ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

বিএনপি না এলেও নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৮
বিএনপি না এলেও নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে

ঢাকা: আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও তা অংশগ্রহণমূলক হবে বলে দাবি করছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। বিএনপিকে ছাড়াই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ক্ষমতাসীন এ দলটি।

বিএনপি ছাড়া নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা সিইসির নিজের মত বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ। বিএনপির ইচ্ছা অনুযায়ী নয়, সংবিধান মতে নির্বাচনের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ অনড় থাকবে বলে দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান।



সিইসি কে এম নুরুল হুদা শুক্রবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিএনপি ছাড়া নির্বাচন হয় কী করে? কখনই না। অবশ্যই রাজনৈতিক অঙ্গণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে বিএনপি। তাদের ছাড়া অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না। এটা আগেও বলেছি, এখনও বলছি।

সিইসির এমন বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে তারা জানান, কোনো বিশেষ দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলো কি করলো না তার উপর নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক বা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে কি হবে না তা নির্ভর করে না। কোনো বিশেষ দল অংশ না নিলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না এটা সংবিধানে বলা নেই। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করার জন্য বিএনপির নির্বাচনে আনতেই হবে, এই শর্ত দেওয়ার পেছনে কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে বলেও তারা অভিযোগ করেন।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের ওই নেতারা বলেন, বিএনপির ইচ্ছা অনুযায়ী নির্বাচন হতে পারে না বা নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হবে সংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী। বাংলাদেশের সংবিধানে যেটা আছে গণতান্ত্রিক বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংবিধানেও সেটা আছে। সেই নিয়ম মতে নির্বাচন হবে। এটাই আওয়ামী লীগের অবস্থান।
  
আওয়ামী লীগ নেতারা আরও জানান, বিএনপি যে দাবি করছে সেটা সংবিধানের বাইরে। সেটা মেনে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। সেই সরকারের প্রধান থাকবেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা। এ অবস্থান থেকে আওয়ামী লীগ সরবে না বা কোনো ছাড় দেবে না। এই সাংবিধানিক নির্দেশনা মেনে নিয়েই বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে। বিএনপি না এলে তাদের ছাড়াই নির্বাচন হবে।
 
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলির সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, এটা সিইসির কথা, আওয়ামী লীগের কথা না। বিএনপি অংশগ্রহণ করুক আর না করুক নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে। অংশগ্রহণমূলক মানে এই নয় যে একশ’ ভাগ দল নির্বাচনে নিতে হবে। এর মানে অধিকাংশ দল অংশ নেওয়া। কোনো বিশেষ দল বা বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে সেটা তাদের ইচ্ছা। নির্বাচন সংবিধানের আলোকে হবে। বিএনপি বার বার বলছে সংবিধানে বাইরে গিয়ে কিছু করা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সহায়ক সরকার এ সবই সংবিধান সম্মত নয়।  

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ বাংলানিউজকে বলেন, সিইসি বলেছেন তার দৃষ্টিকোণ থেকে। আমরাও তো চাই সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিক। নির্বাচনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব। কেউ যদি অংশ না নেয় সেটা তাদের ব্যাপার।
 
আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মনে করি যে সব নিবন্ধিত দল আছে তারা নির্বাচনে অংশ নেবে। কিন্তু নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করার শর্ত হিসেবে কেউ যদি বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে অংশ নেওয়া অপরিহার্য করে তুলতে চায় তাহলে বুঝতে হবে এটা উদ্দেশ্যমূলক। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের অর্থই হলো একাধিক রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। এটাই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। বিএনপি বা কোনো দল নির্বাচনে অংশ না নিলে সেটা অংশগ্রহমূলক হবে না এ ধরনের চিন্তা অমূলক।  

বাংলাদেশ সময়: ০০১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৮ 
এসকে/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।