ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

বিএনপিকে ছাড়ের প্রয়োজন মনে করে না ১৪ দল

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৭
বিএনপিকে ছাড়ের প্রয়োজন মনে করে না ১৪ দল

ঢাকা: আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি যে সহায়ক সরকারের দাবি তুলেছে সে ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন ১৪ দলের শরিক নেতারা।

সংবিধান মেনেই বিএনপি নির্বাচনে আসবে বলে মনে করেন তারা। তবে এ ব্যতিক্রম হলে বিএনপিকে ছাড়াই নির্বাচন হবে বলে ক্ষমতাসীন জোটের নেতারা জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের অন্তর্ভূক্ত দলগুলোর নেতারা জানান, বিএনপির যে দাবি তা মেনে নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। সংবিধান মেনেই দলটিকে নির্বাচনে আসতে হবে। তা না হলে বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনো ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে সংবিধান অনুশীলনের অভ্যাসটা আগে দাঁড় করাতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই বলে তারা মনে করেন।

১৪ দলের নেতাদের ধারণা, এ মুহূর্তে বিএনপি যাই বলুক সংবিধানের শর্ত মেনেই বর্তমান ব্যবস্থায় দলটি নির্বাচনে আসবে। ১৪ দলের ওই নেতাদের মতে, গত জাতীয় নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি লাভবান হয়নি, এটা দলটির নেতাকর্মীদের উপলব্ধিতে আছে। এতে বিএনপি রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগামী নির্বাচনও বর্জন করলে নেতাকর্মী শূন্য ভঙ্গুর দলে পরিণত হবে এটাও বিএনপির নীতিনির্ধারকরা উপলব্ধি করছেন বলে ১৪ দরের নেতারা জানান।  

আবার বিএনপি যে সহায়ক সরকারের কথা বলছে সেটা কি ধরনের সরকার বা এর ফরমেট কি সেটাও স্পষ্ট নয়। দীর্ঘ দিন ধরে এ দলটির নেতারা এ ধরনের দাবির কথা বলে এলেও আজ পর্যন্ত এর কোনো ফরমেট জাতির সামনে তুলে ধরতে পারেননি। দাবির বিষয়টিও তারা এখনও স্পষ্ট করতে পারেনি বলে মনে করেন ১৪ দলের নেতারা।  

১৪ দলের ওই নেতারা আরও জানান, সংবিধান মেনেই বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে। এতে বিএনপি নির্বাচনে না এলেও যথা নিয়মেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেক্ষেত্রে বিএনপিকে বাদ দিয়ে গত নির্বাচনের মতো যে দলগুলো আসবে সে দলগুলোকে নিয়েই নির্বাচন হবে বলেও তারা জানান।  

এ সব বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ১৪ দলের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপিকে কোনো ছাড় দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। কোনো কারণও দেখছি না। তারা কি চায় সেটাও জাতির সামনে স্পষ্ট করতে পারেনি, কোনো ফরমেটও দিতে পারেনি। আর তাছাড়া সংবিধানের বাইরে যাওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। তবে আমি মনে করি বিএনপি সংবিধান মেনেই নির্বাচনে আসবে। না এলে যথা নিয়মেই নির্বাচন হবে।  

এ বিষয়ে জাসদের একাংশের সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়া বাংলানিউজকে বলেন, সংবিধানের প্র্যাকটিস দাঁড় করাতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। এবারও যদি দলটি নির্বাচন বর্জন করে তাহলে জঙ্গিগোষ্ঠী ছাড়া গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী কেউ বিএনপিতে থাকবে না।  

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, গত বার বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছিলো, কিন্তু লাভবান হয়নি। নির্বাচন তারা বর্জন করতে পারে, এ অধিকারও তাদের আছে। কিন্তু নির্বাচন তো প্রতিহত করার অধিকার নেই। করতেও পারবে না, গত নির্বাচনেও পারেনি। বিএনপি না এলেও সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। এ ব্যাপারে ১৪ দল শক্ত অবস্থানে।

জাসদের আরেকাংশের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আকতার বাংলানিউজকে বলেন, সংবিধান মেনে বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে এটাই একমাত্র সমাধান। বিএনপির দাবির কাছে ছাড় দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। বিএনপি নির্বাচনে না এলে যেসব দল অংশ নেবে তাদের নিয়েই গত বারের মতো নির্বাচন হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০১০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭ 
এসকে/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।