুচ্ছগ্রাম করেছিলেন, আমরা তা করে দিচ্ছি তার পথ অনুসরণ করে। আমি চাই না ভিক্ষুক থাকুক। কারও কাছে হাত পেতে নয়, বাঙালি বিজয়ী জাতি হিসেবে চলবে মাথা উঁচু করে। ’

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয় এবং দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ায়। এটিই আওমী লীগের আদর্শ। আমরা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক করে দিয়েছি। যেন কেউ বিদেশে গেলে ঘর-বাড়ি ও জমি বন্দক ও বিক্রি করে যেতে না হয়। যেন ওই ব্যাংক থেকেই ঋণ নিয়ে বিদেশে যেতে পারে। আমরা গত এক বছরে বিদেশে ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছি। একইসঙ্গে দেশে দেড় কোটি লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছি তখন বিদ্যুতের জন্য জনগণের হাহাকার ছিলো। এখন দেশে ১৭ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।  

২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে হারিয়ে দিতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তখন আমি আমার দেশের সম্পদ গ্যাস বেচতে রাজি হইনি বলে ক্ষমতায় আসতে দেয়নি। আর খালেদা জিয়া দেশের সম্পদ বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসে।

সন্তানেরা যেন বিপথে না যায়, সেজন্য অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ যেন জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসে জড়িয়ে না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।  

ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাই সরকারের লক্ষ্য উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাঁদপুরে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করে দেবো, নদীবন্দর করে দেওয়া হবে। ২০২০ সালে আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করবো, ২০২১ সালে এ দেশকে আমরা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। আর ২০৪১ সালের মধ্যে গড়ে তুলবো উন্নত-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলা। এজন্য সরকারের ধারাবাহিকতা জরুরি। যারা যুদ্ধাপরাধীদের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিল এবং সংসদে বসিয়েছিল তাদের হাতে দেশ নিরাপদ নয়। তাই নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন।  

এসময় প্রধানমন্ত্রী জনসভায় উপস্থিত নেতা-কর্মী-সমর্থকদের কাছে আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার অঙ্গীকার চান। উপস্থিত জনতাও হাত তুলে নৌকায় ভোট দেওয়ার অঙ্গীকার করেন শেখ হাসিনার কাছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১৮
এমএ/এইচএ/

** আ’লীগ এলে উন্নয়ন হয়, বিএনপি-জামায়াত লুটে খায়
** শৈশব থেকেই জনসেবার চর্চা করতে হবে
** চাঁদপুরে ৪৮ প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad