ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

সিপিডি আর বিএনপির পার্থক্য দেখছেন না তোফায়েল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৮
সিপিডি আর বিএনপির পার্থক্য দেখছেন না তোফায়েল বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ (ফাইল ফটো)

ঢাকা: বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) দেশবাসীকে হতবাক করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। 

রোববার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। এর আগে ঢাকায় নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত শারলোত্তা স্কলাইটার তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, যদি সিপিডির প্রকাশিত গবেষণা রিপোর্ট সঠিক হয়, তা হবে দুঃজনক। সিপিডি দেশের উন্নয়ন খুঁজে পায় না। উন্নয়নের সব শর্ত পূরণ করে বাংলাদেশ যখন এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে (আগামী মার্চ মাসে), তখন সিপিডি দেশের উন্নয়নের সমালোচনা করছে।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০১৭-১৮: প্রথম অন্তর্বর্তীকালীন পর্যালোচনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সিডিপি দাবি করে, প্রবৃদ্ধির ‘গুণগত মানের অভাবে’ ধনী-গরিবের সম্পদ বৈষম্য আরও বেড়েছে। কমেছে দারিদ্র্য হ্রাসের হার। সিপিডি দাবি করে, ‘২০১৭ সাল ছিল ব্যাংক খাতের কেলেঙ্কারির বছর। ’

এই পর্যবেক্ষণের জবাবে তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিশ্বব্যাংকসহ দেশি-বিদেশি বিশ্বখ্যাত বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ, অর্থনৈতিক গবেষক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করছে। অথচ সিপিডি উন্নয়ন দেখতে পায় না।

‘২০০৬ সালে দেশের দরিদ্র মানুষ ছিল ৪৩ শতাংশ, আজ তা কমে ২২ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে এসেছে। দেশে হতদরিদ্র মানুষের হার ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে ১১ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) সফল বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ২০৩০ সালে দেশে হতদরিদ্র মানুষের হার ৩ শতাংশের নিচে নেমে আসবে। ’

তিনি বলেন, সরকার দেশের দারিদ্র্য দূর করতে দীর্ঘমেয়াদী সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করেছে। ২০৩০ সালে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের মধ্যে ২৮তম এবং ২০৫০ সালে ২৩তম অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশ। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে বাংলাদেশ এলডিসি দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সফল হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে দেশের রপ্তানি আয় ছিল ১০ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। বর্তমানে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি, রেমিট্যান্স আসছে প্রায় ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সিপিডি সেখানে বাংলাদেশের উন্নয়ন খুঁজে পাচ্ছে না।

সিপিডির গবেষণাপত্রের সমালোচনা করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, এ রিপোর্ট প্রকাশের মাধ্যমে সিপিডি বিরোধী দলের হাতে অস্ত্র তুলে দিলো। যারা এক সময় বাংলাদেশকে বলতো তলাবিহীন ঝুড়ি এবং বিশ্বে দরিদ্র দেশের রোল মডেল, আজ তারাই বলছে বাংলাদেশের উন্নয়ন বিস্ময়কর। সেখানে সিপিডি বাংলাদেশের উন্নয়ন খুঁজে পায় না।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এ প্রবীণ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩ হাজার মেগাওয়াট থেকে বাড়িয়ে ১৬ হাজার ৪৩ মেগাওয়াট করেছে। দেশের ৮৩ ভাগ মানুষ এখন বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন ১ হাজার ৬১০ মার্কিন ডলার, দেশের মানুষের শিক্ষার হার ৭১ ভাগ, গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ দশমিক ৩ বছর, জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭ দশমিক ২ শতাংশ হয়েছে, দেশেই এখন প্রয়োজনীয় ৯৮ শতাংশ ওষুধ উৎপাদন হচ্ছে। বিশ্বের ১২২টি দেশে বাংলাদেশের তৈরি ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে। দেশের সর্ববৃহৎ পদ্মাসেতু নিজ অর্থে নির্মাণ করা হচ্ছে। অথচ সিপিডি দেশের উন্নয়ন খুঁজে পায় না। বিএনপির বক্তব্যের সঙ্গে সিপিডির বক্তব্যের কোনো পার্থক্য নেই।

এসময় মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু, অতিরিক্ত সচিব মুন্সী শফিউল হক, অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) তপন কান্তি ঘোষ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৮
আরএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।