ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

সিটি নির্বাচনে জয় পেতে দলীয় ঐক্যে প্রধান্য আ’লীগের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৭
সিটি নির্বাচনে জয় পেতে দলীয় ঐক্যে প্রধান্য আ’লীগের

ঢাকা: আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করতে দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামানোর বিষয়টিকে প্রধান্য দিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আগামী জাতীয় নির্বাচনে পরিবেশ পরিস্থিতি নিজেদের অনুকূলে রাখতে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ের বিকল্প নেই মনে করছেন দলের নীতিনির্ধারকরা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে ৬টি সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন।

আগামী বছর জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে আরও ৫ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। এগুলো হচ্ছে খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন।

সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থানীয় সরকার পর্যায়ের নির্বাচন হলেও এই নির্বাচনের ফল জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করে। এবারই প্রথম সিটি করপোরেশনে দলীয়ভাবে এবং দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হবে। দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন ব্যবস্থা চালুর পরে সিটি করপোরেশনগুলোতে এই প্রথম নির্বাচন হতে যাচ্ছে।  

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র ৬ মাস সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে ৫টি সিটি করপোরেশনেই আওয়ামী লীগের সমর্থিত মেয়র প্রার্থীরা পরাজিত হন। আওয়ামী লীগের এই পরাজয় নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা তরি হয়। এটাকে কেন্দ্র করে জনপ্রিয়তা নিয়েও বিভিন্ন প্রশ্ন ওঠে। সরকার ও দলের জনপ্রিয়তা হারানোর কারণেই দলীয় প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছে বলে বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষ থেকে প্রচার করা হয়। দলের মধ্যেও নানা ধরনের আলোচনা-পর্যালোচনা হয়।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত নির্বাচনে নেতিবাচক ফলের বিষয়টিকে বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে আগামী নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে দলটি। গত নির্বাচনে পরাজয়ের পেছনে দলের আভ্যন্তরীণ সমস্যাকেই প্রধানত দায়ী বলে তারা মনে করেন।

আগামী নির্বাচনে এ ধরনের কোনো ফল যাতে না আসে বা ওই ধরনের কোনো পরিস্থিতিতে যাতে পড়তে না হয় সে বিষয়টি মাথায় রেখেই প্রার্থী নির্বাচন থেকে শুরু করে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানান আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ফলের ওপর ভিত্তি করে জাতীয় নির্বাচনে দলের যেন নেতিবাচক কোনো প্রভাব না পরে সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।

চলতি বছরের মার্চে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী পরাজিত হন। ওই পরাজয়ের পেছনে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীর মধ্যে বিদ্যমান কোন্দলই দায়ী। নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরাজিত হয়েছিলেন বলে ধারণা নীতিনির্ধারকদের।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, সিটি নির্বাচনে আমাদের অবশ্যই বিজয়ী হতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে সিটি করপোরেশন নির্বাচন হচ্ছে তাই বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, আগামী বছর ৫টি সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আসন্ন সিটি নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলেও এর ফলাফল জাতীয় নির্বাচনের ওপর প্রভাব পড়বে। সে বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়েই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। অভ্যন্তরীণ সমস্যা যাতে না থাকে সেটাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, গত বারে ৫ সিটি নির্বাচনে আমরা হেরে গেছি। কুমিল্লায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়ার পরও হেরে গেছি। দলের মধ্যে কিছুটা মতপার্থক্য, ভুল বোঝাবুঝি ছিলো। আগামী নির্বাচনে এই মতপার্থক্য দূর করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলে মানুষের মধ্যে আমাদের যথেষ্ট সমর্থন আছে। ভুল বোঝাবুঝি থাকলে একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৭
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।