ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

আমি নৌকায় ভোট চাইতেই পারি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৮
আমি নৌকায় ভোট চাইতেই পারি

ঢাকা: আগুন দিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারা আর সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করাই বিএনপি-জামায়াতের চরিত্র বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (৩১ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভার শুরুতে বক্তৃতাকালে এ মন্তব্য করেন। শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে বৈঠকটি শুরু হয়।

বাংলাদেশ সম্প্রতি স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করায় সভার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ক্ষমতায় এসে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করি। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকায় আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।

সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত শুধু মানুষ পুড়িয়ে পুড়িয়ে মারে আর সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে। এটাই তাদের চরিত্র। আমরা যে উন্নয়ন করেছি, তা মানুষের মাঝে তুলে ধরতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী পদে থাকাবস্থায় আওয়ামী লীগের জনসভায় তার নৌকা প্রতীকে ভোট চাওয়ার বিষয়ে বিএনপির সমালোচনার জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমি তো নৌকায় ভোট চাইতেই পারি, কারণ আমি দলের সভানেত্রী, আমি যেখানে যাবো, সেখানেই ভোট চাইবো।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের নেত্রী হিসেবে নৌকায় ভোট চাওয়া আমার রাজনৈতিক অধিকার। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে অবশ্যই আমাদের সবাইকে জনগণের কাছে যেতে হবে। নৌকায় ভোট চাইতে হবে। সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরতে হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে একমাত্র নৌকায় ভোট দিলেই তাদের উন্নতি হবে। দেশের উন্নয়ন করার সুযোগ চাই।  

‘স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছরে দেশকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেছিলেন। এতো অল্প সময়ে তিনি এটা করতে পেরেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর যারা ক্ষমতায় এসেছিলো, তারা দেশকে পিছিয়ে দেয়। জিয়া (বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান) অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে খুনিদের, স্বাধীনতাবিরোধীদের, যুদ্ধাপরাধীদের পুরস্কৃত করেছিল, ক্ষমতায় বসিয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রী বানিয়েছিলো। স্বাধীনতাবিরোধীদের হাতের পতাকা তুলে দিয়েছিল। এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছিল (হুসেইন মুহম্মদ) এরশাদ-খালেদা জিয়া। তারা চায়নি দেশ এগিয়ে যাক, শিক্ষা-দীক্ষায় উন্নত হোক। দুর্নীতি ছিলো তাদের নীতি। তারা নিজেদের ভাগ্য গড়েছে। নিজেদের আখের গোছাতে ক্ষমতায় এসেছে। তারা চাইলে দেশ অনেক আগেই উন্নত হতো। ’

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়নে কাজ শুরু করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে আমরা ক্ষমতায় এসে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ শুরু করি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসার কারণে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়েছিলো, সেজন্য আজ দেশে উন্নতি চলছে, উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে যে উপাত্তগুলোর প্রয়োজন ছিল, তার প্রত্যেকটিই আমাদের অর্জন হয়েছে। তাদের যে চাহিদা ছিলো, তার থেকে বেশি অর্জিত হয়েছে। এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। অর্জনের সম্মান ধরে রাখতে হবে।  

‘আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াবো। এটাই আমাদের নীতি, আমাদের সিদ্ধান্ত। অন্যের মুখাপেক্ষী না হলে দেশ নিজেদের সম্পদেই উন্নত হবে। মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে নিজেদের চিন্তা করতে হলে নিজেদের সম্পদ দিয়েই উন্নতি করতে হবে। আমরা উন্নয়ন সহযোগীদের থেকে কিছু সহযোগিতা নেবো, বিদেশি বিনিয়োগ আনবো, এই বিনিয়োগ আমাদের প্রয়োজন। কিন্তু সেইসঙ্গে নিজেদের সম্পদ থাকতে হবে, যেন কারও মুখাপেক্ষী না হতে হয়। কারও কাছে যেন ছোট হয়ে চলতে না হয়। ’

সরকারের উন্নয়ন অনেকের কাছে ভালো লাগে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা জানি আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলার লোকের অভাব নেই। প্রতিনিয়ত বলেই যাচ্ছে। কেউ কেউ উন্নয়ন চোখেই দেখে না। সেদিকে আমাদের নজর দেওয়ার দরকারই নেই। যারা বলার তারা বলে যাক। আমরা দেশকে ভালোবাসি, দেশের মানুষকে ভালোবাসি। তাদের উন্নয়নে কাজ করি।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি, ২০২০ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী আমরা পালন করবো ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে উন্নীত হতে পারবো।   

এ সময় তিনি রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, মানবতার কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। আশা করি মিয়ানমার তাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। এজন্য মিয়ানমারের সঙ্গে সমঝোতাও হয়েছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় আন্তর্জাতিক বিশ্ব আমাদের প্রশংসা করেছে। সারাবিশ্ব এখন বাংলাদেশের সঙ্গে। এটা আমাদের একটি বড় অর্জন। রোহিঙ্গাদের থাকার জন্য ভাসান চরে ঘর বাড়ি, আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৮
এসকে/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।